দলিত রাজনীতির উদ্ভবের কারণসমূহ বিশ্লেষণ করাে।

দলিত রাজনীতির উদ্ভবের কারণসমূহ বিশ্লেষণ করাে।  4 Marks/Class 10

উত্তর:-

ভূমিকা : বিশ শতকে ভারতীয় রাজনীতিতে সম্প্রদায়গত ও জাতিগত বিষয়টি প্রাধান্য লাভ করলে হিন্দু সমাজে বর্ণপ্রথা ও বহুজাতি প্রথাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আর্থসামাজিক অধিকারহীন দলিত সম্প্রদায়ও রাজনীতির বিষয় হয়ে ওঠে।

উদ্ভবের কারণ : দলিত রাজনীতির উদ্ভবের কারণগুলি হল— 

১. ব্রাত্মণ আধিপত্য : মহারাষ্ট্রের মালি জাতির বিখ্যাত নেতা জ্যোতিবা ফুলে ১৮৭০-এর দশকে প্রচার করেন যে, ক্ষমতা ও সুযােগসুবিধার অধিকারী ব্রাত্মণদের আধিপত্যই হল শূদ্রবর্ণ তথা দলিতদের দুর্দশার মূল কারণ। 

২. ঔপনিবেশিক শাসন : ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে হিন্দুসমাজের বর্ণব্যবস্থাকে মান্যতা দেওয়া হয়। ১৮৮০-র দশকে জনগণনায় হিন্দুসমাজের প্রচলিত জাতিবিন্যাসকে নথিভুক্ত করে জাতিগত ক্রমােচ্চতাকে স্থায়ী করার চেষ্টা করা হলে সেই সময়ের অস্পৃশ্য বা দলিতরা সংঘবদ্ধ হয়ে জাতিগত উন্নয়নের কথা ভাবতে শুরু করে। 

৩. শিক্ষার প্রসার : উনিশ শতকের শেষদিকে খ্রিস্টান মিশনারি ও সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার বিস্তার ঘটলে দলিতদের কেউ কেউ শিক্ষিত হয় এবং নিজ শ্রেণির সংঘবদ্ধতার বিষয় সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। 

৪. দেশীয় রাজ্যগুলির উদ্যোগ : উনিশ শতকের শেষ ও বিশ শতকের শুরুতে মহীশূর ও কোলহাপুর-এর মতাে দেশীয় রাজ্যগুলি অব্রাম্মণ অস্পৃশ্য মানুষের উন্নতির জন্য সরকারি চাকরিক্ষেত্রে জাতিভিত্তিক সংরক্ষণ প্রথা চালু করে। এভাবে দলিত সম্প্রদায়ের মনে স্বাধিকার বােধ জন্মায়।

উপসংহার : উপরােক্ত বিভিন্ন কারণে দলিতরা সংঘবদ্ধ হয়ে উঠতে থাকে এবং বিশ শতকের প্রথমে নিজেদের জন্য আর্থসামাজিক অধিকারসহ রাজনৈতিক অধিকার দাবি করে। প্রথমে মন্টেগু চেমসফোর্ড সংস্কার (১৯১৯ খ্রি.) এবং পরে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা ও পুনা চুক্তির (১৯৩২ খ্রি.) মাধ্যমে দলিত সম্প্রদায় রাজনৈতিক অধিকার লাভ করে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment