বিদ্যালয় কাকে বলে | বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কাজগুলি লেখাে Class 11 | Education (শিক্ষার বিভিন্ন রূপ) 8 Marks
উত্তর:
বিদ্যালয় :
বিদ্যালয় হল প্রথাগত বা বিধিবদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি এমনই একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীবৃন্দ একটি পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্দিষ্ট রীতিনীতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের কোনাে পাঠক্রম চর্চায় সাহায্য করেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কাজ :
বিদ্যালয়ের মূল কাজ হল নির্দিষ্ট পাঠক্রমের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য এবং জ্ঞান সরবরাহ করা এবং শিক্ষামূলক কাজে তাদের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কাজগুলি হল—
[1] শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশে সহায়তা করা : বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল পাঠক্রমের বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করা এবং তাদের চিন্তাশক্তি, কল্পনাশক্তি, যুক্তি প্রভৃতি বৌদ্ধিক বৈশিষ্ট্যাবলির বিকাশ সাধনে সহায়তা করা।
[2] শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিসত্তার বিকাশে সহায়তা করা : প্রত্যেকটি শিশুই জন্মের সময় কিছু-না-কিছু সম্ভাবনা নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়। বিদ্যালয়ের অন্যতম কাজ হল তাদের ওই সম্ভাবনাগুলি যথাযথ বিকাশে সাহায্য করা এবং ব্যক্তিসত্তার উন্নয়নে সহায়তাদান করা।
[3] বৃত্তিমূলক নির্দেশনাদন করা : সমাজজীবনে টিকে থাকতে হলে প্রতিটি ব্যক্তিকে কিছু-না-কিছু কাজ করতে হয়। ওই কাজগুলিকে আমরা বৃত্তি বলি। বিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন বৃত্তির সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করা এবং শিক্ষার্থীর প্রবণতা, আগ্রহ এবং দক্ষতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট বৃত্তি নির্বাচনে সহায়তা করা।
[4] শিক্ষামূলক নির্দেশনা : বিদ্যালয়ের কাজ হল শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের জন্য তাকে প্রয়ােজনীয় শিক্ষামূলক নির্দেশনাদান করা। শুধুমাত্র একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সে যাতে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্য প্রয়ােজনীয় নির্দেশদান বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।
[5] মূল্যায়ন করা : বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে, চারিত্রিক গুণাবলি অর্জনে, নৈতিক মূল্যবােধ গঠনে কোন শিক্ষার্থী কতখানি সাফল্যের স্তরে উন্নীত হয়েছে, তার মূল্যায়ন করার কাজটিও বিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত থাকে।
[6] দৈহিক বিকাশে সহায়তা : শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশের ক্ষেত্রেও বিদ্যালয়ের একটি ভূমিকা থাকে। খেলাধুলাে, ব্যায়াম, বাগান তৈরি, বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চামূলক কাজ, নৃত্য, ব্রতচারী প্রভৃতি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলি আয়ােজনের মাধ্যমে বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দৈহিক বিকাশে সহায়তা করে।
[7] সুঅভ্যাস গঠনে সহায়তা : শিশুর মধ্যে বিদ্যালয় জীবনে যদি কোনাে অভ্যাস একবার গড়ে ওঠে, তাহলে সেটি সারাজীবন তার সাথে থেকে যায়। তাই বিদ্যালয়ের আর-একটি কাজ হল শিক্ষার্থীদের মধ্যে কতকগুলি সুঅভ্যাস গড়ে দেওয়া। নিয়মানুবর্তিতা, অভ্যাস, দায়িত্ব পালনের অভ্যাস, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস ইত্যাদি আমরা ছাত্রজীবনেই আয়ত্ত করে ফেলি। এগুলির অনুশীলন বিদ্যালয়েই হয়ে যায়।
[8] সৃজনশীলতার বিকাশে সহায়তা : প্রতিটি শিশুর মধ্যে কিছু-না-কিছু সৃজনশীল-গুণ লুকিয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের কাজ হল শিক্ষার্থীর ওই সকল গুণ খুঁজে বের করে, তার বিকাশে সহায়তা দান করা।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।