আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করো ।
উত্তরঃ-
আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে সম্পর্ক :
আইন বলতে বোঝায় রাষ্ট্রীয় আইনকে। মানুষের বাহ্যিক আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সার্বভৌম রাষ্ট্রনৈতিক কর্তৃপক্ষ যে সাধারণ নিয়ম প্রয়োগ করে, তাহাই হল আইন। অপরদিকে স্বাধীনতা বলতে বোঝায়, নিজের অধীনে চলা। অর্থাৎ নিজের খুশিমত কাজ করা। স্বাধীনতা হল, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য গঠিত পরিবেশের সংরক্ষণ, যেখানে অপরদিকে স্বাধীনতা বলতে বোঝায়, নিজের অধীনে চলা। অর্থাৎ নিজের খুশিমত কাজ করা। স্বাধীনতা হল, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য গঠিত পরিবেশের সংরক্ষণ, যেখানে মানুষ তার সত্বাকে পূর্নভাবে বিকাশ ঘটাতে পারবে। ফলে আপাত দৃষ্টিতে আইন ও স্বাধীনতাকে পরস্পর বিরোধী বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এই আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক :
মিল, স্পেনসার, ব্রাইস প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ আইন ও স্বাধীনতাকে পরস্পর বিরোধী বলে মনে করতেন। তাঁদের মতে, স্বাধীনতা বলতে নিয়ন্ত্রণবিহীনতা। মানুষের কাজে যদি বাধা দেওয়া হয়, তাহলে তার বিকাশ ঘটা সম্ভব নয়। অথচ আইন মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে। একটা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে মানুষকে কাজ করতে বাধ্য করে। একে স্বাধীনতা বলা যাবে না। তাই আইন স্বাধীনতার পথে বাধার সৃষ্টি করে ।
তবে বাস্তবে আইন ও স্বাধীনতা পরস্পর বিরোধী নয়, বরং একে অপরের পরিপূরক। অবাধ স্বাধীনতা স্বেচ্ছাচারের পর্যায়ে পড়ে। রাষ্ট্র আইনের দ্বারা এক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। আইন শুধু স্বাধীনতাকে রক্ষা করে তাহাই নয়, আইন আবার স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিতও করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, শাসকগোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারীতাকে দমন করে আইন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে উপযোগী পরিবেশ রচনা করে।
স্বাধীনতা বলতে ব্যক্তিত্ব বিকাশের উপযোগী পরিবেশকে বোঝায়। কতকগুলি সুযোগ সুবিধা দিয়ে সেই পরিবেশ গঠিত হয়। আবার সেই সব সুযোগ সুবিধাকে অধিকার বলে। যেমন- শিক্ষার অধিকার, জীবনের অধিকার প্রভৃতি। এই অধিকার হল আইনগত ধারনা পরিবেশকে বোঝায়। কতকগুলি সুযোগ সুবিধা দিয়ে সেই পরিবেশ গঠিত হয়। আবার সেই সব সুযোগ সুবিধাকে অধিকার বলে। যেমন- শিক্ষার অধিকার, জীবনের অধিকার প্রভৃতি। এই অধিকার হল আইনগত ধারনা বিশেষ। এই অধিকার না থাকলে স্বাধীনতা থাকে না। তাই আইন স্বাধীনতার পথে বাধা নয়।
মুল্যায়নঃ
আইন ও স্বাধীনতার মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক থাকলেও মার্কসবাদীদের মতে, যে সমাজে বৈষম্য আছে, সেখানে ধনিক শ্রেণী রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে নিজেদের স্বার্থে আইন রচনা করে। রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে সেই সব আইনকে বলবৎ করে নিজেদের স্বাধীনতা ভোগের পথ প্রশস্ত করে ।
Read Also
ভারতের সংবিধান প্রস্তাবনার গুরুত্ব বা তাৎপর্য আলোচনা করো
ভারতের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও পদমর্যাদা আলোচনা করো
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।