কিশোর কিশোরী দের ব্যক্তিগত অভিযোজনে মাধ্যমিক শিক্ষার ভূমিকা
অথবা, কিশাের-কিশােরীদের ব্যক্তিগত অভিযােজনে মাধ্যমিক শিক্ষা কীভাবে সাহায্য করে?
অথবা, কৈশােরের ছেলেমেয়েদের যথাযথ বিকাশে মাধ্যমিক শিক্ষার ভূমিকা আলােচনা করাে।
উত্তর :
কিশোর কিশোরী দের ব্যক্তিগত অভিযোজনে মাধ্যমিক শিক্ষার ভূমিকা
কৈশােরকাল হল মানবজীবন বিকাশের একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ স্তর। এই স্তরের শিক্ষা হল মাধ্যমিক শিক্ষা। মানবজীবনের বিকাশগত ও শিক্ষাগত উভয়দিক থেকেই এই শিক্ষাকালটি মধ্যম স্তর হিসেবে বিবেচিত হয়। এই স্তরটি কিশাের কিশােরীদের ব্যক্তিগত অভিযােজনে নানানভাবে সাহায্য করে। নীচে সে-বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করা হল—
[1] সার্বিক বিকাশে সহায়তা : মাধ্যমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা হয়। এর জন্য ভাষা, বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস, ভূগােল প্রভৃতি বিষয়ে অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়।
[2] গণতান্ত্রিক নাগরিকতার বিকাশে সহায়তা : মাধ্যমিক পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন বিষয় অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সু-অভ্যাস, সুমনােভাব প্রভৃতি গড়ে তােলা হয়। এ ছাড়া তাদেরকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
[3] ব্যক্তিসত্তার বিকাশে সহায়তা : মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল ক্ষমতার বিকাশে বিশেষভাবে সাহায্য করে। কর্মশিক্ষার বিভিন্ন ধরনের কার্যাবলি এবং নানান ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ও বিভিন্ন বিষয়ের প্রকল্পের কাজগুলি নিজ হাতে সম্পাদন করার ফলে শিক্ষার্থীর সৃজনাত্মক গুণাবলি ও ব্যক্তিসত্তার বিকাশ ত্বরান্বিত হয়।
[4] যৌন বিষয়ে কৌতুহল নিবারণে সহায়তা : মাধ্যমিক স্তরের জীবনবিজ্ঞানের পাঠক্রমে মানুষের বিভিন্ন তন্ত্র সম্পর্কে আলােচনা করা হয়। সেখানে জননতন্ত্র আলােচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু কিছু যৌন বিষয়ে কৌতূহল নিবারণের সুযােগ ঘটে। এ ছাড়া জীবনশৈলীর শিক্ষা থেকে তারা এ বিষয়ে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারে।
[5] স্বাধীনতার চাহিদা পূরণে সহায়তা : মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীনভাবে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদনের সুযােগ করে দেয়। ফলে এই শিক্ষা স্বাধীনতার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তােলে।
[6] প্রাক্ষোভিক বিকাশে সহায়তা: মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের দ্বারা বিভিন্ন বিষয় অনুশীলনে সাহায্য করে। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রাক্ষোভিক বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। বিদ্যালয়ে আয়ােজিত বিভিন্ন ধরনের খেলা, সাংস্কৃতিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের প্রাক্ষোভিক বিকাশে সহায়ক হয়।
[7] নান্দনিকতার বিকাশে সহায়তা : বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন ধরনের কার্যাবলি যেমন— ছবি আঁকা, শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখা, কাগজ কেটে নানান ধরনের সামগ্রী তৈরি করা ইত্যাদির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নান্দনিকতার বিকাশ ঘটে। অর্থাৎ মাধ্যমিক শিক্ষা ছাত্রছাত্রীদের নান্দনিকতার বিকাশে অংশ নেয়।
[8] জাতীয় সংহতি রক্ষার্থে সহায়তা : মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমের বিভিন্ন বিষয়গুলি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জাতীয় সংহতির বােধ জাগ্রত করে। যে-কোনাে দেশের প্রগতি ও উন্নয়নের জন্য জাতীয় সংহতি অপরিহার্য।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।