ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।  অথবা, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পের মূল দিক কী? 

ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 
অথবা, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পের মূল দিক কী? 4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা গগনেন্দ্রনাথ ছিলেন একাধারে দক্ষ চিত্রশিল্পী এবং বাংলায় ব্যঙ্গচিত্রের জনক। 

কৃতিত্ব : তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তাঁর ব্যঙ্গচিত্রগুলিকে এক আলাদা মাত্রা দিয়েছিল, যেমন— 

১) স্বদেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ : কুখ্যাত জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি যে ব্যঙ্গচিত্রটি এঁকেছিলেন তা ব্রিটিশ প্রশাসনকে ভীত কম্পিত করেছিল। গগনেন্দ্রনাথের ব্যঙ্গচিত্রগুলিতে, বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রে, তাঁর সূক্ষ্ম অন্তদৃষ্টি, অন্তর্লীন দেশপ্রেম যে-কোনাে শিল্পরসিকের চোখেই ধরা পড়ে। 

২) ঔপনিবেশিক সমাজের সমালােচনা : রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তার ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’-তে গগনেন্দ্রনাথের বহু ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছিলেন। ‘বিরূপ বজ্র’, ‘নবহুল্লোড়’, ‘ব্রাত্মণের একাদশী’, সামান্য জলযােগ’ ছবিতে গগনেন্দ্রনাথ ঔপনিবেশিক সমাজের ভন্ডামির মুখােশ খুলে দিয়েছেন। 

৩) অনুকরণপ্রিয় বাঙালির সমালােচনা : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর শহুরে জীবনের কৃত্রিম সাহেবিয়ানা বা বাঙালি বাবুদের ইংরেজ সংস্কৃতি অনুকরণকে তার ‘সংকর জাতের বাঙালি’, ‘পুচ্ছ পরিবর্তন, চীনা পুতুল’ প্রভৃতি ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে তীব্রভাবে সমালােচনা করেন।

৪) শিল্প সংগঠন : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ভাই অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে যৌথভাবে ইন্ডিয়ান সােসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্ট’ নামক শিল্প সংগঠন স্থাপন করেন।

উপসংহার : এভাবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর সামাজিক সমস্যামূলক, ব্যক্তিবিশেষের কৃতিত্বমূলক ও রাজনৈতিক অনুষঙ্গমূলক ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজ এবং ঔপনিবেশিক রাষ্টের সমালােচনা করেন ও পরােক্ষভাবে জাতীয়তাবাদের প্রসারে সাহায্য করেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment