ভারত ছাড়াে আন্দোলনে ছাত্রসমাজের কী ভূমিকা ছিল

প্রশ্ন – ভারত ছাড়াে আন্দোলনে ছাত্রসমাজের কী ভূমিকা ছিল? ৮ Marks | Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে ক্রিপস্ মিশনের ব্যর্থতার পর আগস্ট মাসে বােম্বাই-এ ভারত ছাড়াে আন্দোলনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই বিক্ষোভ আলো” ছাত্রসমাজও পিছিয়ে থাকেনি। তারা সর্বশক্তি নিয়ে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছিল।

ছাত্রদের ভূমিকা : ভারত ছাড়াে আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে— 

১। ব্যাপক অংশগ্রহণ : এই আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছিল কারণ, কংগ্রেসের অনুসন্ধান এক কমিটির রিপাের্টে বলা হয় যে, এই আন্দোলনে সারা দেশে সব বয়সের এবং সমস্ত শ্রেণির ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেছিল। 

২। ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা : এক্ষেত্রে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, বাংলা, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্র, দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুর ও কোচিনের বিভিন্ন অংশে ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা লক্ষ করা যায়।

৩। ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ : ছাত্ররা এই আন্দোলনপর্বে খাজনা বন্ধ, রেললাইন উপড়ে ফেলা, এবং সেতু, পােস্ট অফিস ও রেল স্টেশন ধ্বংস করার কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। 

৪। ছাত্র-জনতা ঐক্য : দিল্লিতে ছাত্রদের ওপর ইংরেজ সৈন্যরা গুলি চালালে কুদ্ধ ছাত্র জনতা নির্বিচারে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে। দিল্লির এই ঘটনা সারা ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। আমক-কৃষকরাও এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

৫। হেমু কালানি : সেইসঙ্গে চলতে থাকে বেআইনি পত্রপত্রিকা ও লেখা প্রকাশের কাজ। সরকার-বিরােধী নানাধরনের ধ্বংসাত্মক কাজের মধ্যে রেল লাইন অপসারণ করতে গিয়ে সিন্ধু প্রদেশের সুদূরে ফাঁসির দড়িতে আত্মদান করে ১৭ বছরের কিশাের বীর দেশপ্রেমিক হেমু কালানি।। 

৬। অন্যান্য ছাত্র নেতৃত্ব : সিন্ধু প্রদেশে আরও যারা সংগ্রামী ছাত্রদের নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের মধ্যে সােভা জ্ঞানচন্দানি, গােবিন্দ মালহি, নারায়ণ ওয়াধ্বনির নাম উল্লেখ করা যায়। এরা বিভিন্ন সময়ে কঠোর সশ্রম কারাদণ্ড ভােগ করে বা আত্মগােপন করতে বাধ্য হয়।

উপসংহার : সরকারের বর্বর দমননীতির ফলে ১৯৪২-এর। শেষদিকে আন্দোলনে ভাটা পড়ে। কিন্তু এই সময় গান্ধিজি সরকারের নৃশংস অত্যাচারের প্রতিবাদে অনশন শুরু করলে আন্দোলনে জোয়ার আসে। গান্ধিজির ২১ দিনের অনশন নিরাপদেই শেষ হয়। এই সময়েই দেখা দেয় বাংলায় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষ। ছাত্ররা এই বিপদে বাংলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বত্র সেবাকার্যে ঝাপিয়ে পড়ে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment