উদবাস্তু সমস্যার ক্ষেত্রে পাঞ্জাব ও বাংলার পার্থক্যগুলি কী ছিল তা বিশ্লেষণ করাে

প্রশ্ন – উদবাস্তু সমস্যার সমাধানে ভারত সরকারের উদ্যোগ বিশ্লেষণ করাে। অথবা, উদবাস্তু পুনর্বাসনে সরকারি উদোগের ক্ষেত্রে কী বিতর্ক দেখা যায়। Class 10 | 4 Marks

উত্তর: – ভূমিকা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাজন এবং একই সঙ্গে পাঞ্জাব ও বঙ্গবিভাজনের ঘটনা ভারতে উদ্বাস্তু সমস্যার সূচনা করেছিল। 

পার্থক্য : পাঞ্জাব বিভাজনের সঙ্গে বাংলা বিভাজনের বেশ। কিছু মিল থাকলেও পার্থক্য ছিল বেশি, যেমন—

১। জনহস্তান্তর : পাঞ্জাব বিভাজনের ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিম পাঞ্জাবের মধ্যে জনহস্তান্তর ও সম্পত্তির বিনিময় করা হলেও বাংলার ক্ষেত্রে তা হয়নি। 

২। আগমন : পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে পূর্ব পাঞ্জাবে উদ্বাস্তুদের আগমন ঘটেছিল দুবছর ধরে। কিন্তু বাংলায় তা ছিল ধারাবাহিক। 

৩। আশ্রয়স্থান : ভারতে পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে আসা উদ্বাস্তুরা পূর্ব পাঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয় এবং পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা কলকাতা ও কলকাতা সন্নিহিত চব্বিশপরগনা, নদিয়া, মুরশিদাবাদ, মালদহ, দিনাজপুর প্রভৃতি স্থানে আশ্রয় নেয়।

৪। ভাষাগত সমস্যা : পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে ভারতে আগত উদ্বাস্তুদের ভাষাগত সমস্যা না থাকার কারণে পাঞ্জাবি ও সিন্ত্রি উদ্বাস্তুরা দিল্লি, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারলেও পূর্বপাকিস্তান থেকে আগত বাংলাভাষী উদ্বাস্তুরা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসাম ছাড়া অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করতে পারেনি।

উপসংহার : জওহরলাল নেহরু বাংলার উদ্বাস্তু সমস্যা অপেক্ষা পাঞ্জাবে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনে অধিক গুরুত্ব দেন। তাঁর থায়, পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু উদ্বাস্তুদের পশ্চিমমুখে যাত্রার মূল কারণ ছিল নিছক কাল্পনিক ভয়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment