উনবিংশ শতককে সভাসমিতির যুগ’ বলা হয় কেন? 4 Marks/Class 10
উত্তর:–
ভূমিকা : পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে উনিশ শতকে বাংলা তথা গােটা ভারতে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ও বিকাশের ফলে বেশ কিছু রাজনৈতিক সভা ও সমিতি গড়ে ওঠে। তাই কেমব্রিজ-এর ঐতিহাসিক ড. অনিল শীল উনিশ শতককে ‘সভাসমিতির যুগ’ (Age of Association) বলে উল্লেখ করেছেন।
উক্ত সময়কালের সভাসমিতি : উনিশ শতকে যেসব সভাসমিতি গড়ে উঠেছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল—বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা (১৮৩৬ খ্রি.), জমিদার সভা (১৮৩৮ খ্রি.) ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সােসাইটি (১৮৩৯ খ্রি.), বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সােসাইটি (১৮৪৩ খ্রি.), ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন (১৮৫১ খ্রি:), হিন্দুমেলা (১৮৬৭ খ্রি.), ইন্ডিয়ান লিগ (১৮৭৫), ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন (১৮৭৬ খ্রি.) প্রভৃতি।
সভাসমিতির বৈশিষ্ট্য : উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতে গড়ে ওঠা এই সভাসমিতির বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল—
প্রথমত, বাংলাতেই প্রথম সভাসমিতি গড়ে ওঠে এবং পরে বাংলার অনুকরণে ভারতের অন্যান্য স্থানে তা গড়ে ওঠে।
দ্বিতীয়ত, এগুলি সবই ছিল উচ্চবিত্ত ও অভিজাতকেন্দ্রিক এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্বারা পরিচালিত হত। একারণেই এগুলিতে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ছিল উপেক্ষিত।
তৃতীয়ত, এগুলি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল গােষ্ঠী স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখা এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে ভারতীয়দের দাবিদাওয়া পূরণের চেষ্টা করা।
গুরুত্ব : এভাবে জনমত প্রকাশের জন্য গঠিত সভাসমিতিগুলি দেশের স্বার্থরক্ষা এবং সরকারের অত্যাচার ও শােষণের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে, জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসারে ও ব্রিটিশ-বিরােধী জনমত গড়ে তােলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকানিয়েছিল। সভাসমিতির চূড়ান্ত পরিণতি ছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা।
উপসংহার : ঐতিহাসিক অনিল শীল তাঁর The Emergence of Indian Nationalism’ গ্রন্থে লিখেছেন, সমিতির মাধ্যমেই উনবিংশ শতাব্দীর ভারত আধুনিক রাজনীতির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন” (Associations brought 19th century Indian across the threshold of modern politics’) l তবে সমালােচকদের মতে, এই সমিতিগুলিকে গণতান্ত্রিক চরিত্র দিতে ক্ষমতাবান উচ্চবিত্ত ও জমিদার শ্রেণি আগ্রহী ছিলেন না।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
your Answer it up to point. Very Good..