Class 8 Class 8 Bengali পথের পাঁচালী প্রশ্ন উত্তর ক্লাস ৮ বাংলা | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Class 8 Pather Panchali Question Answer | Wbbse

পথের পাঁচালী প্রশ্ন উত্তর ক্লাস ৮ বাংলা | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Class 8 Pather Panchali Question Answer | Wbbse

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, এই পোস্টটিতে আমরা অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ের অন্তর্গত বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় -এর পথের পাঁচালী প্রশ্ন উত্তর গুলি দেওয়া হয়েছে। এই উপন্যাসের প্রশ্নের উত্তর আমরা সহজ ভাষায় ও সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করেছি, যাতে তোমরা সহজে বুঝতে পারো এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারো।

পথের পাঁচালী

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়


পথের পাঁচালী হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর

১. অতি সংক্ষেপে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১.১ কুঠির মাঠ দেখতে যাবার পথে কী দেখে অপু সব থেকে বেশি অবাক হয়েছিল?
উত্তর:
কুঠির মাঠ দেখতে যাওয়ার পথে খরগোশ দেখে অপু সব থেকে বেশি অবাক হয়েছিল।

১.২ আলকুশি কী?
উত্তর:
আলকুশি একধরনের উজ্জ্বল রঙের শুয়োযুক্ত বিষ ফল। এতে হাত দিলে হাত চুলকায় ও ফোসকা পড়ে।

১.৩ ‘এই দ্যাখো মা আমার সেই মালাটা’– কে, কখন এই কথা বলেছে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী উপন্যাস থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত উক্তিটি করেছে মুখুজ্যেবাড়ির মেয়ে টুনু। টুনু যখন দুর্গার খেলনার বাক্স ঘেঁটে তার হারানো পুঁতির মালাটি খুঁজে পায়, তখন সে তার মাকে একথা বলেছিল।

১.৪ অপু কার পাঠশালায় পড়তে গিয়েছিল? গুরুমশাই পড়ানের পাশাপাশি আর কোন কাজ করতেন?
উত্তর:
 বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপু গ্রামের প্রসন্ন গুরুমশাইয়ের পাঠশালায় পড়তে গিয়েছিল।
গুরুমশাই পড়ানোর পাশাপাশি মুদি দোকান চালাতেন ।

১.৫ পাঠশালা কখন বসতো? কজন ছাত্রছাত্রী ছিল?
উত্তর:
 বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে প্রসন্ন গুরুমশাইয়ের পাঠশালা বসত বিকেলবেলা।
পাঠশালায় সবসুদ্ধ আট – দশজন ছাত্রছাত্রী ছিল।

১.৬ আতুরি ডাইনি কে? বড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সম্পর্কে অপুর ধারণা বদলে গেলো কীভাবে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে ‘আতুরি ডাইনি’ অপুদের গ্রামের এক অসহায় বৃদ্ধা।দক্ষিণের মাঠে পাখির ছানা দেখতে গিয়ে ফেরার সময় পথ হারিয়ে নীলু আর অপু তার কুটিরে পৌঁছে গিয়েছিল।

ছেলেবেলায় অপু শুনেছিল এই ‘আতুরি ডাইনি’ বিলাতি আমড়া পাড়ার অপরাধে জেলেপাড়ার এক ছেলের প্রাণ কেড়ে কচু পাতায় বেঁধে জলে ডুবিয়ে রেখেছিল।তাই ‘আতুরি ডাইনি’ -র প্রতি অপুর মনে ভয় ছিল। কিন্তু বড়ো হয়ে অপু বুঝতে পারে সে সত্যিকারের ডাইনি নয়।সে এক অসহায় বৃদ্ধা । আমচুর বিক্রি করে তার দিন কাটে।এমনকি মরার সময় তার সৎকারেরও কেউ ছিল না।এভাবেই ‘আতুরি ডাইনি’ সম্পর্কে অপুর ধারণা বদলে যায়।

১.৭ লক্ষ্মণ মহাজনের বাড়ি থেকে ফিরে এসে অপু যে আশ্চর্য ভ্রমণকাহিনি শুনিয়েছিল তা লেখে।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে লক্ষ্মণ মহাজনের বাড়ি থেকে ফিরে এসে প্রায় পনেরো দিন ধরে অপু আশ্চর্য ভ্রমণকাহিনি শুনিয়েছিল।কত আশ্চর্য জিনিস সে দেখেছে এই কয়দিনে। দেখেছে রেলের রাস্তা যেখান দিয়ে সত্যিকারের রেল যায়। মাটির আতা, পেঁপে, শশা – অবিকল যেন সত্যিকারের ফল। এছাড়াও অপু শুনিয়েছিল একটি পুতুলের কথা, যেটার পেট টিপলে মৃগী রোগীর মতো হাত পা ছুঁড়ে খঞ্জনি বাজাতে শুরু করে।

১.৮ অপু কড়ি খেলতে কোথায় গিয়েছিল? তার সঙ্গীসাথি কারা ছিল লেখো।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপু কড়ি খেলতে জেলেপাড়ায় গিয়েছিল।

সেখানে তার সঙ্গীসাথি ছিল জেলেপাড়ার ছেলেরা ও ব্রাহ্মণপাড়ার ছেলে পটু।

১.৯ ‘সর্বদর্শনসংগ্রহ’ বইটিতে মানুষের ওড়ার ব্যাপারে কী লেখা ছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাস পাঠে জানা যায় ‘সর্বদর্শনসংগ্রহ’ বইটিতে মানুষের ওড়ার ব্যাপারে লেখা ছিল, শকুনির ডিমের ভিতরে পারদ ভরে কয়েকদিন রোদে রাখতে হয়। তারপর সেই ডিম মুখের ভিতর পুরে মানুষ ইচ্ছে করলে উড়ার ক্ষমতা লাভ করতে পারবে।

১.১০ ‘আমি মরবার সময় বইখানা তোমায় দিয়ে যাব দাদু।’— কে, কাকে একথা বলেছিলেন? কোন বইখানি দিয়ে যাবার কথা ছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে গাঙ্গুলি পাড়ার অধিবাসী বৃদ্ধ নরোত্তম দাস অপুকে একথা বলেছে।

তার প্রিয় ‘প্রেমভক্তি – চন্দ্রিকা’ বইটি অপুকে দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

১.১১ অপুর দপ্তরে কী কী বই ছিল? কোন মাসিক পত্রিকা হাতে নিয়ে অপুর মন নানা কল্পনায় ভরে উঠত?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপুর দপ্তরে ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা ‘চরিতমালা’। এছাড়াও ছিল কড়ি কষার আর্যা ও তৃতীয় নামতা ।

১.১২ ‘দুর্গা কতবার খুঁজিয়াছে, ও খেলা আর কোনো দিন আসে নাই।”— কোন খেলার কথা বলা হয়েছে, লেখো ।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাস থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিতে এক বৃদ্ধ বাঙাল মুসলমানের বড়ো রং-চং করা কাচ বসানো টিনের বাক্স নিয়ে খেলা দেখানোর কথা বলা হয়েছে।দুর্গা এই বাক্সের চোঙে চোখ লাগিয়ে সাহেব, মেম, ঘর-বাড়ি, যুদ্ধের ছবি দেখেছিল।

১.১৩ অপু বসে বসে খাতায় কী লেখে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপু বসে বসে খাতায় নাটক লেখে।

১.১৪ অপুর টিনের বাক্সতে কী কী বই ছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে একখানা নিত্যকর্ম পদ্ধতি, একটি পুরোনো প্রাকৃতিক ভূগোল, একখানা শুভঙ্করী, একখানা পাতাছেঁড়া বীরাঙ্গনা কাব্য আর তার মায়ের সেই মহাভারত প্রভৃতি বই অপুর টিনের বাক্সতে ছিল।

১.১৫ ‘তোরা নাকি এ গাঁ ছেড়ে চলে যাবি?”- কে, কাকে এ কথা বলেছে? কোন গাঁয়ের কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে রানি দিদি অপুকে একথা বলেছে।

এখানে নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের কথা বলা হয়েছে।

১.১৬ ‘রইল ওইখানে, কেউ জানতে পারবে না কোনো কথা, ওখানে আর কে যাবে?’— কী রইল? এখানে কোন জিনিসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে অপু একদিন দুপুরবেলা জিনিসপত্র গোছাতে গিয়ে সেজোঠাকুরনের বাড়ি থেকে টুনির মায়ের চুরি যাওয়া ছোট্ট সোনার সিঁদুর কৌটো দেখতে পায়।অপু সেটি গভীর বনে ছুঁড়ে দিয়ে মনে মনে এই কথা বলেছিল।

এখানে সেই সোনার কৌটোটার কথা বলা হয়েছে, যেটি তার দিদি চুরি করে তাকের উপরে রাখা কলসির ভিতর লুকিয়ে রেখেছিল।

২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো:

২.১ দুর্গ-অপুর খেলাধুলোর সরঞ্জাম বলতে কী ছিল লেখো।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে দুর্গা ও অপুর খেলার সরঞ্জাম বলতে ছিল একটা রং ওঠা কাঠের ঘোড়া, চার পয়সা দামের একটা টোল খাওয়া টিনের ভেঁপু বাঁশি, কয়েকটা কড়ি, দু পয়সা দামের একটা পিস্তল আর কতগুলো শুকনো নাটা ফল। এই খেলার সরঞ্জামগুলি ডালা ভাঙা একটা টিনের বাক্সে রাখা হত।

২.২ অপুর পাঠশালাটি কেমন ছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপুর পাঠশালাটি ছিল নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের প্রসন্ন গুরুমশাইয়ের পাঠশালা।গুরুমশাই একসাথে মুদির দোকান করতেন ও পাঠশালা চালাতেন। পাঠশালাটি ছিল দোকানের পাশেই। পাঠশালা বসত বিকেলে। সব মিলিয়ে আট – দশ জন ছেলেমেয়ে সেখানে পড়তে আসত। পাঠশালা যে ঘরে বসত তার কোনোদিকে বেড়া বা দেয়াল কিছু ছিল না।চারিদিক খোলা ছিল।বেত ছাড়া এই পাঠশালায় শিক্ষাদানের আর বিশেষ উপকরণ কিছু ছিল না।তবে এই বেতের ওপর গুরুমশাই ও অভিভাবকদের যথেষ্ট বিশ্বাস ছিল।

২.৩ আশ মিটিয়ে যুদ্ধ জিনিসটা উপভোগ করার জন্য অপু কী করত?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে মায়ের মুখে মহাভারতের কাহিনি শুনতে শুনতে কোনো কোনোদিন অপুর মনে হত, মহাভারতে যুদ্ধ সম্পর্কে কম লেখা আছে।তাই আশ মিটিয়ে যুদ্ধ জিনিসটাকে উপভোগ করার জন্য অপু এক উপায় বের করেছিল। সে একটা বাখারি কিংবা হালকা কোনো গাছের ডালকে অস্ত্ররূপে হাতে নিয়ে, বাড়ির পিছনের বাঁশ বাগানের পথে অথবা বাইরের উঠোনে আপন মনে যুদ্ধের কথা বলত ও যুদ্ধ যুদ্ধ খেলত।

২.৪ দুর্গ তো পাঠশালায় যেতো না, তার সারাদিন কীভাবে কাটত, লেখো।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপুর দিদি দুর্গা পাঠশালায় যেত না। সারাদিন বন জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত। শুধু খিদে পেলে বাড়িতে খেতে আসত। সে সব সময় আপন মনে ঘুরে বেড়াত। পাড়ার সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে খেলাধুলা করত না।কোথায় কোন ঝোপে বৈঁচি পাকল, কাদের বাগানে আমের গুটি হয়েছে, কোন বাঁশতলার শেয়ালকুল খেতে মিষ্টি এসব বিষয়ে তার সজাগ দৃষ্টি থাকত।

