দশম শ্রেনী (মাধ্যমিক) বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করাে। অথবা, বাংলায় ছাপাখানার সূচনা হয় কীভাবে?

বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করাে।  অথবা, বাংলায় ছাপাখানার সূচনা হয় কীভাবে? 

বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করাে। 
অথবা, বাংলায় ছাপাখানার সূচনা হয় কীভাবে?   4 Marks/Class 10

উত্তর:

১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড রচিত ‘আ গ্রামার অব দি বেঙ্গল ল্যাঙ্গোয়েজ’ গ্রন্থে প্রথম ব্যাপকভাবে বাংলা মুদ্রাক্ষর বা হরফ ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলায় মুদ্রিত বই ও ছাপাখানার উদ্ভব হয়।

প্রেক্ষাপট : বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব আকস্মিক ছিল না, কারণ— 

১) বিক্ষিপ্ত মুদ্রণ : ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দের আগে প্রায় একশাে বছর ধরে বিক্ষিপ্তভাবে বাংলা হরফযুক্ত মুদ্রণের কাজ চলছিল, যেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য ছিল আতানাসিউস কির্স রচিত ‘চায়না’ ইলাস্ট্রেটা’ (১৬৬৭ খ্রি.) ও হ্যালহেড রচিত ‘এ কোড অব জেন্টু লজ’ (১৭৭৬ খ্রি.)। 

২) প্রশাসনিক প্রয়ােজন : ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে বাংলায় প্রত্যক্ষভাবে ইংরেজ শাসনের সূচনা হলে প্রশাসনিক প্রয়ােজনে বাংলা ভাষায় মুদ্রিত আইন বা নির্দেশদানের প্রয়ােজন দেখা দেয়। 

৩) হেস্টিংসের পৃষ্ঠপােষকতা : বাংলার গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলা ভাষায় মুদ্রণের ক্ষেত্রে উৎসাহ দানের জন্য হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থটি নিজ দায়িত্বে সরকারি খরচে প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। 

৪) উইলকিনস্-এর ভূমিকা : বাংলার গভর্নর-জেনারেল হেস্টিংসের অনুরােধে প্রাচ্যভাষার পণ্ডিত চার্লস উইলকিনস্ পঞ্চানন কর্মকারের সহযােগিতায় হ্যালহেড-এর ব্যাকরণ গ্রন্থের বাংলা হরফ বা মুদ্রাক্ষর তৈরি করেন। তাই তিনি ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ নামে পরিচিত। 

উপসংহার : এভাবে বাংলায় আঠারাে শতকের শেষ দিকে মুদ্রণ ব্যবস্থা বা ছাপাখানার উদ্ভব ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। উনিশ শতকে ছাপাখানার বিকাশে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি খ্রিস্টান মিশনারী ও বেসরকারী উদ্যোগের ভূমিকাও ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

1 thought on “বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব কীভাবে হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করাে।  অথবা, বাংলায় ছাপাখানার সূচনা হয় কীভাবে? ”

Leave a Comment

error: Content is protected !!