আধুনিক ইতিহাসচর্চায় প্রত্যক্ষবাদী ও অ্যানালগােষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা সম্পর্কে আলােচনা করাে। Mark 4 | Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : আধুনিক ইতিহাস রচনা পদ্ধতির প্রধানতম দুটি দিক হল প্রত্যক্ষবাদী ধারা ও অ্যানাল গােষ্ঠীর ইতিহাসচর্চার ধারা।
প্রত্যক্ষবাদী ধারা : বৈজ্ঞানিক নীতির ওপর ভিত্তি করে অতীত ঘটনা ও তথ্যসমূহকে বিশ্লেষণ করে সত্য বা প্রকৃত জ্ঞানকে প্রতিষ্ঠা করার পদ্ধতি প্রত্যক্ষবাদী ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত। লিওপােল্ড ভন র্যাঙ্কে প্রবর্তিত এই ধরনের ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য হল।
১) তথ্য ও নথিভিত্তিক : তথ্য ও নথিপত্রের ভিত্তিতে অতীত যেমন ছিল তেমনভাবেই উপস্থাপিত করে বস্তুনিষ্ঠ পক্ষপাতশূন্য ইতিহাস রচনা করা।
২) তথ্য উপস্থাপন : এই ইতিহাসচর্চায় অতীতের তথ্য উপস্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হয় এবং একারণেই এই ইতিহাসচর্চায় ঐতিহাসিকরা তথ্যকেই ইতিহাস লেখার মূল আধার বলে মনে করেন।
৩) ঐতিহাসিকবর্গ : এই ধরনের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন লিওপােল্ড ভন র্র্যাঙ্কে, জে. বি. বিউরি, লর্ড অ্যাক্টনপ্রমুখ।
অ্যানাল গােষ্ঠী : বিশ শতকে ফ্রান্সে (১৯২৯ খ্রি.) ঐতিহাসিক } মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভর ‘দ্য অ্যানালস’ পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ঘরানার সূচনা করেন তা ‘অ্যানাল স্কুল’ নামে পরিচিত। এই ধরনের ইতিহাসচর্চায়—
প্রথমত, সামাজিক ইতিহাসসহ সার্বিক ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়;
দ্বিতীয়ত, ভৌগােলিক কাঠামাে, আর্থ-সামাজিক পটভূমি, জনসংখ্যাতত্ত্ব, মানসিক প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দান করে ইতিহাস চর্চার সূচনা করা হয়।
তৃতীয়ত, এই গােষ্ঠীর ঐতিহাসিকরা দীর্ঘ সময়ের পরিবর্তে স্বল্প সময় বা যুগের বিশ্লেষণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
উপসংহার : প্রত্যক্ষবাদীদের মতে, ইতিহাস একটি বিজ্ঞান, তার বেশিও নয়, কমও নয়; কিন্তু অ্যানাল গােষ্ঠীর মতে, ইতিহাস হল এক সার্বিক সমন্বিত আলােচনা।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।