বিশ শতকের ৪০-এর দশকে সংগঠিত বাংলার তেভাগা আন্দোলনের বিবরণ দাও। 

বিশ শতকের ৪০-এর দশকে সংগঠিত বাংলার তেভাগা আন্দোলনের বিবরণ দাও।  4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কিষানসভার উদ্যোগে এবং কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলন শুরু হয়। 

তেভাগার দাবিসমূহ : কমিউনিস্ট দলের নেতৃত্বে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কিষানসভা ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তেভাগা আন্দোলনের যে প্রস্তাব গ্রহণ করে, সেগুলি হল— (১) উৎপন্ন ফসলের ২/৩ ভাগ কৃষকের প্রাপ্য এবং মালিক পাবে ১/৩ অংশ; (২) জমিতে ভাগচাষিকে দখলিস্বত্ব দিতে হবে; (৩) ১২/ শতাংশ-এর বেশি সুদ মহাজন বা জমিদাররা দাবি করতে পারবে না; (৪) কোনাে কাজে কর (আবওয়াব) আদায় করা যাবে না; (৫) ফসলের ভাগ নিয়ে রসিদ দিতে হবে; (৬) ভাগচাষির খামারে ধান তুলতে হবে; (৭) আধি নয়, তেভাগা চাই, কর্জ ধানের সুদ নাই’; এবং (৮) ১ মনে ৫ সের-এর বেশি সুদ নেওয়া যাবে না।

বিস্তৃতি : তেভাগা আন্দোলন বাংলার প্রায় সব জেলায় শুরু হয়েছিল — দিনাজপুর, ময়মনসিং, কাকদ্বীপ, রংপুর, বগুড়া, জলপাইগুড়ি, যশাের, খুলনা ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলার প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই বিদ্রোহের চরিত্রগত স্বাতন্ত্র উল্লেখ করে ঐতিহাসিক ধনাগারে লিখেছেন, “It was the first consciously attempted revolt by a politicised Peasantry in Indian History.’ 

নেতৃবৃন্দ : তেভাগা আন্দোলনে উল্লেখযােগ্য নেতা, নেত্রীরা হলেন—গুরুদাস তালুকদার, ভবানী সেন, অবনী রায়, ভবানী সেন, চারু মজুমদার, সমর গাঙ্গুলী, সুশীল সেন, জলপাইগুড়ির রাজবংশী বৃদ্ধা মহিলা বুড়িমা প্রমুখ।

উপসংহার : সরকারের কঠোর দমননীতি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, সার্বিক ঐক্যের অভাব ইত্যাদি কারণে আন্দোলন ব্যর্থ হলেও পরবর্তীকালে বর্গাদার আইন, বাংলা ভূমিস্বত্ব আইন, জমিদারি উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তেভাগা আন্দোলনের প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment