প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের লেখা ঘুরে দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর খুঁজছো? অষ্টম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবইয়ের এই কবিতাটির হাতে কলমে প্রশ্নগুলির সমাধান আমরা এখানে তুলে ধরলাম। আশা করি, এটি তোমাদের সাহায্য করবে।
ঘুরে দাঁড়াও
প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত
ঘুরে দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর
১.১ প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত কবিতা পত্রিকাটির নাম কী?
উত্তর: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সম্পাদিত কবিতা পত্রিকাটির নাম, ‘অলিন্দ’।
১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম, ‘এক ঋতু’ ও ‘নিজস্ব ঘুড়ির প্রতি’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
২.১ কবিতায় কবি কোন আহ্বান জানিয়েছেন?
উত্তর: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত রচিত ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতায় কবি ক্রমাগত ভয় আর আপস করে চলতে গিয়ে নিজেদের অবস্থান হারাতে বসা মানুষদের ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগে কবি চারপাশের একঘেয়ে জগতটাকে বদলে দিয়ে প্রকৃতিকে আরও সবুজ, সতেজ, স্বাস্থ্যকর করে তুলতে সকলকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
২.২ ‘ছোট্ট একটা তুক করে বাইরেটা পালটে দাও -‘— ‘বাইরেটায় কী ধরনের বদল ঘটবে বলে কবি আশা করেন? সেই কাঙ্ক্ষিত বদল ঘটলে জীবন কীভাবে অন্যরকম হবে বলে কবি মনে করেন? কেমন বদল ঘটবে?
উত্তর: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত রচিত ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত নির্দেশ অনুযায়ী কবি যে যে বদল ঘটবে বলে আশা করেন সেগুলি হল, সাইকেল রিকশাগুলো শিস দিয়ে চলে যাবে বনে বনান্তরে। কাদা-ভর্তি রাস্তা উঠে পড়বে ছায়াপথের কাছাকাছি। গাছগুলো নদীর জলে স্নান করে আসবে। সা-রা-রা রা করে জেগে উঠবে উপান্তের শহরতলি।
বদলের ফলস্বরূপ পরিবর্তন: কাঙ্ক্ষিত বদল ঘটলে নাগরিক জীবনের একঘেয়েমিতা দূর হবে। প্রকৃতি আরও সবুজ, স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। নাগরিক জীবনের গ্লানি দূর হয়ে শহরতলি গানের সুরের মতো আনন্দে জেগে উঠবে। সমাজের অনেক পরিবর্তন ঘটবে।
২.৩ ‘সরতে সরতে সরতে তুমি আর কোথায় সরবে?’ – কবি কোথা থেকে এই ‘সরণ’ লক্ষ করেছেন? এক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া পরামর্শটি কী?
কোথা থেকে সরণ?: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত রচিত ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতা থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিতে কবি মানুষের দৃঢ় জীবন চেতনা থেকে সরণ লক্ষ করেছেন। সমস্যার সাথে ক্রমাগত আপস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার শক্তি হারাতে হারাতে মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে সরে যাচ্ছে। জীবনের সমস্যাগুলোর সম্মুখীন না হয়ে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করে ‘সরণ’ বা ‘সরে যাওয়া’ বা পিছু হটে যাওয়ার কথাই কবি এখানে বলেছেন।
কবির পরামর্শ: সমস্যা থেকে সরে যেতে থাকলে ক্ষণিকের স্বস্তি পাওয়া যায় কিন্তু চিরন্তন মুক্তি পাওয়া যায় না। তাই কবি মানুষকে আপসের মানসিকতা বদলে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। কবির মতে সরে যেতে থাকলে একদিন বিন্দুর মতো মিলিয়ে যেতে হবে। তাই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগে সমাজ বদলের প্রচেষ্টায় সকলকে সামিল হতে হবে। পিছু না হটে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিকে নিজের আয়ত্তে আনতে হবে।
২.৪ ‘এবার ঘুরে দাঁড়াও।’ আর ‘এখন ঘুরে দাঁড়াও।’ — পঙক্তি দুটিতে ‘এবার’ আর ‘এখন’ শব্দদুটির প্রয়োগ সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত রচিত ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতায় তৃতীয় পঙক্তি ‘এবার ঘুরে দাঁড়াও’ ও শেষ পঙক্তি ‘এখন ঘুরে দাঁড়াও’ এর ভাব ও অর্থগত দিক থেকে যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে। ‘এবার ঘুরে দাঁড়াও’ পঙক্তিতে কবি বোঝাতে চেয়েছেন ক্রমাগত সরতে সরতে মানুষ এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে আর সরার জায়গা নেই। এখন নিজের অবস্থানও যেন সংকটের মুখে। সুতরাং এবার ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ঘুরে দাঁড়ানোর এই অপরিহার্যতাকে বোঝাতেই কবি ‘এবার’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
‘এখন ঘুরে দাঁড়াও’ – পঙক্তির ‘এখন’ শব্দের দ্বারা কবি বোঝাতে চেয়েছেন ‘বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাওয়ার’ বা শেষ পরিণতির পূর্ব মুহূর্তকে। প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে সরতে সরতে মানুষ একদিন মৃত্যুর মুখে পতিত হবে। তাই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ‘এখন’ শব্দের দ্বারা সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তের সেই স্বল্প সময়কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ এখনই ঘুরে দাঁড়াতে হবে, নাহলে সবকিছু বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে।
৩. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো:
৩.১ তুমি আর কোথায় সরবে? (প্রশ্ন পরিহার করো)
উত্তর: তোমার আর সরার জায়গা নেই।
৩.২ এবার ঘুরে দাঁড়াও। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর: এবার ঘুরে না দাঁড়ালে চলবে না।
৩.৩ তুমি যদি বদলে দিতে না পারো তাহলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে। (সরল বাক্যে)
উত্তর: বদলে দিতে না পারলে তোমায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে।
৩.৪ নইলে সরতে সরতে সরতে তুমি বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: নইলে সরতে সরতে কি তুমি বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে না?
৩.৫ গাছগুলো নদীর জলে স্নান করে আসুক। (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর: গাছগুলো নদীর জলে স্নান করুক।
৪. ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো:
বনান্তর, ছায়াপথ, উপান্ত, সাইকেল-রিকশো
উত্তর:
বনান্তর (অন্য বন) – নিত্য সমাস
ছায়াপথ (ছায়া অধ্যুষিত পথ) – মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস।
উপান্ত (অন্তের সমীপে) – অব্যয়ীভাব সমাস।
সাইকেল-রিকশো (যা সাইকেল তাই রিকশো) – সাধারণ কর্মধারয় সমাস।
আরো পড়ুন
বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।