২.৫ বাছুর খুঁজতে বেরিয়ে দুর্গা-অপু কীভাবে পথ হারিয়ে ফেলেছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে একবার অপু-দুর্গাদের রাঙি গাইয়ের বাছুর হারিয়ে যাওয়ায় অপু ও দুর্গা দক্ষিণ মাঠে বাছুর খুঁজতে গিয়েছিল।দুর্গা পাকা রাস্তার ওপারে বহুদূর ঝাঁপসা মাঠের দিকে তাকিয়ে অপুকে রেলে রাস্তা দেখে আসার কথা বলে। এরপর ভাইবোন মিলে পাকারাস্তা থেকে নেমে মাঠ, বিল, জল ভেঙে দক্ষিণ দিকে ছুটতে থাকে। নবাবগঞ্জের লাল রাস্তা, রোয়ার মাঠ, জলসত্রতলা, ঠাকুর – ঝি পুকুর পেরিয়ে তারা এমন এক জায়গায় পৌঁছায় যেখানে রেলপথ নেই বরং আছে একটা বড়ো জলা, সামনে হোগলা আর শোলা গাছে ভরা। আসেপাশে কোনো গ্রাম নেই।এভাবেই তারা পথ হারিয়ে ফেলেছিল।

২.৬ রাজকৃষ্ণ সান্যালের দেশভ্রমণের গল্পগুলি কেমন ছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে গুরুমশাইয়ের পাঠশালায় অনেকে গল্প করতে আসতেন।তাদের মধ্যে অন্যতম রাজকৃষ্ণ স্যান্যাল।তিনি ছিলেন দেশ ভ্রমণের বাতিকগ্রস্ত।কোথায় দ্বরকা, কোথায় সাবিত্রী পাহাড়, কোথায় চন্দ্রনাথ তা একা দেখে তিনি তৃপ্তি পেতেন না।তাই প্রতিবারই স্ত্রী পুত্রকে সাথে নিয়ে ঘুরতে যেতেন এবং খরচাপাতি করে সর্বস্বান্ত হতেন। যে কোনো গল্প যত সামান্যই হোক তা সাজিয়ে বলার অসাধারণ দক্ষতা ছিল রাজকৃষ্ণ স্যান্যালের। পাঠশালায় পড়াশুনার চেয়ে এইসব গল্প শুনতে অপুর বেশি ভালো লাগত।

২.৭ ‘একদিন পাঠশালায় এমন একটি ঘটনা হইয়াছিল, যাহা তাহার জীবনের একটি নতুন অভিজ্ঞতা’।— অপুর জীবনের সেই নতুন অভিজ্ঞতাটি কী?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে একদিন পাঠশালায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যা অপুর জীবনের একটি নতুন অভিজ্ঞতা। সেদিন বিকেলে পাঠশালায় গুরুমশাইয়ের সাথে গল্প করার জন্য তার কোনো অতিথি বা বন্ধু উপস্থিত ছিল না।সুতরাং কোনো গল্পগুজব হচ্ছিল না কেবল পড়াশুনা চলছিল। অপু শিশুবোধক পড়ছিল তখন গুরুমশাই তাকে প্লেটে শ্রুতিলিখন লিখতে বলেন। গুরুমশাই নিজের কথা না বলে কিছু একটা মুখস্থ বলতে লাগলেন অপু যেমন দাশু রায়ের পাঁচালী ছড়া মুখস্থ করে তেমন শুনতে শুনতে অপুর মনে হয়েছিল অনেকগুলো অমন সুন্দর কথা সে আগে কখনো শোনেননি। সকল কথার অর্থ না বুঝলেও অজানা শব্দ ও ললিত পদের ধ্বনি অপুর ভালো লাগছিল। কুহেলিকা ঘেরা অস্পষ্ট শব্দগুলি যেন অপুর মনে অপূর্ব কোনো দেশের ছবি তুলে ধরেছিল।

২.৮ দুর্গা -অপু কীভাবে রেলের রাস্তা দেখার চেষ্টা করেছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে একবার অপু-দুর্গাদের রাঙি গাইয়ের বাছুর হারিয়ে যাওয়ায় অপু ও দুর্গা দক্ষিণ মাঠে বাছুর খুঁজতে গিয়েছিল। দুর্গা পাকা রাস্তার ওপারে বহুদূর ঝাঁপসা মাঠের দিকে তাকিয়ে অপুকে রেলে রাস্তা দেখে আসার কথা বলে। এরপর ভাইবোন মিলে পাকারাস্তা থেকে নেমে মাঠ, বিল, জল ভেঙে দক্ষিণ দিকে ছুটতে থাকে।নবাবগঞ্জের লাল রাস্তা, রোয়ার মাঠ, জলসত্রতলা, ঠাকুর – ঝি পুকুর পেরিয়ে তারা এমন এক জায়গায় পৌঁছায় যেখানে রেলপথ নেই বরং আছে একটা বড়ো জলা, সামনে হোগলা আর শোলা গাছে ভরা। এভাবেই দুর্গা অপুকে রেলপথ দেখানোর চেষ্টা করেছিল। যদিও পথ হারিয়ে অনেক কষ্টে তাদের বাড়ি ফিরতে হয়েছিল।

২.৯ ‘বাঁকা কঞ্চি অপুর জীবনের এক অদ্ভুত জিনিস।’- এ কথা বলার কারণ কী? সামান্য উপকরণ নিয়ে খেলার আনন্দ সম্পর্কে লেখো।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে বাঁকা কঞ্চিকে অপুর জীবনে এক অদ্ভুত জিনিস বলা হয়েছে।কারণ সামান্য কঞ্চি হাতে পেলে অপু খাওয়া দাওয়ার কথা ভুলে কোনো নদীর ধারে কিংবা কোনো নির্জন বনের পথে অপূর্ব আনন্দে সারাদিন একা একা সময় কাটিয়ে দিতে পারত।শুকনো, হালকা, গোড়ার দিক মোটা আগার দিক সরু কঞ্চি হাতে পেলেই অপুর মন পুলকে শিহরিত হয়ে উঠত।এই কঞ্চি হাতে নিয়ে সে কখনো নিজেকে রাজপুত্র, কখনো তামাকের দোকানি, কখনো ভ্রমনকারী রূপে কল্পনা করত। সে আপন মনে বিড়বিড় করে খেলা করত।তবে যাতে তাকে দেখে কেউ পাগল না ভাবে তাই এই খেলা চলত লোকচক্ষুর আড়ালে।

