উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কী ? উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামাে, পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করাে ।

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কী? উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামাে, পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করাে। Class 12 | Education (কোঠারি কমিশন) | 8 Marks

উত্তর:-

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা 

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষারই একটি অংশ। বিদ্যালয়ে দশ বছরের শিক্ষা শেষ হবার পর একটি বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ওই বহিঃপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর শিক্ষার্থী তার আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী দুই বছরের শিক্ষা গ্রহণ করে— এটাই হল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর।

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামাে, পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য

কোঠারি কমিশনের রিপাের্টে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামাে ও পাঠক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। 

[1] লক্ষ্য: উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার লক্ষ্যগুলি নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল

i. নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষাকে দৃঢ়তর করা, প্রসারিত করা এবং সেই সঙ্গে শিক্ষাথীদের বিষয় নির্বাচনের সুযােগ দিয়ে তাদের বিশেষীকরণমুখীনতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু এক্ষেত্রে চরম বিশেষীকরণ কখনােই কাম্য নয়। 

ii. দশ বছর স্কুল শিক্ষার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থী স্থির করবে তার ভবিষ্যৎ জীবনে সে কী শিক্ষা গ্রহণ করবে। শিক্ষার্থীর আগ্রহ, যােগ্যতা, রুচি প্রভৃতি বিচার করে তার পরিচালনা ও নির্দেশনা দানের ব্যবস্থা থাকবে। 

iii. এই স্তরে 50% শিক্ষার্থীর পুরাে বা আংশিক সময়ের জন্য বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বাকি 50%-এর জন্য থাকবে সাধারণ শিক্ষার ব্যবস্থা বাণিজ্য, কৃষি ও কারিগরি বিদ্যা বৃত্তিশিক্ষার মধ্যে গণ্য করা হবে।

[2] কাঠামাে: মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের কাঠামাে আলােচনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটি দুটি ভাগে বিভক্ত— i. নিম্নমাধ্যমিক এবং ii. উচ্চমাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা দুই বছরের একাদশ শ্রেণি এবং দ্বাদশ শ্রেণি। এই স্তরে, শিক্ষার্থীর বয়স হবে যথাক্রমে 16+ এবং 17+ বছর। 

[3] পাঠক্রম: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি হল—

i. যে-কোনাে দুটি ভাষা যার মধ্যে থাকবে একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা, আধুনিক বিদেশি ভাষা এবং প্রাচীন ভাষা। 

ii. নীচের মধ্য থেকে যেকোনাে তিনটি elective বিষয় হিসেবে তারা বেছে নিতে পারবে। এগুলি হল যথাক্রমে a) একটি অতিরিক্ত ভাষা, b) ইতিহাস, c) ভূগােল, d) অর্থনীতি, e) তর্কবিদ্যা, f) মনােবিজ্ঞান, g) সমাজবিজ্ঞান, h) চারুকলা, i) পদার্থবিদ্যা, j) রসায়ন, k) গণিত, l) জীববিজ্ঞান, m) ভূতত্ত্ব এবং n) গার্হস্থ্যবিজ্ঞান। 

iii. কর্মশিক্ষা ও সমাজসেবা।

iv. শারীরশিক্ষা। 

v. চারুকলা বা হস্তশিল্প। 

vi. নৈতিক বা আধ্যাত্মিক শিক্ষা। 

[4] পাঠক্রম সম্পর্কে কমিশনের বিশেষ বক্তব্য: বিভিন্ন শিক্ষাস্তরের উল্লিখিত পাঠক্রম কমিশনের সুপারিশমাত্র। এই পাঠক্রম স্থির করবে বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাদেশিক সরকারের স্কুলশিক্ষা বাের্ডগুলি, প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধিদের তৈরি একটি এক্সপার্ট বডি। 

[5] অ্যাডভান্স কোর্স সম্বন্ধে কমিশনের সুপারিশ: প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বিষয়গুলি নিয়ে অ্যাডভান্স কোর্স (Advanced course) চালু করতে পারে। প্রথমে কয়েকটি উত্তম বিদ্যালয়ে এই ধরনের অ্যাডভান্স কোর্স চালু করা যেতে পারে।

i. সপ্তম শ্রেণি থেকে এটা শুরু হবে। তবে এটি গ্রহণ করা বা না করা শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।

ii. নিম্নমাধ্যমিক স্তরে গণিত, বিজ্ঞান ও ভাষার ওপর অ্যাডভান্স কোর্স চালু করা যেতে পারে।

iii. উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এই অ্যাডভান্স কোর্স প্রতিটি বিশেষ বিষয়ের জন্য করা দরকার। তবে শেষের দিকে দুই-এর বেশি বিষয়ে অ্যাডভান্স কোর্স-এর ব্যবস্থা থাকবে না।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment