আগ্রহের শ্রেণীবিভাগ করো | শিক্ষার্থীকে পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হলে কি করা উচিত

উত্তরঃ-

আগ্রহ বা অনুরাগের শ্রেণীবিভাগ করা খুবই কষ্টসাধ্য, তবুও বিভিন্ন মনোবিদ আগ্রহকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। সেগুলো হলো- ১. স্বাভাবিক আগ্রহ ও ২. অর্জিত আগ্রহ

১. স্বাভাবিক অনুরাগ : জন্মগত আগ্রহকে স্বাভাবিক অনুরাগ বা আগ্রহ বলে। যেমন- শিশুদের মধ্যে কিছু ভাঙ্গা বা গড়ার প্রতি আগ্রহ।

২. অর্জিত অনুরাগ : বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতাও বাড়ে এবং সেই হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ গড়ে ওঠে। একে অর্জিত অনুরাগ বলে। যেমন- ছবি আঁকা, খেলাধুলা, পড়াশোনা, গান, নাচ, আবৃত্তি ইত্যাদি

শিক্ষার্থীকে পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তোলার শর্ত : পাঠে আগ্রহ, পাঠ্যবিষয়ের প্রতি বা ঐ বিষয়ের প্রতি মনোযোগী করে। তাই শিক্ষকের প্রধান কাজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ গড়ে তোলা। নিম্নলিখিত কৌশল গুলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তোলা যেতে পারে ৷

1) শিক্ষার্থীর বয়স, সামর্থ্য, ইচ্ছার দিকে লক্ষ রেখে পাঠ্যক্রম রচনা করে সেই মতো করে শিক্ষাদান করা। 

2) বিভিন্ন Teaching Aids বা শিক্ষা উপকরণের মাধ্যমে শিক্ষাকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।

3) শুধু পুঁথিগত শিক্ষার পরিবর্তে ব্যবহারিক বা প্রাক্টিক্যাল শিক্ষার ব্যবস্থা করা তাতে শিক্ষার্থীর হাতে- কলমে কাজের সুযোগ পাবে।

4) কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতির প্রয়োগের ফলে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আনন্দের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবে।

5) বিদ্যালয়ের সময় তালিকায় বিষয়ের ভিত্তিতে বৈচিত্র থাকা দরকার।

6) ক্লাসে শিক্ষক – “সহজ থেকে জটিল”, “মুর্ত থেকে বিমুর্ত”, “জানা থেকে অজানা” বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করবেন।

7) প্রেষণা আগ্রহ তৈরি করে। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে প্রেষণা তৈরি করবেন।

8) পাঠ্য বিষয়কে বৈচিত্র্যপূর্ণ ভাবে উপস্থাপন করবেন, যাতে শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণের প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হয়। প্রয়োজনে শিক্ষক কঠিন বিষয় গুলো বারবার পড়াবেন।

9) শিক্ষক তাঁর ব্যক্তিত্ব এমন ভাবে গড়ে তুলবেন যাতে শিক্ষার্থীরা আপনা-আপনি তার ক্লাসে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

10) পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকলে শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণের প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে।

11) পাঠের মাঝে মাঝে বিরতি দেওয়া প্রয়োজন, ক্লান্তি দূর করতে।

উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করলে শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তোলা যাবে৷ মনোবিদ ”হার্টম্যান” বলেছেন আগ্রহের উপর ভিত্তি করেই শিক্ষা পরিচালনা করা উচিত। কারণ পাঠের প্রতি আগ্রহই শিক্ষার কাঙ্খিত লক্ষ্যে শিক্ষার্থীকে পৌঁছতে সহায়তা করে।

Read Also

“আগ্রহ হলো সুপ্ত মনোযোগ”- ব্যাখ্যা করো

মানসিক ক্ষমতা বা বুদ্ধি কাকে বলে | শিখনে বুদ্ধির ভূমিকা আলোচনা করো

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment