একটি আবশ্যিক বিষয় বা শতকে কারণ বলে মনে করার দোষ কী? উদাহরণসহ আলােচনা করাে

একটি আবশ্যিক বিষয় বা শতকে কারণ বলে মনে করার দোষ কী? উদাহরণসহ আলােচনা করাে। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখাে; সহকার্যকে কারণ বলার দোষ। Class 12 | Education (আরোহমূলক দোষ) | 8 Marks

উত্তর:-

একটি আবশ্যিক শর্তকে কারণ বলার দোষ

 কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করার ক্ষেত্রে কার্যের পূর্ববর্তী ঘটনারুপে যে সমস্ত বিষয় লক্ষ করা যায় সেগুলি কতকগুলি শর্তের সমষ্টি মাত্র। এই সমস্ত শর্তগুলির কোনাে কোনােটি আবশ্যিক বা অনিবার্য (necessary) রূপে গণ্য হতে পারে, আবার সেগুলির কোনাে কোনােটি অনাবশ্যক বা অবান্তর রূপেও গণ্য হতে পারে৷ কারণের ক্ষেত্রে তাই একাধিক অনিবার্য শর্তও থাকতে পারে। এই একাধিক অনিবার্য শর্তের সমষ্টিকে কারণরূপে উল্লেখ না করে, যদি তাদের মধ্যে থেকে একটিমাত্র অনিবার্য শর্তকে কারণরুপে উল্লেখ করা হয়, তাহলে যে দোষের উদ্ভব হয়, তাকে বলা হয় একটি আবশ্যিক শর্তকে কারণ বলে মনে করার দোষ। 

উদাহরণ

বৈদ্যুতিক সংযােগ দেওয়ার ফলেই বৈদ্যুতিক ট্রেন চলতে শুরু করল  অতএব, সিদ্ধান্ত করা যায় যে, বৈদ্যুতিক সংযােগই হল বৈদ্যুতিক ট্রেন চলার কারণ।

ব্যাখ্যা

উদাহরণটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযােগই হল। ট্রেন চলার একমাত্র কারণ | কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় যে, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযােগই ট্রেন চলার কারণরুপে গণ্য হতে পারে না। কারণ, বিদ্যুৎ সংযােগ ট্রেন চলার একটি আবশ্যিক শর্ত মাত্র, কখনােই সম্পূর্ণ কারণ নয়| এরূপ একাধিক আবশ্যিক শর্ত কারণের ধারণার মধ্যে থাকতেই পারে, যেমন—ট্রেনের ইঞ্জিন ঠিক থাকা, ড্রাইভারের ট্রেন চালানাে, ট্রেন লাইন যথাযথ থাকা ইত্যাদি৷ ট্রেন চলার জন্য এই সমস্ত শর্তগুলােও একান্ত প্রয়ােজন। এগুলােও। আবশ্যিক শর্তরূপে গণ্য| কিন্তু এই সমস্ত শর্তগুলােকে কারণের অন্তর্ভুক্ত না করে যদি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযােগকেই ট্রেন চলার কারণরুপে উল্লেখ করা হয়, তাহলে এরূপ একটি আবশ্যিক শর্ত বা বিষয়কে কারণ বলে মনে করার দোষ উৎপন্ন হয়।

সংকীর্যকে কারণ বলার দোষ

কার্যকারণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করা যায় যে, কারণ হল কার্যের পূর্ববর্তী ঘটনা এবং কার্য হল কারণের অনুবর্তী ঘটনা৷ কিন্তু কার্যকারণ সম্পক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় যথাযথভাবে এই পূর্ববর্তী ও অনুবর্তী ঘটনার হিসেবটি মাথায় রাখি না৷ আমাদের অভিজ্ঞতায় অনেক সময় দেখা। যায় যে, একই সার্বিক নীতির ফলে দুধরনের কার্য সংঘটিত হয়। এ দুধরনের কার্য তাই একে অপরের সহকার্যের সম্পর্কে আবদ্ধ। সেকারণেই। এই দুটির একটি কখনােই অন্যটির কারণ হতে পারে না। কিন্তু এই দুটি সহ কার্যের একটিকে যদি অন্যটির কারণ বা কার্য বলে মনে করা হয়। তাহলে যে দোষের উদ্ভব হয়, সেই দোষের নাম হল সহকর্যকে কারন বলার দোষ ।

উদাহরণ

দিনের পর রাত্রি আসে। সুতরাং সিদ্ধান্ত করা যায় যে, দিন হল রাত্রির কারণ |

অথবা 

জোয়ারের পর ভাটা আসে। 

.:. জোয়ার হল ভাটার কারণ। 

ব্যাখ্যা

এই উদাহরণগুলিতে দেখা যায় যে, দিন ও রাত্রি এবং জোয়ার ও ভাটা নামক ঘটনাগুলি একই সার্বিক কারণ থেকে নিঃসৃত| এই সার্বিক কারণটি হল পৃথিবীর আহ্নিক গতি। সেকারণেই দিন ও রাত্রিকে এবং জোয়ার ও ভাটাকে সহকার্যরূপে গণ্য করা হয়। এগুলির একটি তাই অপরটির কারণ হতে পারে না। সেকারণেই এরূপ যুক্তিগুলিতে সহকার্যকে কারণরুপে মনে করার দোষ ঘটেছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment