অমিত্রাক্ষর ছন্দ কী | অমিত্রাক্ষর ছন্দের বৈশিষ্ট্য গুলি আলােচনা কর।
Ans:
উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা কাব্য ও নাট্যসাহিত্যে প্রথম অমিত্রাক্ষরের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজ কবি মিল্টনের। । এর অনুসরণে কবি মধুসূদন বাংলা সাহিত্যে এই ছন্দের প্রবর্তন করেন। প্রাচীন পয়ার ছন্দে চরণ হয় 14 মাত্রার। আট মাত্রার পরে বসে অর্ধ যতি, আর বাকি ছয় মাত্রার পরে বসে পূর্ণতি। মধুসূদনের অমিত্রাক্ষর অমিল অর্থাৎ অন্ত্যানুপ্রাসহীন। তবে প্রবহমান গতি অমিত্রাক্ষরের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও
1. এই ছন্দে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ই মিল থাকে না। যেমন —
সম্মুখ সময়ে পড়ি, । বীর চূড়ামণি
বীরবাহু চলি যবে । গেলা যমপুরে
কালে, কহ, হে দেবী, । -সেনাপতি পদে
পাঠাইলা রণে পুনঃ । রক্ষ কলনিধি
রাঘবারি?
2. অমিত্রাক্ষর ছন্দে ভাবটি আট বা চৌদ্দমাত্রার সীমা অবলীলাক্রমে লঘন করে চরণের পর চরণে খুশিমতাে প্রবাহিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ একই বলেছেন লাইন ডিঙানাে চাল। অমিত্রাক্ষরের ভঙ্গি পদ্যর মতাে। কিন্তু ব্যবহার গদ্যের চালে। যেমন —
অগ্রসরি রক্ষোরাজ কহিলা কাতরে,
“ছিল আশা,মেঘনাদ,মুদিব অন্তিমে
এ নয়নদ্বয় আমি তােমার সম্মুখে, –
সঁপি রাজ্যভার পুত্র, তােমায় করিব
মহাযাত্রা l কিন্তু বিধি-বুঝিব কেমনে
তাঁর লীলা? ভাঁড়াইলা সে সুখ আমারে!
(মেঘনাদবধ কাব্য)
অমিত্রাক্ষর ছন্দ নির্মাণে মধুসূদন দত্ত বাংলা কাব্যে খােলা হাওয়ার বাতায়ন খুলে দিয়েছেন তাই নয় বাংলা কাব্যের সীমানাকে অনেক দূর প্রসারিত করে দিয়েছেন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।