অবনীন্দ্রনাথের ভারতমাতা -র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

অবনীন্দ্রনাথের ‘ভারতমাতা’-র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : বাংলায় বঙ্গভঙ্গ-বিরােধী আন্দোলনকালে এদেশের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের সঠিক ও শক্তিশালী প্রতীক হিসেবে মাতৃত্বের ধারণাকে ব্যবহার করেই সৃষ্টি হয়েছিল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারতমাতা। 

ভারতমাতার বর্ণনা : ভারতে নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলার জনক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক স্বদেশি আন্দোলন কালে অঙ্কিত ভারতমাতা’ চিত্রটি (১) ধীর, শান্ত, অভয় ও সমৃদ্ধি দায়িনী গৈরিক বসন-ধারিণী এই মূর্তি ছিল মানবী ও দৈবী, পরিচিত ও অতিপ্রাকৃত। (২) মাতৃমূর্তির পটভূমিতে জাপানি ‘ওয়াশ’ পদ্ধতির রঙের প্রলেপে অবনীন্দ্রনাথ ছবিতে খানিকটা অলৌকিক পরিমণ্ডল তৈরি করেছেন। (৩) এক মানবী মূর্তিতে শিল্পী চারটি হাত সংযােজন করে, তাতে দেবত্ব আরােপ করার চেষ্টা করেছেন। (৪) এই দেবীমূর্তির চার হাতে রয়েছে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও ধর্ম— বাঙালির প্রয়ােজনীয় এই চারটি জিনিসের প্রতীক।

তাৎপর্য : ভারতমাতা’ চিত্রটি বিভিন্ন কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, যেমন—

প্রথমত, এই চিত্রের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদকে মাতৃত্বের ধারণার সঙ্গে যুক্ত করা হয়, কারণ গৈরিক বসন পরিহিত চারহাত যুক্ত ভারতমাতা ছিল মানবী ও দৈবী শক্তির বহিঃপ্রকাশ।

দ্বিতীয়ত, এই চিত্রটিতে ভারতমাতার চারহাতে রয়েছে ভারতীয় ঐতিহ্যের চার উপাদান (যথা, ডান হাত দুটিতে যথাক্রমে রয়েছে শ্বেতবস্ত্র ও রুদ্রাক্ষ মালা এবং বাম হাত দুটিতে যথাক্রমে রয়েছে বেদ ও ধানশীষ) যা ভারতীয় জাতীয়তাবাদ সারে বিশেষ ভূমিকা সঞ্চার করেছিল।

তৃতীয়ত, পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলন পরিচালনা কালে অস্ত্রবিহীন ভারতমাতার ছবিকে আন্দোলনকারীরা হাতে ধরে রেখে আন্দোলনের অভিমুখ সূচিত করত।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment