ভারতের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে আলােচনা করাে

ভারতের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে আলােচনা করাে

উত্তর :

ভারতের উচ্চশিক্ষা

আমাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সর্বশেষ স্তরকে উচ্চশিক্ষার স্তর হিসাবে অভিহিত করা হয়। কোনাে দেশের সামাজিক আশা-আকাঙ্ক্ষার ও সম্ভাবনার প্রতীক হলাে এই উচ্চশিক্ষাস্তর। উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব তার পরিমাণের ওপর নির্ভরশীল নয়, গুরুত্ব তার। গুণগত মানে। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান সমাজের গুণগত মানের প্রতিচ্ছবি।

(ক) উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য : উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ|

1) সমাজের বিভিন্ন জীবিকা উপযােগী দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করাই হবে উচ্চশিক্ষার প্রাথমিক উদ্দেশ্য। 2) উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য হলাে উন্নতমানের বিশেষজ্ঞ তৈরি করা।

3) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনুসন্ধানের স্পৃহা সৃষ্টি করা।

4.শিক্ষার্থীকে আত্মজ্ঞানলাভে সহায়তা করা।

5.মানসিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশসাধন করা। 

6.সামাজিক চেতনা জাগ্রত করা। 

7.শিক্ষার সুযােগ বৃদ্ধি করা। 

8. নিম্নবর্তী শিক্ষাস্তরের নিয়ন্ত্রণ।

উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি অত্যন্ত ব্যাপক এবং বিশেষভাবে ব্যক্তির গুণগত বৈশিষ্ট্য বিকাশের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তবে সামাজিক চাহিদাকে অবহেলা করা হয়নি। সমাজের বিশেষ চাহিদার কথা বিবেচনা করে ব্যক্তিগত গুণাবলি বিকাশের ওপর এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

(খ) উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রম : উচ্চশিক্ষাস্তরের জন্য কোনাে একটি নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম নেই। তার কারণ উচ্চশিক্ষা বহুমুখী।

ভারতের উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রম
ভারতের উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রম

(গ) উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান : উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হলাে—

1. মহাবিদ্যালয় বা কলেজ, 2. বিশ্ববিদ্যালয়, 3. পেশাগত বিষয় শিক্ষাদানের প্রতিষ্ঠান এবং 4. গবেষণাগার।

(ঘ) উচ্চশিক্ষা প্রশাসন : উচ্চশিক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের, যেহেতু মহাবিদ্যালয়গুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। মহাবিদ্যালয়গুলির ম্যানেজিং কমিটি থাকে এবং Teachers Council রয়েছে। এরাই কলেজ পরিচালনা করে থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ই সর্বেসর্বা।

(ঙ) বয়স, সময় এবং শ্রেণি : উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে থাকে। স্নাতক স্তরে শিক্ষার সময়কাল 3 বছর এবং স্নাতকোত্তর স্তরে শিক্ষার সময়কাল 2 বছর এবং ক্লাস শুরু হয় 10:30 A.M থেকে এবং শেষ হয়। 4:30 P.M.-এ

(ঙ) উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সমস্যা : উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা বর্তমান। সমস্যাগুলি নিম্নরূপ| বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বশাসিত এবং মহাবিদ্যালয়গুলি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। ফলে নানা অসুবিধার সৃষ্টি হয়। যেমন— 1. অর্থনৈতিক সমস্যা, 2. কার্যগত সমস্যা, 3. পরীক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা, 4. Social Service-এর ক্ষেত্রে সমস্যা, 5. অনুমােদিত বিদ্যালয়গুলির সমস্যা, 6. গবেষণা কার্যের সমস্যা, 7. শিক্ষাগত অসুবিধা এবং অবশেষে, 8 ছাত্রভর্তির সমস্যা প্রভৃতি। তবে কিছু মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় Open University রয়েছে। তাদের সঙ্গে এই সমস্ত মহাবিদ্যালয়ের অনেক পার্থক্য আছে। (Open University)-তে সাধারণত ছুটির দিনে ক্লাস হয় এবং বয়সের কোনাে বাধ্যবাধকতা থাকে না।

বর্তমানে ভারতবর্ষে উচ্চশিক্ষার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অনগ্রসর জেলাগুলিতে অনেক মহাবিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে এবং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও দূরবর্তী শিক্ষার প্রসারে ভারতে উচ্চশিক্ষার মান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment