নীলবিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলােচনা করাে। 8 Marks/Class 10
উত্তর:–
ভূমিকা : উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের অমানুষিক অত্যাচার ও নির্মম শােষণের বিরুদ্ধে নীলচাষিদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনকে নীলবিদ্রোহ (১৮৫৯-১৮৬০ খ্রি.) বলা হয়।
নীলবিদ্রোহের কারণ :-
১) নীলচাষের পদ্ধতি : নীলকররা গরিব চাষিদের নিরক্ষরতার সুযােগ নিয়ে কম টাকা দাদন দিয়ে বেশি টাকার চুক্তি করে তাদের দিয়ে নীলচাষ করতে বাধ্য করত।
২) নীলকর সাহেবদের অত্যাচার : কৃষকদের প্রতিপক্ষ নীলকরদের অত্যাচার, লুণ্ঠন, শােষণ, দৌরাত্ম্য, ব্যভিচার, লাম্পট্য ছিল এই বিদ্রোহের অন্যতম কারণ।
৩) নীলকরদের সরকারি সমর্থন : ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে শ্বেতাঙ্গদের জমি কেনার অধিকার, তারও আগে সরকারের দাদনি প্রথাকে সমর্থন, একাদশ আইনে দাদন গ্রহণকারী কৃষকদের নীলচাষ করতে বাধ্য করা প্রভৃতি কারণে তীব্র জনরােষের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
৪) দস্তুরি প্রথা ও নীলের কম দাম প্রদান : নীলের দাম দেওয়ার সময় দাদনের কিস্তি ও সুদের টাকা নীলকররা কেটে রাখত, যাকে বলা হত দস্তুরি প্রথা। রায়তদের উৎপাদিত নীলের দাম দেওয়া হত ২ টাকা ৮ আনা অথচ সেই নীলের বাজার দর ছিল ১০ টাকা অর্থাৎ প্রতি কেজি নীলে কৃষকদের ৭ টাকা ৮ আনা ঠকানাে হত।
৫) পঞম আইন : ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড বেন্টিঙ্ক প্রবর্তিত পঞম আইনে বলা হয় দাদন নিয়ে নীলচাষ না করলে তা বেআইনি বলে গণ্য হবে এবং অপরাধীর জেল হবে।
৬) পক্ষপাতদুষ্ট বিচারব্যবস্থা : নীলকরদের বিরুদ্ধে সরকারি আদালতে নালিশ করলেও শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিস্ট্রেটরা স্ব-জাতীয় শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের প্রতি পক্ষপাত দেখাতেন। মফস্সলে ভারতীয় বিচারকরা শ্বেতাঙ্গ নীলকরদের বিচার করতে পারত না।
এ ছাড়াও নীলকরদের নিষ্ঠুরতা, তাদের তৈরি লাঠিয়াল, পাইক, বরকন্দাজ বাহিনীর অত্যাচার, নীলচাষিদের বন্দি করে খাদ্য-জল বন্ধ করে দেওয়া এই বিদ্রোহের অন্যতম কারণ।
নীল বিদ্রোহের ফলাফল : নীল বিদ্রোহের ফলে—
১) নীল কমিশন গঠন : ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে নীল কমিশন গঠিত হয়। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে অষ্টম আইন দ্বারা ‘নীলচুক্তি আইন’ রদ করে নীলচাষকে চাষিদের ইচ্ছাধীন করা হলে নীলকররা নীলচাষ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। কৃষকদের জয় প্রতিষ্ঠা হয়, বাঙালি জাতির মনােবল বৃদ্ধি পায়, পরােক্ষভাবে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটায়।
২) মহাজনদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : Blair Kling তাঁর Blue Mutiny’ গ্রন্থে দেখান যে, নীলকর সাহেবদের পতনের ফলে নিম্নবঙ্গের কর্তৃত্ব সুদখাের মহাজনদের হাতে চলে যায়।
৩) কৃষক ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ঐক্য : নীল বিদ্রোহের ফলেই বাংলায় কৃষক, জমিদার, শিক্ষিত মধ্যবিত্র মন প্রতিষ্ঠিত হয়।
উপসংহার : ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির শাসনের অবসানের পর নীলবিদ্রোহ ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে প্রথম সংঘবদ্ধ গণবিদ্রোহ। অমৃতবাজার পত্রিকায় শিশির কুমার ঘােষ লেখেন যে, নীলবিদ্রোহই সর্বপ্রথম ভারতবাসীকে সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রয়ােজনীয়তা শিখিয়েছিল।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
Thanks
🍁
Thanks . It is very helpful
Thanks
17 ,11,2023,at6.38 you madhyamik suggestions এইটা আসবে Twenty 2024
Thanks
Thank you so much
Full marks dibe to ..?
Yes
Yes
Wow
Bro you are awesome
Darun
Khub valo
Thanks very very thanks❤❤❤❤❤