তেজ কোটাল বা ভরা কোটাল এবং মরা কোটাল কীভাবে হয় বর্ণনা করাে।
অথবা, পৃথিবীতে ভরা জোয়ার ও মরা জোয়ার সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করাে। Class 10 | Geography (বারিমণ্ডল) | 5 Marks
উত্তর:-
তেজ কেটাল বা ভরা কৌটাল বা ভরা জোয়ার
অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে সৃষ্ট প্রবল জোয়ারকে তেজ কোটাল বা ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার বলে।
সৃষ্টির পদ্ধতি: অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে প্রবল জোয়ার হয়। কারণ ওই দুই তিথিতে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের কেন্দ্রবিন্দু একই সরলরেখায় অবস্থা করে। চাদ ও সূর্যের কেন্দ্রবিন্দু একই সরলরেখায় অবস্থান করে বলে উভয়ের মিলিত আকর্ষণে পৃথিবীতে জোয়ারের জল অনেক বেশি ফুলে ওঠে। তাই একে তেজ কোটাল বা ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার বলা হয়। এই ধরনের ঘটনা প্রতি 14 দিনে একবার হয়। তবে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীর অবস্থানের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
1) অমাবস্যা তিথিতে ভরা কোটাল: অমাবস্যা তিথিতে সূর্য ও চাদ, পৃথিবীর একই দিকে অবস্থান করে, এই অবস্থানকে সংযােগ অবস্থান বলে। ওই তিথিতে চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণী শক্তি পৃথিবীর একই দিকে ক্রিয়া করে। ফলে অমাবস্যা তিথিতে জোয়ারের জল অনেক বেশি ফুলে ওঠে। জলের এই ফুলে ওঠাকে বলা হয় অমাবস্যা তিথিতে ভরা জোয়ার বা ভরা কোটাল। অমাবস্যা তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একদিকে অবস্থান করায় পূর্ণিমা অপেক্ষা অমাবস্যা তিথিতে জোয়ারের তীব্রতা অনেক বেশি হয়।
2) পূর্ণিমা তিথিতে ভরা কোটাল: পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী, চাদ ও সূর্যের মাঝখানে এক সরলরেখায় অবস্থান করে, এই অবস্থানকে প্রতিযোগ অবস্থান বলে। এর ফলে চাদের আকর্ষণে পৃথিবীর একদিকে প্রবল জলস্ফীতি ঘটে বা জোয়ার হয় এবং ঠিক তার বিপরীত দিকে সূলে আকর্ষণেও প্রবল জোয়ার হয়। একে পূর্ণিমা তিথিতে ভরা জোয়ার বা ভা কোটাল বলে। পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ারের তীব্রতা অমাবস। জোয়ারের তীব্রতার থেকে অনেক কম হয়।
মরা কোটাল বা মরা জোয়ার
চিত্র:
শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে স্বল্পোচ্চ জলস্ফীতির যে জোয়ার সৃষ্টি হয়, তাকে মরা কোটাল বা মরা জোয়ার বলে।
সৃষ্টির পদ্ধতি: শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর অবস্থানের সাপেক্ষে সমকোণে অবস্থান করে। এজন্য চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ পরস্পরের বিপরীতে কাজ করে। এর ফলে পৃথিবীর যে স্থানে চাঁদের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার হয় তার ঠিক সমকোণে সূর্যের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার হয়। ফলে কোনাে স্থানেই জলতল বেশি স্ফীত হয় না। এইভাবেই মরা কোটাল বা মরা জোয়ার সৃষ্টি হয়।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।