দামি খেলনা সামগ্রীর থেকে সামান্য উপকরণ নিয়ে খেলার আনন্দ অপরিসীম যেমন আমি ছেলেবেলায় ফাঁকা দেশলাইয়ের খাপ, বাসের টিকিট, সাইকেলের টায়ার, কুড়িয়ে পাওয়া রঙিন পাথর প্রভৃতি নিয়ে খেলতাম। আমার শৈশব জীবনের এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে।

২.১০ শুন্যে ওড়ার ক্ষমতা অর্জনের জন্য অপু কী করেছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপু লুকিয়ে বাবার বইয়ের বাক্স ঘেঁটে পাওয়া ‘সর্ব-দৰ্শন-সংগ্রহ’ বই পড়ে শূন্যে ওড়ার কথা জেনেছিল। একইসাথে অপু জেনেছিল শকুনির ডিমের মধ্যে পারদ ভরে দিয়ে কয়েকদিন রোদে রেখে সেই ডিম মুখে দিয়ে মানুষ ইচ্ছে মতো উড়তে পারে।তাই অপু তার দিদি, পাড়ার সতু, নীলু, কানু, পটল প্রমুখের কাছে শকুনির বাসার খোঁজ নেয় অবশেষে এক রাখালের কাছ থেকে চার পয়সা ও তার প্রাণের চেয়েও কিছু কড়ির বিনিময়ে দুটি শকুনির ডিম সংগ্রহ করে।যদিও পরবর্তীতে অপুর দিদির হাতে লেগে ডিম দুটি ভেঙে যায় এবং তার শূন্যে ওড়ার স্বপ্নও ভেঙে যায়।

২.১১ ভুলো কুকুরকে নিয়ে দুর্গা কীভাবে আমোদ উপভোগ করত?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর দুর্গা তার ভাই অপুকে মজার বিষয় দেখানোর জন্য পাতের একমুঠো ভাত নিয়ে বাঁশবাগানে যায়।তারপর আয় ভুলো তু – উ – উ – উ’ বলে হাক দেয়।এরপর কোথা থেকে চোখের নিমেষে বন-জঙ্গল-লতা-পাতা ছিড়ে ভুলো হাজির হয়।ভুলো কুকুর এসে পড়লে দুর্গা খুশিতে হিহি করে হাসে । এভাবেই ভুলো কুকুরকে নিয়ে দুর্গা আমোদ উপভোগ করত।

২.১২ বৃদ্ধ নরোত্তম বাবাজির সঙ্গে অপুর কীভাবে ভাব হয়েছিল?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে গাঙ্গুলি পাড়ার বৃদ্ধ নরোত্তম দাস বাবাজির সঙ্গে অপুর বড়ো ভাব।এই গৌরবর্ণ, দিব্যকান্তি, সদানন্দ বৃদ্ধ সামান্য খড়ের ঘরে বাস করতেন।বিশেষ গোলমাল ভালোবাসতেন না । অপু বাল্যকাল থেকেই বাবার সাথে মাঝে মাঝে নরোত্তম দাসের বাড়িতে যেত, সেই থেকেই দুজনের মধ্যে খুব ভাব।

২.১৩ অপু-দুর্গার চড়ুইভাতির আয়োজন সম্পর্কে লেখো। এখনকার পিকনিকের সঙ্গে এরকম চড়ুইভাতির তফাৎ কোথায়?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে নীলমণি রায়ের জঙ্গলাকীর্ণ ভিটের খানিকটা দুর্গা নিজের হাত দিয়ে পরিষ্কার করে পিকনিকের জায়গা তৈরি করে। এরপর চুপি চুপি বাড়ি থেকে তেল, চাল নিয়ে আসে, পুঁটিদের তালতলার ঝোঁপ থেকে মেটে আলু এনে ভাতের মধ্যে সেদ্ধ দেয়।মাটির ছোবার মতো ছোট্ট একটা হাড়িতে ভাত চড়ানো হয়। পরবর্তীতে তাদের বনভোজনের সঙ্গী হয়েছিল কালীনাথ চক্কত্তির মেয়ে বিনি।রান্নার পর তারা কলার পাতায় মহা আনন্দে নুন ছাড়া ভাত, বেগুন ভাজা, কষাটে আলু খায়।

এখনকার পিকনিকের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকে। গাড়ি । যাওয়ার করা হয়, গান-বাজনার আয়োজন থাকে। রান্নার জন্য আলাদা লোক রাখা হয়।সকলে চাঁদা তুলে পিকনিক করা হয়।একারণে উপন্যাসের অপু-দুর্গা-বিনিদের চড়ুইভাতির সাথে এখনকার পিকনিকের বিস্তর পার্থক্য।দুর্গা-অপুদের পিকনিক আড়ম্বর কম কিন্তু আন্তরিকতা ও নির্ভেজাল আনন্দ বেশি।আর এখনকার পিকনিকের আড়ম্ব ও অতিরিক্ত উন্মাদনা কখনো উচ্ছৃঙ্খলতায় পরিণত হয় যা কখনোই কাম্য নয়।

২.১৪ অজয় কে? তার সঙ্গে অপুর বন্ধুত্ব হল কীভাবে?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অজয় নীলমণি হাজরার যাত্রাদলের শিশু অভিনেতা।

যাত্রার বিরতির পর পানের দোকানে অজয়ের সাথে অপুর আলাপ হয়। অপু রাজপুত্রের ভূমিকায় অভিনয় করা নিজের বয়সী অজয়কে দেখে মুগ্ধ হয়।সাহস করে তাকে পান খাওয়াতে চায়। এখান থেকেই তাদের বন্ধুত্বের সূত্রপাত। পরবর্তীতে অপুদের বাড়িতে যাত্রাদলের যে ঢোলকওয়ালা লোকটি খেতে আসত তার বদলে অপু অজয়কে খেতে আসার নিমন্ত্রণ জানায়। পরবর্তীতে সর্বজয়া, দুর্গা, অপু সকলেই অজয়কে ভালোবেসে ফেলে।অজয় তাদের গান শোনায়।এভাবে অপুর সঙ্গে অজয়ের গভীর বন্ধুত্ব তৈরি হয় ।

২.১৫ অপু তার দিদির সঙ্গে কেন কখনও আড়ি করবে না?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে অপু রাজীদের বাড়িতে যষ্টিমধু ভেবে রোদে শুকোতে দেওয়া পোস্তদানা খেয়ে এসেছিল। সে এমন বোকা যে পোস্ত দানা চেনে ও না। এই ঘটনা দুর্গা তার মাকে জানালে অপু দিদির সাথে আড়ি করে দিতে চায়।কিন্তু মুখে আড়ির কথা বললেও সে তা করেনা।কারণ সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে দিদি তার পাশে থাকে।নিজের শত কষ্ট হলেও দিদি অপুর সব আবদার পূরণ করে।দিদি যেমন তাকে ভালোবাসে, তেমন সেও দিদি অন্ত-প্রাণ।তাই অপু কখনো দিদির সাথে আড়ি করবেনা ।

৩. নীচের প্রশ্নগুলি নিজের ভাষায় বিশদে লেখো:

৩. ১ বাবার সঙ্গে অপুর কুঠির মাঠ দেখতে যাবার অভিজ্ঞতাটি লেখো। ‘কুঠিবাড়ি’বলতে তুমি কী বোঝো?
উত্তর:
অপুর ‘কুঠির মাঠ’ দেখার অভিজ্ঞতা: একবার মাঘ মাসের শেষদিকে সরস্বতী পুজোর দিন বিকেলে নিশ্চিন্দিপুরের কয়েকজন লোক গ্রামের বাইরের মাঠে নীলকণ্ঠ পাখি দেখতে গিয়েছিল। হরিহর এবং তার শিশুপুত্র অপু সেই দলের সঙ্গী হয়েছিল। ছয় বছরের শিশু অপু এই প্রথম গ্রামের বাইরে পা রাখে। বড়ো বড়ো কানওলা খরগোশ দেখে সে ভীষণ অবাক হয়। লোভীর মতো তাকিয়ে থাকে নীচু নীচু কুলগাছে পেকে-থাকা অজস্র কুলের দিকে। এমন সময় তার বাবা হঠাৎ সাহেবদের কুঠির দিকে তাকে তাকাতে বলে। সেই কুঠিটি নদীর ধারের অনেকটা অংশ জুড়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক বিরাট হিংস্র জন্তুর কঙ্কালের মতো পড়েছিল। অপু এই কুঠির ভাঙা জ্বালঘরটা তাদের পাড়ার স্নানের ঘাট থেকে আবছা আবছা দেখতে পেত। এই জ্বালঘরে বড়ো বড়ো কড়াইতে জ্বাল দিয়ে নীল তৈরি হত। এখন সামনাসামনি সেই কুঠির মাঠ দেখে তার মনে হল কুঠিটি নদীর ধারের অনেকটা অংশ জুড়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক বিরাট হিংস্র জন্তুর কঙ্কালের মতো পড়েছিল। অপু এই কুঠির ভাঙা জ্বালঘরটা তাদের পাড়ার স্নানের ঘাট থেকে আবছা আবছা দেখতে পেত। এই জ্বালঘরে বড়ো বড়ো কড়াইতে জ্বাল দিয়ে নীল তৈরি হত। এখন সামনাসামনি সেই কুঠির মাঠ দেখে তার মনে হল মাঠটির পরেই রয়েছে মায়ের মুখে শোনা সেই রূপকথার রাজ্য। সেখানে শ্যাম-লঙ্কার দেশে ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমি বসে-থাকা গাছের নীচে নির্বাসিত রাজপুত্র তলোয়ারটি পাশে রেখে একা শুয়ে রাত কাটায়। কুঠির মাঠ থেকে ফেরার পথে অপু একটা নীচু ঝোপ থেকে আলকুশি ছিঁড়ে নিতে চায়। আলকুশিতে বিষ আছে জানিয়ে হরিহর তাকে তা ধরতে বারণ করে।

→ ”কুঠিবাড়ি’র অর্থ হল ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের বাসস্থান বা কার্যালয়। ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’-তে উল্লিখিত কুঠিবাড়িটি ছিল ব্রিটিশ নীলকর সাহেবদের। এই কুঠিতে থেকেই তারা কাছাকাছি অঞ্চলে নীলচাষ করাত এবং তা থেকে নীল তৈরির তদারকি করত।

৩.২ ছবি-দেখে-চেনা কোনে কিছু হঠাৎ চোখের সামনে চলে এলে কেমন লাগে? অপুর খরগোশ দেখার মতো তোমার হঠাৎ অবাক হবার মতো কোনো ঘটনা লেখো।
উত্তর:
ছবি দেখেই প্রথমে প্রতিটি শিশুমনে এক নিজস্ব উপলব্ধি হয়। কিন্তু সেই ছবির বিষয় যদি হঠাৎ চোখের সামনে চলে আসে তখন শিশুমন বিস্ময়ে ভরে ওঠে। আনন্দ ও কৌতূহলে নেচে ওঠে তার মন। অপুও বর্ণপরিচয়ে ‘খ’-এ খরগোশের ছবি দেখেছিল। সেই ছবির খরগোশ ছিল তার কল্পনার বিষয়। যখন সে চোখের সামনেই জীবন্ত অবস্থায় কানখাড়া করা খরগোশকে লাফাতে দেখে, তখন তার যে উত্তেজনা ও আনন্দ হয়েছিল, তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়।

শহরেই আমার জন্ম এবং পড়াশোনা। তাই গ্রাম বা গ্রামের পরিবেশ আমি শুধু ছবিতে বা টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখেছি। গতবছর দুর্গাপূজার আগে আমি বাবা-মার সঙ্গে মায়ের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেই গ্রামে যেতে হলে শহর ছাড়িয়ে অনেকটা পথ যেতে হয়। দুদিকে সবুজ মাঠের বুক চিরে কাঁচা-পাকা রাস্তা দিয়ে আমাদের গাড়িটা যাচ্ছিল। তখন সবে দুপুরের চড়া রোদটা কমেছে। আমি দেখলাম, রাস্তার দু-ধার দুধের মতো সাদা কাশফুলে ভরে উঠেছে। এতদিন আমি জানতাম, মা দুর্গার আগমনের খবর জানায় কাশফুল। এতদিন আমি ছবি এঁকেছি কাশফুলের। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছি বাতাসে কাশফুলের দোলা। এই প্রথম আমি নিজের চোখে শরতের বাতাসে নীল আকাশের নীচে কাশফুলের দোলা দেখতে পেলাম। এক অদ্ভুত আনন্দ ও ভালোলাগা আমাকে ছুঁয়ে গেল। ছবিতে দেখা জগৎটা বাস্তবে যে এত সুন্দর হতে পারে, সেটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। কাশফুলের ওই শুভ্রতা আমায় সত্যিই মুগ্ধ করেছিল। এই বিস্ময়ের স্মৃতি চিরদিন আমার মনে থেকে যাবে।

