উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি বা সমস্যা গুলি উল্লেখ করো | ঐ সমস্যা সমাধানের উপায় লেখো

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি বা সমস্যা গুলি উল্লেখ করো | ঐ সমস্যা সমাধানের উপায় লেখো 5 + 3

উত্তর : 

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি বা সমস্যা : 

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রমকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বলা হয়। এটি +2 শিক্ষাক্রম নামেও পরিচিত। এই শিক্ষার ত্রুটি বা সমস্যাগুলি হল— 

[1] বিদ্যালয়ের অভাব : আমাদের দেশে উচ্চমাধ্যমিক পাঠক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক কম। তাই মাধ্যমিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বহু ছাত্রছাত্রীকে পড়াশােনা ছেড়ে দিতে হয়। 

[2] শিক্ষকের অভাব : অধিকাংশ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপযুক্তসংখ্যক বিষয়-শিক্ষক নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠন ব্যাহত হয়। 

[3] পাঠক্রমের ত্রুটি : আমাদের দেশের উচ্চমাধ্যমিক পাঠক্রমটি মাধ্যমিক পাঠক্রমের সঙ্গে খুব একটা মানানসই নয়। ফলে মাধ্যমিক পাশের পর উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পৌঁছে বহু ছাত্রছাত্রীই ওই পাঠক্রমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। 

[4] বৃত্তিশিক্ষার ঘাটতি : আমাদের দেশের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাক্রমে বৃত্তিশিক্ষার তেমন কোনাে ব্যবস্থা নেই। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বহু ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। 

[5] শিক্ষার জন্য সময়ও খুব কম : উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ক্ৰমটি খাতায়-কলমে দু-বছরের হলেও প্রকৃতপক্ষে ছাত্রছাত্রীরা। 18 থেকে 20 মাস সময় পায়। ফলে পুরাে পাঠ্যসূচি শেষ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। 

[6] অবৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন পদ্ধতি : উচ্চমাধ্যমিক স্তরের মূল্যায়ন পদ্ধতিও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে অনুকূল নয়। ত্রুটিপূর্ণ মূল্যায়নের ফলে বহু শিক্ষার্থীকে অসুবিধায় পড়তে হয়। 

সমস্যা সমাধানের উপায় :

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি বা সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করতে হবে— 

[1] বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা : মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামাের উন্নয়ন ঘটিয়ে সেগুলিকে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে হবে। সেখানে শ্রেণিকক্ষ বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রন্থাগারের উন্নতিসাধন করতে হবে। উপযুক্তসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ােগ করতে হবে। 

[2] পাঠক্রমের উন্নয়ন : মাধ্যমিক এবং মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের পাঠক্রমের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। পাঠক্রমে সমাজ ও ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

[3] পরীক্ষাপদ্ধতির সংস্কারসাধন : বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আমাদের দেশের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।

[4] শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা: উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানের জন্য প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।

[5] বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ঘটানাের ব্যবস্থা : প্রত্যেকটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতে বিজ্ঞান শাখায় পাঠদানের ব্যবস্থা হয় সেই দিকটিও লক্ষ রাখতে হবে। 

[6] পরিচালন ব্যবস্থার উন্নয়ন : উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির পরিচালন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা দূর করে বিদ্যালয়গুলিতে গতি সঞ্চার করতে হবে। শিক্ষার মানােন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment