শ্রেণিকক্ষের আচরণগত সমস্যা হিসেবে মিথ্যা কথা বলা ও চুরি করার প্রতিকারের উপায়সমূহ লেখাে।Class 12 | Education (ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা) 4 Marks
উত্তর
মিথ্যা কথা বলা ও চুরি করার প্রতিকারের উপায়সমূহ ভীর মিথ্যা কথা বলা কিংবা চুরি করার প্রবৃত্তির যদি শুরুতেই প্রতিকার। না যায়, তবে তার পরবর্তী জীবনে তা সমাজবিরােধী আচরণে পর্যবসিত হয়।
মিথ্যা বলার প্রতিকারের উপায়
কবর আশ্রয় গ্রহণ করলে সাময়িকভাবে শিশুর চাহিদার পূরণ হলেও আনন্দের স্থায়ী সমাধান হয় না | উপরন্তু সাময়িক চাহিদাপূরণের জন্য নার মিথ্যা বলার মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে মিথ্যা বলা তার কাকিত্বের একটা স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে| শিশুর বিশ্বাসযােগ্যতা হ্রাস পায়, আগসংগতির মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং তার ব্যক্তিগত চরিত্রের অবনতি ঘটে। সে ক্রমশ সমাজবিরােধী আচরণে লিপ্ত হয়। এই কারণে প্রথম থেকেই। মিথ্যা কথা বলার প্রতিকারের উপায় গ্রহণ করা আবশ্যক। এর জন্য। প্রয়ােজন হল—
[1] মৌলিক চাহিদাপূরণ : যতদূর সম্ভব শিশুর মৌলিক চাহিদাপূরণ করা |
[2] গুরুজন ব্যক্তির মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকা : শিক্ষক ও বাবা-মা যেন শিশুর সম্মুখে মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকেন সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
[3] মার্জনা করা: অপরাধ স্বীকার করলে মার্জনা করা।
[4] দলগত কাজ : শিক্ষার্থীর সামর্থ্য অনুযায়ী দলগত কাজের মধ্য দিয়ে শিশুর আত্মস্বীকৃতির চাহিদাপূরণ করা।
[5] পরামর্শদান: ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শদানের ব্যবস্থা করা প্রয়ােজন।
[6] মনােচিকিৎসকের সাহায্যগ্রহণ : পরিবেশ পরিবর্তন এবং মনােচিকিৎসকের সাহায্যগ্রহণ করা। চুরি করার প্রতিকারের উপায় । শিশুর চৌর্য আচরণ যত শীঘ্র সম্ভব প্রতিকার করা প্রয়ােজন। অন্যথায় শিশুর এই ধরনের আচরণ অভ্যাসে রূপ নিতে পারে, যার ফলে পরবর্তী কালে সে দাগী চোর বা অন্যান্য অপরাধমূলক আচরণের শিকার হয়। শিশুর এইজাতীয় আচরণ প্রতিকারের জন্য করণীয় হল—
[1] চুরির কারণ অনুসন্ধান: কী কারণে শিশুরা এই ধরনের আচরণে লিপ্ত হয়েছে, তা জানা প্রয়ােজন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়ােজন।
[2] বাবা-মায়ের সহানুভূতি : শিক্ষক ও বাবা-মা শিশুর প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন এবং নীতিবােধ গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবেন।
[3] নিয়ন্ত্রিতভাবে চাহিদাপুরণ : বাবা-মা সাধ্যমতাে শিশুর চাহিদাপূরণ করবেন, তবে শিশুর চাহিদা মাত্র সব কিছু সরবরাহ করবেন না। চাহিদা যে সবসময় পূরণ হয় না, সেই পরিস্থিতির সঙ্গে শিশুকে সচেতন করা প্রয়ােজন, অন্যথায় শিশু চাহিদামতাে কিছু না পেলেই চুরি করতে প্রবৃত্ত হবে।
[4] সঠিক যৌন শিক্ষা : বিদ্যালয়ে যৌন শিক্ষার ব্যবস্থা, অবসর বিনােদনের সুযােগ প্রভৃতি এইজাতীয় সমস্যামূলক আচরণ দূর করতে সহায়ক হবে।
[5] পরামর্শদান: শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শদানের ব্যবস্থা করা প্রয়ােজন।
[6] মনােচিকিৎসকের সাহায্য: সমস্যার গুরুত্ব অনুযায়ী মনােচিকিৎসকের সাহায্য গ্রহণ করা উচিত। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, কোনােরকম প্রয়ােজন ছাড়াও কোনাে কোনাে ব্যক্তি চুরি করে। যেমন— উচ্চবিত্ত ঘরের কোনাে শিক্ষার্থী একাধিক ঘড়ি থাকা সত্ত্বেও বন্ধুর বাড়ি গিয়ে ঘড়ি চুরি করে। এই ধরনের চুরির অভ্যাসকে ‘ক্লিপ্টোম্যানিয়া (Clyptomania) বলে। এর প্রতিকারের জন্য মনােচিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া একান্ত অপরিহার্য।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।