প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ছাত্ৰসমাজ
ভূমিকা:-
“প্রকৃতি রহস্যময়ী, নাই তার কূল,
মানুষ তাহার হাতে খেলার পুতুল।”
প্রকৃতি অনিয়ন্ত্রিত এক মহাশক্তি। সে কখন-যে রুষ্ট হয় কেউ বলতে পারে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনিবার্য ও আকস্মিক ঘটনা। এর জন্য সবসময় পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা অব্যাহত। প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলার মধ্য থেকেই নতুন সৃষ্টি হয়েছে। এইভাবে যুগের-পর-যুগ ধরে এই পৃথিবী এগিয়ে চলেছে।
দুর্যোগের প্রকারভেদ:- প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভিন্ন রকম– ভূমিকম্প, বন্যা, ঝড়, দাবানল ইত্যাদি। এসব এতই আকস্মিক ও অনিবার্য যে এগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। তবে তাৎক্ষণিক উদ্ধারকার্য ও স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলি সদর্থক ভূমিকা নিতে পারে। এই কাজে ছাত্রছাত্রীরাও উল্লেখযােগ্য অংশ নিতে পারে।
ভূমিকম্পের মােকাবিলায় ছাত্রসমাজ:- ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক উদ্ধারকার্যে প্রশাসন, সামরিক বাহিনী এগিয়ে আসে। তাদের কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে ছাত্রছাত্রীরা। অবশ্য এই কাজে সর্বাগ্রে সরকারি প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিই এগিয়ে আসে। তারপর তাদের সাহায্য করার জন্য প্রয়ােজন হয় ছাত্রছাত্রীদের। স্থানীয় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নিজের এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটলে বিপদগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। দুর্গতদের অস্থায়ী চিকিৎসা শিবিরে নিয়ে যাওয়া থেকে তাদের জন্য ওষুধের ব্যবস্থা যেমন করতে হবে, তেমনি ব্যবস্থা করতে হবে পথ্য ও আহারের।
বন্যার মােকাবিলায় ছাত্রসমাজ:- আমাদের এই বানভাসি দেশে বন্যার প্রকোপ খুবই বেশি। চারদিকে দেখা দেয় বন্যার তাণ্ডব। মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে যায়। জলের তলায় তলিয়ে যায় কত-না জীবন্ত মানুষ। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের মােকাবিলায় সকলকে এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের ছাত্রসমাজ যদি এগিয়ে না-আসে, তা হলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না।
ছাত্রসমাজের কর্তব্য-উপসংহার:- আমাদের এই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভাব নেই। আমরা দেখছি কোথাও খনির ধসে মানুষ সমাধি লাভ করছে মাটির নীচে, আবার কোথাও-বা আকস্মিক ‘সুনামি’-তে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়ে যাচ্ছে। একের-পর-এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এইসব দুর্যোগে মানুষ বড়াে অসহায়। নিশ্চিত মৃত্যুকে মেনে নেওয়া ছাড়া তখন যেন আর কোনাে উপায় থাকে না। কিন্তু ভুললে চলবে না, ওই অবস্থা থেকে মানুষই পারে মানুষকে বাঁচাতে এবং ওই মানুষদের ভিতর ছাত্রসমাজের ভূমিকা সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়ে। বলা বাহুল্য, ছাত্রসমাজ এসব কাজে সদা তৎপর। তাদের তরুণ মন এবং অপরিসীম শক্তি বিপন্ন। মানুষকে বিপদ কাটিয়ে সুস্থ ও নিরাপদ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে। তাই ছাত্রসমাজের ওপর আমরা গভীর আশা রাখি।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।