শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও। Class 10 | Geography | 5 Marks

উত্তর:-

শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলাধারের মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত খুব কম হয়। তবে যখন বৃষ্টিপাত হয়, একেবারে মুশলধারেই তার আবির্ভাব ঘটে। আর বৃষ্টিপাতের সেই জল ভূপৃষ্ঠের ঢাল বরাবর নেমে কিছু অনিত্যবহ জলধারাও সৃষ্টি করে। এজন্য মরু অঞলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে কিছু ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, যেমন —

1. ওয়াদি : উৎপত্তি: আরবি শব্দ ‘ওয়াদি’র অর্থ শুষ্ক উপত্যকা। মর অঞলের বালি ঢাকা ভূমিতে জল নিকাশের জন্য নদীনালা বিশেষ থাকে না বলে এক পশলা মুশলধারে বৃষ্টি হলেই বন্যা হয়ে যায়। বন্যা বা বৃষ্টির জল বেরােনাের জন্য তখন বালুকাভূমির ওপর অস্থায়ী নদী সৃষ্টি হয়। জল নেমে গেলে ওগুলি শুষ্ক খাত হিসেবে পড়ে থাকে। এই শুষ্ক নদীখাত-ই ওয়াদি নামে পরিচিত।

2. পেডিমেন্ট : উৎপত্তি: বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত ক্ষয়কার্যে উচ্চভূমি বা ইনসেলবার্জের পাদদেশে যে প্রায় সমতল মৃদু ঢালবিশিষ্ট ভূমিভাগের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে পেডিমেন্ট।
বৈশিষ্ট্য: [i] এর ঢাল গড়ে 1 (এক) থেকে 10°-এর মধ্যে থাকে। [ii] পেডিমেন্টের ওপর ছােটো ছােটো শিলাখণ্ড, বালি, পলি ইত্যাদি থাকতে পারে। [iii] পেডিমেন্ট সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হতে পারে। [iv] পেডিমেন্টের নীচে থাকে বাজাদা।
উদাহরণ: উত্তর আফ্রিকার অ্যাটলাস পর্বতের পাদদেশের কোনাে কোনাে অংশে বিস্তৃত পেডিমেন্ট আছে।

3. বাজাদা: উৎপত্তি: পেডিমেন্টের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জলধারার সঙ্গে আসা নুড়ি, কাকর, পলি, বালি প্রভৃতি ঢালের নিম্নাংশে অর্থাৎ পেডিমেন্টের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণাকার পলল ব্যজনী সৃষ্টি করে। এই ধরনের অনেকগুলি ভূমি পরস্পর যুক্ত হলে যে বড়াে আকারের পললভূমি গঠিত হয় তাকে বলে বাজাদা বা বাহাদা।
বৈশিষ্ট্য: [i] পেডিমেন্টের সামনে গড়ে ওঠা বাজাদা সম্পূর্ণরূপে সঞ্জয়জাত ভূমিরূপ। [ii] পেডিমেন্টের দিকে বাজাদার খাড়া অবতল ঢাল সৃষ্টি হলেও প্লায়ার কাছে ঢাল খুব কম বা একেবারে শূন্যও হতে পারে।
উদাহরণ: সাহারা মরুভূমি-সহ প্রায় সব মরুভূমিতেই বাজাদা আছে।

4. প্লায়া: উৎপত্তি: চারপাশের উচ্চভূমি থেকে আসা অনেকগুলি জলধারা মধ্যভাগের উপত্যকা বা নিম্নভূমিতে মিলিত হলে সেখানে লবণাক্ত জলের অগভীর হ্রদ সৃষ্টি হয়। বাজাদা পৃষ্ঠের ওপর গড়ে ওঠা এই মরুদের নাম প্লায়া। এগুলি সাধারণত অস্থায়ী প্রকৃতির হয় এবং এদের আয়তন বা ক্ষেত্রমান কয়েক বর্গমিটার থেকে কয়েক বর্গকিলােমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মরু অঞলে ক্ষয়কার্যের নিম্নসীমা বা শেষসীমা হল এই প্লায়া।

চিত্র: শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

1 thought on “শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।”

Leave a Comment