Class 11 Class 11 Bengali ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলনের শ্রেষ্ঠ কবি বিদ্যাপতি— আলোচনা করো ।

ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলনের শ্রেষ্ঠ কবি বিদ্যাপতি— আলোচনা করো ।

ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলনের শ্রেষ্ঠ কবি বিদ্যাপতি— আলোচনা করো । MARK 5 | Class 11 Bengali | ভাব সম্মিলন

উত্তর :

উত্তর : বৈষ্ণব পদকর্তাগণ প্রেমমনস্তত্ত্বের সুনিপুণ রূপকার। ভবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন পর্যায়ে তাঁরা সেই প্রেমমনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণে অসাধারণ পরিচয় দিয়েছেন । এই পর্যায়ে চৈতন্য-পূর্বযুগের কবি বিদ্যাপতির কবিপ্রতিভা আলোচনার পূর্বে জেনে নিতে হবে ভাবোল্লাস কাকে বলে।

ভাবোল্লাস মিলনের এক বিচিত্র রূপ। এখানে কৃষ্ণ যেন মথুরায় ফিরে এসেছেন এবং সে কারণে ব্রজবাসীদের মনে আনন্দ আর ধরে না। আসলে কৃষ্ণ মথুরায় চলে যাওয়ার পর কোনোদিনই বৃন্দাবনে ফিরে আসেননি। কিন্তু বৈয়বজন রাধার বিরহকাতরা অবস্থা দেখতে না-পেরে বাস্তবে না-হলেও রাধা-কৃষ্ণের মানসিক মিলনের ব্যবস্থা করে দেন। এই মিলনই হল ভাবোল্লাস ৷ বিদ্যাপতির সময়ে এই পর্যায়ে পদ সৃষ্টি হওয়ার কারণই ছিল না। কারণ তখন বৈয়বশাস্ত্র তৈরি হয়নি। তবুও কবি তাঁর ব্যক্তিহৃদয়ের স্বাভাবিক অনুভূতিতে এই পর্যায় সম্পর্কিত কয়েকটি পদ রচনা করেছেন—তা তত্ত্বগত দিক থেকে বটেই, এমনকি কাব্যগত দিক থেকেও অসাধারণ রূপ লাভ করেছে। বিদ্যাপতির ‘পিয়া জব আওব এ মঝুগেহে’ শীর্ষক পদে বৈষ্ণব তত্ত্বের পটভূমিতেই বিরহিণী রাধার সঙ্গে কৃষ্ণের ভাবী মিলনের কল্পনাটি ব্যক্ত হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যাপতির ‘আজু রজনী হাম ভাগে পোহায়ঁলু’ শীর্ষক পদটিও বিদ্যাপতির কাব্যপ্রতিভার একটি দিশারী। একদিন কৃষ্ণ বিরহে রাধার কাছে সব কিছুই শূন্য বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু আজ প্রিয়তমের মুখচন্দ্র দর্শনে তিনি নিজ গৃহকে গৃহ বলে মানলেন, দেহকে দেহ বলে স্বীকার করলেন। আর পাঠ্য কি কহব রে সখি আনন্দ ওর’ পদটি যেন ভাব সম্মিলনে মহামিলন ক্ষেত্র। বিরহিণী রাধার সর্ব দুঃখ মোচন করে বিদ্যাপতি যেন শ্রীরাধিকার বাহুডোরে কৃষ্ণকে আবদ্ধ করেছেন; ঠিক যেমন করে বিদ্যাপতি দেশকালের বেড়া ভেদ করে সমগ্র পাঠকসমাজকে তাঁর কাব্যসুধা পান করিয়ে কোথায় যেন তাঁদেরকেও ভাব সম্মিলনের আবেগ অনুভূত করিয়েছেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!