প্রশ্ন – স্বদেশি আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজের কী ভূমিকা ছিল? Class 10 | 8 Marks
উত্তর: ভূমিকা : উনিশ শতকের শেষভাগ থেকেই সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের ভারতের মাটি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা সকলের। মধ্যেই দানা বেঁধে ওঠে। সর্বভারতীয় স্তরে যেমন ছিলেন বালগঙ্গাধর তিলক, অরবিন্দ ঘােষ প্রমুখ তেমনি ভারতের রাজধানী হিসেবে বাংলার ভূমিকাও সেখানে কম ছিল না। পুরুষশাসিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বাংলার নারীরাও এগিয়ে আসেন।
সাহিত্যচর্চা : রবীন্দ্রনাথের ভাগনি সরলাদেবী চৌধুরানি, ১৮৯৭ থেকে ১৮৯৯ পর্যন্ত ভারতী’ পত্রিকা সম্পাদনা করে ছিলেন। ঠাকুরবাড়ির পরিশীলিত ও অভিজাত পরিবেশে তার বাল্য ও কৈশাের অতিবাহিত হয়। ভারতী’ পত্রিকার মাধ্যমে তিনি বাংলার মেয়েদের মনে ইংরেজ বিরােধী প্রতিবাদী চেতনা সৃষ্টি করেন। এর ফলে বাংলার অন্দরমহলে জাতীয়তাবােধ ও সাহসিকতাও জন্ম নেয়। অনুরূপভাবে, স্বদেশি আন্দোলনের অন্যতম পুরােহিত কৃষকুমার মিত্রের কন্যা কুমুদিনী মিত্র তার সুপ্রভাত’ পত্রিকার মাধ্যমে দেশপ্রেমের আদর্শ প্রচার করেন। মীরা দাশগুপ্তা ছিলেন বেণু‘ পত্রিকার সম্পাদিকা, যিনি পরবর্তীকালে বিপ্লবী দলে যােগ দেন।
অন্যান্য কর্মকাণ্ড : স্বদেশি আন্দোলনের সময়ে বাংলার “হলারা রাখিবন্ধন উৎসব, অরন্ধন ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে যােগ দেন। সরলাদেবী সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি লাঠি খেলা, ছােরা খেলা অভৃতি নানারকম শরীরচর্চাতেও উৎসাহ দেন। বিদেশি পণ্য বর্জন। করে স্বদেশি পণ্য বিক্রির প্রয়াসে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার গড়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ পরে “স্বদেশি স্টোর্স’-এ পরিণত হয়। ” প্রদায়ের মধ্যে ক্ষাত্র, তেজ, বীরত্ব, সাহসিকতা ও অত করার জন্য তিনি বীরাষ্টমী ব্রত’ ও ‘প্রতাপাদিত্যবাংলার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করার জন্য। উৎসব’-এর প্রচলন ঘটান।
মূল্যায়ন : লক্ষণীয় যে, বাংলার অভিজাত থেকে সাধারণ ঘরের মহিলারা যেভাবে স্বদেশ ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেভাবে কিন্তু তারা জাতীয় মর্যাদা কখনােই পাননি।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।