৩.৩ যে দিন অপু প্রথম পাঠশালা গেল সেদিনের কথা লেখো। তোমার প্রথম স্কুলে যাবার দিনটি মনে পড়ে? সেদিনের কথা তোমার যা মনে আছে লেখো।
উত্তর:
‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাস থেকে জানতে পারি। একদিন বিকেলে হঠাৎ চারিদিক অন্ধকার করে কালবৈশাখীর ভীষণ ঝড় উঠেছিল। আর সেইসঙ্গে দুর্গাও ছুটেছিল আম কুড়োতে। অপু তার দিদির পেছন পেছন দৌড়ে গেছিল। অপুকে সিঁদুরকৌটোতলায় থাকতে বলে দুর্গা চলে গেছিল সোনামুখীতলার দিকে। ধুলোয় তখন চারদিক ভরে গেছিল, বড়ো বড়ো গাছগুলোর ডালপালা সব ঝড়ে বেঁকে গিয়ে গাছগুলোকে নেড়া নেড়া দেখাচ্ছিল। ঝড়ে প্রচুর আম পড়ায় অপু আনন্দে দিদিকে ডাকতে থাকে, কিন্তু চিৎকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সে আম কুড়োতে পারে না। ক্রমশ ঝড়ের তীব্র শব্দে আম পড়ার শব্দও সে আর শুনতে পাচ্ছিল না। দুর্গা আট- নটা আর অপু মাত্র দুটো আম কুড়োনোর পরই ভুবন মুখুজ্যের বাড়ির ছেলেমেয়েরা হই হই করে আম কুড়োতে চলে এলে তাদের আর আম কুড়োনো হয় না। দুর্গা তার ভাইকে নিয়ে রাংচিতার বেড়ার ফাঁক গলে বাগান থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তারা গড়ের পুকুরের পাশে থাকা বাগানে যায় এবং সেখানেও দুর্গা আট-দশটা আম পায়। এমন সময় মুশলধারে বৃষ্টি নামে। প্রায় সন্ধ্যার সময় ঝড়বৃষ্টি থামলে দুর্গা আর অপু বাড়িতে ফিরে আসে।

আমার জন্ম গ্রামে, মামারবাড়িতে। কিন্তু আমার বেড়ে ওঠা শহর কলকাতায়। এক গরমের ছুটিতে মামারবাড়ি গিয়ে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। বিকেলবেলা দাদুর সঙ্গে বাজার থেকে ফিরছিলাম একটা বিরাট আমবাগানের মধ্য দিয়ে। এমন সময় শুরু হল প্রবল বৃষ্টি, সঙ্গে ঝড়। প্রথমে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম কারণ আমার এই অভিজ্ঞতা ছিল না। চোখের সামনে কালো আকাশজুড়ে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল আর বিকট শব্দে বাজ পড়ছিল। আমি ভয় পেয়ে কানে হাত দিয়ে বারবার চোখ বন্ধ করছিলাম। মুহূর্তেই পায়ের পাতা পর্যন্ত জল জমে উঠল। বিদ্যুতের ঝলকানিতে দেখলাম বড়ো বড়ো নারকেল, আম, জাম, পিটুলি গাছগুলো একবার মাটিতে পড়ে আবার যেন উঠে দাঁড়াচ্ছে। মাঠের পাশের রাস্তায় জল কাদার মধ্যে দিয়ে এগোনোর চেষ্টা করতেই দাদু বলল পাশের আমবাগানে আম কুড়োতে যাবে। ভয় এবং আনন্দ নিয়েই দাদুর সঙ্গে আমবাগানে ঢুকলাম। কয়েকটা আমও পেলাম। এই অভিজ্ঞতাটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।

৩.8 কালবৈশাখী ঝড়ে দুর্গা-অপুর আম কুড়নোর ঘটনাটি লেখো। ঝড়বৃষ্টিতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে তা উপভোগ করার তোমার কোনো অভিজ্ঞতা থাকলে তা লেখো।
উত্তর:
পৌষ মাসের এক শীতের সকালে রোদ ওঠার অপেক্ষায় অপু যখন লেপমুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়েছিল, সেই সময় তার মা তাকে পাঠশালায় যাওয়ার কথা জানায়। স্লেট, বই-সহ তাকে যে পাঠশালায় যেতে হবে, এ কথা শুনেই অপু অবাক হয়ে যায়। অপুর ধারণা ছিল যারা সুবোধ বালক নয়, তাদেরই বুঝি পাঠশালায় যেতে হয়। যাই হোক, শেষপর্যন্ত বাবার ভয়ে এবং মায়ের প্রতি একরাশ অভিমান নিয়ে জলভরা চোখে অপু প্রথম দিন পাঠশালায় যায়। প্রথম দিন সবকিছু অচেনা অজানা ছিল বলে অপুর মনে হয়েছিল সমুদ্রের মতো বিরাট কিছুর সামনে সে এসে পড়েছে। অপু যখন পাঠশালায় পৌঁছোল তখন গুরুমহাশয় দোকানের মাচায় বসে সৈন্ধব লবণ ওজন করছেন। কয়েকটি বড়ো ছেলে চাটাইয়ে বসে দুলে দুলে নীচুস্বরে কিছু পড়ছে। একটি ছোটো ছেলে আপন মনে পাততাড়ির তালপাতা চিবিয়ে যাচ্ছে। দুজন ছেলে স্লেটে ঘর এঁকে ঢ্যারা-গোল্লা খেলায় ময় অপু নিজের স্লেটে বানান লিখতে লিখতেই গুরুমহাশয়ের গলা শুনতে পায়। মুহূর্তের মধ্যেই গুরুমহাশয়ের কথায় সতে নামক ছেলেটি ফনের স্লেটটা গুরুমহাশয়ের কাছে হাজির করে। গুরুমহাশয়ের কাছে ছেলে দুটির যাওয়ার ভঙ্গি দেখে অপু হাসি চাপতে না পেরে ফিক করে হেসে ফেলে। ব্যাপারটা লক্ষ করে গুরুমশাই অপুকে ধমকে দেন। ঠিক তখনই গুরু মহাশয় ইট নিয়ে আসার নির্দেশ দিলে অপু ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে যায়। ইট আনা হলে অপু বুঝতে পারে শাস্তি তার জন্য নয়, ওই ছেলে দুটির জন্য। সবমিলিয়ে প্রথম দিনে অপু বিস্ময়, ভয় ও কৌতূহলমিশ্রিত এক নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করে।

→ হ্যাঁ, আমার প্রথম স্কুলে যাবার দিনটি মনে পড়ে। প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনটি আজও আমার স্মৃতিতে স্পষ্ট। আমি স্কুলে বাবার সাথে গিয়েছিলাম। শিক্ষক মহাশয় আমাকে একটি শ্রেণিকক্ষে নিয়ে গেছিলেন যেখানে আমার মতো আরও অনেক ছেলেমেয়ে ছিল। তারপরে শ্লেটে শিক্ষক মহাশয় আমাকে অ, আ লিখতে বলেছিলেন এবং নামতা মুখস্থ জিজ্ঞাসা করেছিলেন। আমি শ্লেটে অ, আ লিখেছিলাম এবং নামতা মুখস্থ বলেছিলাম।

৩.৫ ‘অচেনার আনন্দকে পাইতে হইলে পৃথিবী ঘুরিয়া বেড়াইতে হইবে, তাহার মানে নাই ’- “পথের পাঁচালীতে দুর্গা আর অপু নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে থেকেই কীভাবে বারে বারে অচেনার আনন্দ অনুভব করেছে লেখো।
উত্তর:
নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের মায়াময় প্রকৃতিতে দুটি কিশোর-কিশোরীর বড়ো হয়ে ওঠার একটি চিত্র লেখক এঁকেছেন।অপু যখন ছোটো ছিল তখন থেকেই সে এই নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের পরিবেশকে আপন মনের জগতে রেখে দিয়েছিল। দুর্গাও তেমন এই গ্রামের বন জঙ্গল, বাগান ইত্যাদি সম্পর্কে বিশেষ পরিচিত ছিল। বায়োস্কোপ, যাত্রাপালা, মায়ের মুখে মহাভারত শোনা-এ সবকিছুই তাদের শিশুমনে আনন্দ ও বিস্ময় সৃষ্টি করত। মাকে না বলে রেললাইন দেখতে যাওয়া, দিদির সঙ্গে চড়ুইভাতি করার অভিজ্ঞতা অপুকে এক নতুন জীবনের মুখোমুখি করে। নুন ছাড়া মেটে আলু খাওয়াও এই অচেনা আনন্দের অংশ। এইভাবেই নিশ্চিন্দিপুরের ছোটো সীমানার মধ্যেই দুর্গা ও অপু নিজেদের আনন্দের পৃথিবী গড়ে নিয়েছিল।

৩.৬ হরিহরের সঙ্গে মহাজনবাড়িতে গিয়ে অপু কীভাবে প্রথম নিজেদের দারিদ্র্য সম্পর্কে সচেতন হলো, লেখো।
উত্তর:
লক্ষ্মণ মহাজন অপুর বাবা হরিহরের শিষ্য ছিলেন। একদিন অপু বাবার সঙ্গে লক্ষ্মণ মহাজনের বাড়ি যায়। সেখানে মহাজনের ছোটোভাইয়ের স্ত্রীর কাছে অপু পশমের পাখি, শোলার মাছ, কড়ির আলনা, কাচের পুতুল প্রভৃতি হরেকরকমের জিনিস দেখে। অপুর মনে হয়, “এরা খুব বড়োলোক তো।” এই বধূটি যখন অপুকে ঘি ও কিশমিশ দিয়ে তৈরি মোহনভোগ খেতে দেয় তখন অপু ভীষণ অবাক হয়ে যায়। তার মা-র তৈরি মোহনভোগ ছিল কেবল জলে সেদ্ধ সুজি। সে বুঝতে পারে, তারা গরিব, তাই তাদের বাড়ির মোহনভোগ এবং লক্ষ্মণ মহাজনের বাড়ির মোহনভোগের মধ্যে এই আকাশ-পাতাল তফাত। লক্ষ্মণ মহাজনের প্রতিবেশী অমলাদের বাড়ি গিয়ে তার খেলার জিনিস দেখে অপু অবাক হয়। সে তার দিদির খেলার জিনিসের সাথে এগুলির তুলনা করে বুঝতে পারে, তাদের পয়সা নেই বলেই তারা এমন খেলনা কিনতে পারে না। মহাজন বাড়ির ছোটোভাইয়ের স্ত্রীর ঘরে নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে অপু আরও অবাক হয়ে যায়। আলাদা রেকাবিতে লবণ ও লেবু দেওয়া রয়েছে। প্রত্যেক তরকারির জন্য আলাদা আলাদা বাটি সাজানো আছে। শুধু তারই জন্য একটা গলদাচিংড়ির মাথা দেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়িতে নিয়মিত ওলের ডাটাচচ্চড়ি ও লাউছেঁচকি খাওয়া হয়। অপুর শিশুমন বুঝতে পারে, সবাই তাদের মতো গরিব নয়। বড়োলোক কারা, তা তার শিশুমনে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

৩.৭ দুর্গা-অপুর যে নানান খেলার কথা উপন্যাসে আছে সেগুলির কথা লেখো। হার-জিত আছে এমন খেলার সঙ্গে এ জাতীয় খেলার তফাৎ কী? তুমি কী ধরনের খেলা পছন্দ করো এবং কেন তা লেখো।
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে আমরা ছেলেবেলার নানা ধরনের খেলার কথা পাই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-পুতুল খেলা, যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা, গঙ্গা- যমুনা খেলা, চড়ুইভাতি খেলা, কড়ি খেলা ইত্যাদি।

→ কেবল কড়ি খেলা ও যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা ছাড়া অন্য খেলাগুলিতে হারজিতের প্রশ্ন আসে না। হারজিতের খেলা মানে ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস ইত্যাদি। হার-জিতের খেলায় যে উত্তেজনা, উল্লাস কিংবা হতাশা এবং পরিশ্রম লুকিয়ে থাকে তা উপন্যাসে বর্ণিত ছেলেবেলার খেলাগুলিতে থাকে না। তবে জয় বা পরাজয় না থাকলেও এই খেলাগুলিতে আনন্দ কিন্তু কোনো অংশেই কম নেই।

→ বড়ো হয়ে গেছি বলে আমি এখন হার-জিতের খেলাতেই বেশি আকৃষ্ট হই। আমার প্রিয় খেলা ফুটবল। ফুটবলের মধ্যে আছে প্রাণের উত্তেজনা। গোলের লক্ষ্যে দৌড়-দৌড়-দৌড়-এই একাগ্রতাই ফুটবল খেলার প্রাণ। মহামনীষী বিবেকানন্দও বলেছেন, গীতা পাঠের থেকে ফুটবল খেলা ভালো। এতে একজন মানুষের মন ও শরীর মজবুত হয়ে ওঠে। তা ছাড়া নিজের দলকে জেতানোর তাগিদ আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। খেলায় হার-জিত না থাকলে-ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এই আনন্দ কখনোই পাওয়া যায় না।

৩.৮ মহাভারতের সমস্ত চরিত্রের মধ্যে অপুর কর্ণের চরিত্র বড়ো ভালো লাগে কেন?
উত্তর:
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে ‘অপু’ চরিত্রটিকে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ ও অনুভূতিশীল করে গড়ে তুলেছেন। অল্পতেই তার চোখে জল আসে। সে অন্যের দুঃখ সহ্য করতে পারে না। যখন মায়ের মুখে সে মহাভারতের গল্প শোনে, তখন তার চোখে জল চলে আসে। কারণ, কর্ণের দুঃখ তার সহ্য হয় না। যুদ্ধক্ষেত্রে কর্ণের অসহায়তা তাকে খুবই বেদনা দেয়। সে বুঝতে পারে যে, যুদ্ধে অন্যায়ের সঙ্গে কর্ণকে হত্যা করা হয়েছে। তাই তার মনে কর্ণের প্রতি সহানুভূতি জন্মায়। সে কর্ণের জন্য কেবলই কাঁদে-মনে মনে কর্ণের রথের চাকাকে মাটি থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করে। এইভাবেই মহাভারতের কর্ণ চরিত্রটি অপুর মনে প্রিয় হয়ে ওঠে।

৩.৯ মহাভারতে তোমার প্রিয় চরিত্র কোনটি? কেন তাকে তোমার ভালো লাগে, লেখো।
উত্তর:
আমার কাছে মহাভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্র হলেন শ্রীকৃষ্ণ। ধর্মস্থাপনের জন্য কৃষ্ণই ভারতযুদ্ধকে সংগঠিত করেন ।

→ মথুরারাজ কংসের ভয়ে বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম সন্তান কৃষ্ণ নন্দরাজা ও যশোদার কাছে মানুষ হয়েছেন। পরে নিজের মামা অত্যাচারী কংসকে বধ করে কৃষ্ণ যদুবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান পুরুষ। তিনিই প্রথম অনুভব করেছিলেন ধর্মরাজ্য গঠনের জন্য কৌরব ও পাণ্ডবের যুদ্ধ অনিবার্য। তিনি চাইতেন পরিবার-সমাজ-দেশ-এর মধ্যে মানুষ একাত্মভাবে, দলগতভাবে, একে অন্যের বন্ধু হয়ে থাকুক। তা না হলে এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। এই পরম সত্য শেখানোর জন্যই তিনি আমার অত্যন্ত প্রিয় চরিত্র হয়ে উঠেছেন।

৩.১০ ‘সে জগৎ জানার, মানুষ জানার, মানুষ চেনার দিগ্বিজয়ে যাইবে’ – কার কথা বলা হয়েছে? ভবিষ্যতের যে রঙিন স্বপ্নে সে বিভোর তার কথা লেখো।
উত্তর:
আলোচ্য উদ্ধৃতিতে ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অপুর কথা বলা হয়েছে।

→ অভাব-অনটন ছিল অপুর পরিবারের নিত্যসঙ্গী। তবু সে নতুন দেশের স্বপ্ন দেখে। এই বিশাল বিশ্বকে চেনাজানার জন্য তার মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। সারা পৃথিবীর প্রকৃতি ও তার মানুষের সৌন্দর্যের সাথে নিজেকে মিলিয়ে দেওয়ার স্বপ্নে সে বিভোর থাকে। সে কল্পনা করে ‘বঙ্গবাসী’ কাগজের বিলাতযাত্রীর মতো সেও একদিন না একদিন বিলেত যাত্রা করবে। কলকাতা থেকে একদিন তার জাহাজ ছাড়বে। বঙ্গোপসাগরের মোহানায় সাগর দ্বীপ পিছনে ফেলে সে নতুন নতুন দেশের উদ্দেশে ভেসে যাবে। সে বিলেত যাবে, জাপান যাবে, বাণিজ্যযাত্রা করবে, বড়ো সওদাগর হবে। ভবিষ্যৎ জীবনে নানা স্থানে নানান দেশে ঘুরে বেড়িয়ে সে নানান রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবে। এই চেনা জগৎ ছাড়িয়ে বাইরের ডাক তার কানে তাই অনবরত ধ্বনিত হচ্ছে। অপুর বিশ্বাস ছিল একটু বড়ো হলেই তার এই রঙিন কল্পনা বাস্তবে পরিণত হবে।

আরো পড়ুন

বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse

অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse

বনভোজনের ব্যাপার প্রশ্ন উত্তর | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় | Bonbhojoner Bapar Question Answer | Class 8 | Wbbse

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment