শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কীভাবে একটি অগ্রণী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল?
অথবা, উইলিয়াম কেরী বাংলার মুদ্রণ শিল্পে বিখ্যাত কেন? 4 Marks/Class 10
উত্তর:–
ভূমিকা : বাংলায় ছাপাখানা ব্যবস্থার বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস।
মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠা : খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি বাংলা ভাষায় বাইবেল ছাপানাের উদ্দেশ্যে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপন করেন এবং ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই এই ছাপাখানা স্বয়ংসম্পূর্ণ ছাপাখানায় পরিণত হয়।
মিশন প্রেসের উৎপাদন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে মুদ্রিত বইগুলি হল—
১) ‘ধৰ্ম্ম পুস্তক’ : প্রাথমিক পর্বে অভিজ্ঞ ও দক্ষ মুদ্রাকর ওয়ার্ড এবং পঞ্চানন কর্মকারের সহযােগিতায় কলকাতা থেকে সংগৃহীত হরফ এবং কিছু পাটনাই ও বিদেশি কাগজ সহযােগে ছাপার কাজ শুরু হয়। ১৮০১ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে তিনি আটশােরও অধিক পৃষ্ঠাযুক্ত ‘ধৰ্ম্মপুস্তক’ বা বাংলা বাইবেল প্রকাশ করেন।
২) অন্যান্য বই : শ্রীরামপুর মিশন প্রেসে রামরাম বসুর রচিত হরকরা’ ও ‘জ্ঞানােদয়’ নামক দুটি গ্রন্থ (আগস্ট সেপ্টেম্বরে, ১৮০০ খ্রি.), মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের বত্রিশ সিংহাসন’ (১৮০২ খ্রি.), ৪ খণ্ডে কাশীরাম দাসের ‘মহাভারত’ (১৮০১-০৩) ও পাঁচ খণ্ডে কীর্তিবাসের রামায়ণ’ (১৮০২-০৩) মুদ্রিত হয়। এভাবে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই প্রেসে ৪০টি বিভিন্ন ভাষায় ২,১২,০০০ কপি বই মুদ্রিত হয়।
৩) পাঠ্যপুস্তক : শ্রীরামপুর মিশন প্রেসে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, রামরাম বসু, চণ্ডীচরণ মুন্সী, হরপ্রসাদ রায় প্রমুখ রচিত কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকও মুদ্রিত হয়েছিল।
উপসংহার : উপরােক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায় যে, ধর্মীয় উদ্দেশ্যে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপিত হলেও তার ছাপাখানা-উৎপাদনে ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়ও ছিল।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।