ইসলামিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি সংক্ষেপে আলােচনা

ইসলামিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি সংক্ষেপে আলােচনা

উত্তর:

ইসলামিক শিক্ষার লক্ষ্য/মুসলিম শিক্ষার লক্ষ্য :

ইসলাম ধর্মকে ভিত্তি করেই মধ্যযুগে ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থা বা মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এই শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীর নৈতিক ও জাগতিক জীবনের মানােন্নয়ন ঘটানাে। পবিত্র কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী চরিত্রবান, সৎ, ধার্মিক মানুষ গড়ে তোেলাই ছিল মুসলিম শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য। এখানে মুসলমান বা ইসলামিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি সবিস্তারে আলােচনা করা হল

(1) ধর্মীয় কর্তব্য পালনইসলামিক শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হল ধর্মীয় কর্তব্য পালন। কোরানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক মুসলমানের অন্যতম পবিত্র কর্তব্য হল ইসলাম ধর্মকে বিশ্বমাঝে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা।
(2) জ্ঞানের বিকাশসাধনইসলামিক শিক্ষার অপর একটি লক্ষ্য হল ধর্মীয় চেতনায় মনকে সমৃদ্ধ করে জ্ঞানের প্রসারঘটানাে। হজরত মহম্মদ বলেছেন—“জ্ঞান হল অমৃত’ এবং অমৃতই মানুষকে মুক্তি দিতে পারে। জ্ঞানই ব্যক্তিকে সত্য-মিথ্যা, ধর্ম-অধর্ম বিচারে সক্ষমতা দান করে।
(3) চরিত্রবান মানুষ গঠনসব যুগেই শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে চরিত্রবান মানুষ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থাও এর ব্যতিক্রম নয়। ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় চরিত্রবান, ধার্মিক মানুষ গড়ে তােলাকে শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
(4) কুসংস্কার দূরীকরণইসলামিক শিক্ষার অপর একটি লক্ষ্য হল। সাধারণ মানুষের মন থেকে কুসংস্কার দূর করা। যুক্তিবাদের মাধ্যমে প্রতিটি বিষয়কে ব্যাখ্যা| করা। আধ্যাত্মিক চিন্তার গভীরে প্রবেশের আগে প্রতিটি মানুষকে কুসংস্কারমুক্ত হতে হবে।
(5) জীবনের মান উন্নয়নইসলামিক শিক্ষার আর-একটি উল্লেখযােগ্য লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর নৈতিক ও জাগতিক জীবনের মান উন্নয়ন করা। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ জীবনকে সঠিকভাবে গড়ে তােলা। এর জন্য বৈষয়িক উন্নতি ঘটানাের প্রতিও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
(6) মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যবােধ জাগ্রত করাইসলামিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যবােধ জাগ্রত করা। কোরান ও হাদিস-এ বর্ণিত সামাজিক রীতিনীতি, ধ্যানধারণা অনুসরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখে সেই লক্ষ্যটিও ইসলামিক শিক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 
(7) সামরিক দক্ষতা  অর্জনে সহায়তাইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামরিক দক্ষতা অর্জনের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হত। ইসলামিক শিক্ষার অন্য একটি লক্ষ্য ছিল হিন্দু রাজাদের ওপর কর্তৃত্ব ফলানাের জন্য উপযুক্ত সামরিক দক্ষতা অর্জন করা।
(8) রাজনৈতিক সমর্থন লক্ষ্য লাভ করাইসলামিক শিক্ষার অন্য একটি ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সমর্থন বিষয়ে মতাদর্শ গড়ে তােলা। এই শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামীয় নীতিবাদকে ভিত্তি করে শিক্ষার্থীরা প্রাচীন নিয়মকানুন, সামাজিক ও রাজনৈতিক রীতিনীতি মেনে চললে, ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সমর্থনের মনােভাব গড়ে উঠবে। ইসলামিক শিক্ষানীতি প্রণয়নকারীরা এমনটাই মনে করতেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment