দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার ও ভারতীয় নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করাে।

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার ও ভারতীয় নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করাে। 4 Marks/Class 10

উত্তর:-

ভূমিকা : দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার ও ভারতীয় নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে— 

১. ব্রিটিশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি : ভারতীয় স্বাধীনতা আইনের একটি ধারায় বলা হয়েছিল যে, দেশীয় রাজ্যগুলির ওপর ব্রিটিশ

সার্বভৌমত্বের অবসান হবে এবং এই রাজ্যগুলি নিজেদের পছন্দমতাে ভারত বা পাকিস্তান ডােমিনিয়নে যােগদানের অধিকার পাবে অথবা স্বাধীন থাকবে। 

২. এটলির দৃষ্টিভঙ্গি : ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’ সংক্রান্ত বিলটি ইংল্যান্ডে আলােচনাকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি ঘোষণা করেছিলেন যে- প্রথমত, ব্রিটিশ সরকার কোনােভাবেই দেশীয় রাজ্যগুলির অস্তিত্ব মেনে নেবে না। দ্বিতীয়ত, ভারত ও পাকিস্তান এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থিত দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়া স্বাভাবিক মনে করে তিনি দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারত অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। 

৩. জাতীয় কংগ্রেসের দৃষ্টিভঙ্গি : ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে ঘােষণা করা হয়েছিল যে, স্বাধীনতার পর ভারতে কোনাে দেশীয় রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব স্বীকার করা হবে না । মহাত্মা গান্ধি দেশীয় রাজ্যের স্বাধীন থাকার ইচ্ছাকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণার সমতুল্য ঘটনা বলে মত প্রকাশ করেন। 

৪. ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্য : ভারতের স্বাধীনতা আইনের অনেক আগে থেকেই ভারতের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহ-সভাপতি জওহরলাল নেহরু ঘােষণা করেন যে, দেশীয় রাজ্যগুলির কাছে দুটি বিকল্প রয়েছে : এক তারা ভারত ইউনিয়নে যােগদান করতে পারে, নতুবা তাদের ভারতের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সঙ্গে সংঘর্ষে যেতে হবে।

উপসংহার : দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্বকে অস্বীকার করে দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতভুক্ত করতে ভারত সরকার ‘দেশীয় রাজ্যদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করে (জুন, ১৯৪৭ খ্রি.)। এই দপ্তরের মন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেলের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শেষপর্যন্ত দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতভুক্ত হয়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment