Class 8 Class 8 Bengali পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর Class 8 | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Pallisamaj Question Answer | Wbbse

পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর Class 8 | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Pallisamaj Question Answer | Wbbse

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর Class 8 নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পল্লীসমাজ উপন্যাসের অংশবিশেষ রয়েছে। পাঠ্যের শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

পল্লীসমাজ

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়


হাতে কলমে

১.১ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো।
উত্তর:- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম, ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’ । 

১.২ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছোটো গল্পের নাম লেখো।
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দুটি ছোটো গল্পের নাম, লালু ও মহেশ।

২.১ গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ কী করছিল?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ জমিদারি হিসাবপত্র দেখছিল।

২.২ গ্রামের একমাত্র ভরসা কী ছিল?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে গ্রামের একমাত্র ভরসা ছিল একশো বিঘার মাঠ। যে মাঠের ধান বৃষ্টির জলে ডুবে গিয়েছিল।

২.৩ ‘বোধ করি এই কথাই হইতেছিল’— কোন কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে বৃষ্টির জলে গ্রামের চাষিদের একমাত্র ভরসা একশো বিঘার মাঠ ডুবে যায়। কৃষকরা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রমেশের কাছে এসে জল বার করে দেওয়ার আবেদন করে। রমেশ তাদের কথা শুনে যখন বাড়ি পৌঁছায় তখন তার দাদা বেণী তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে তামাক খাচ্ছিলেন পাশে হালদার মহাশয় ও ছিলেন। রমেশ ভেবেছিল তারা বুঝি অসহায় কৃষকদের জমি বৃষ্টির জলে ডুবে যাওয়া ও তার প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করছে। এখানে সেই কথার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

২.৪ রমা আকবরকে কোথায় পাহারা দেবার জন্য পাঠিয়েছিল?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে রমা আকবরকে একশো বিঘে জমির দক্ষিণ ধারের ঘোষাল ও মুখুজ্জেদের বাঁধ পাহারা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল।

২.৫ ‘পারবি নে কেন?’ — উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কোন কাজটি করতে পারবে না ?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত উক্তির উদ্দিষ্ট বক্তা লাঠিয়াল আকবর। সে যে রমেশের হাতে মার খেয়েছে সেকথা থানায় গিয়ে জানাতে পারবে না।

৩.১ কুড়িজন কৃষক রমেশের কাছে এসে কেঁদে পড়ল কেন ?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে প্রবল বৃষ্টিতে একশো বিঘের মাঠ জলে ডুবে যায়। এই একশো বিঘের মাঠ গ্রামের ভরসা সমস্ত চাষিদেরই কিছু কিছু জমি সেখানে আছে। জমে থাকা জল বাইরে না বের করলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে। মাঠের দক্ষিণধারে ঘোষাল ও মুখুজ্জেদের বাঁধ কাটিয়ে দিলে জমা জল বাইরে বেরোতে পারে। তাই সারাদিন কৃষকরা জমিদার বেণীবাবুর কাছে অনেক কাকুতি মিনতি করে কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তাই কৃষকরা উপায় না পেয়ে দয়ালু মানুষ ছোটবাবু রমেশের কাছে সাহায্য চাইতে এসে কেঁদে পড়েছিল।

৩.২ রমেশ বেণীর কাছে জল বার করে দেবার হুকুম দেওয়ার জন্য অনুরোধ করল কেন?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে একশো বিঘার মাঠ বৃষ্টির জলে ডুবে ধান নষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ওই মাঠের দক্ষিণ দিকে যে বাঁধ রয়েছে তা ঘোষাল ও মুখুজ্জেদের। চাষিদের আসন্ন বিপদের কথা চিন্তা করে সহানুভূতিশীল রমেশ সেই বাঁধ কাটতে রাজি থাকলেও বেণী রাজি ছিলেন না। বেণী ছিল জমিদার ও রমেশের বড়দা। বেণী এ বিষয়ে মত না দিলে চাষিদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই রমেশ বেণীকে বাঁধ কাটার হুকুম দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করছিল।

৩.৩ বেণী জল বার করতে চায়নি কেন?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে বাঁধের গায়ে একটি জলা আছে যেখানে প্রতি বছর যা মাছ উৎপন্ন হয়, তাতে দুশো টাকা আয় হয়। জমিদার বেণীবাবু বৈষয়িক লোক। গরিব চাষিদের দুঃখকষ্টের কথা ভেবে বছরে দুশো টাকা লোকসান করার ইচ্ছা বেণীর ছিল না। তাই বেণী বাঁধের জল বের করে দিতে চায়নি। কারণ, বাঁধ কাটলে জলের সঙ্গে মাছও বেরিয়ে যাবে।

৩.৪ ‘ঘৃণায়, লজ্জায়, ক্রোধে, ক্ষোভে রমেশের চোখমুখ উত্তপ্ত হইয়া উঠিল’ – রমেশের এমন অবস্থা হয়েছিল কেন?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে একশো বিঘা মাঠের দক্ষিণ দিকের বাঁধ কেটে না দিলে চাষিদের কত বড় ক্ষতি হবে তা বুঝতে পেরেও বেণী নিজের স্বার্থের কথা ভেবে বাঁধ কাটতে রাজি হয়নি। এমনকি রমেশ এবিষয়ে তার দাদাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে বেণী জানায়, চাষিরা নিরুপায় হয়ে তাদের কাছেই জমি বন্দক রাখবে এবং সেই সুযোগে বেণীদের কিছু রোজগার হবে। এমনকি অসহায় গরিব চাষিদের বেণী ছোটোলোক বলেও তাচ্ছিল্য করে। এরকম চরম স্বার্থপর নীচ মানসিকতার পরিচয় পেয়ে সহানুভূতিশীল রমেশ বেণীর প্রতি ঘৃণায়, লজ্জায়, ক্রোধে, ক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।

৩.৫ ‘রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেল’ – রমেশের বিস্ময়ের কারণ কী ছিল?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে প্রজাদরদী রমেশ দাদার কাছে সমস্যার সমাধান না পেয়ে রমার কাছে উপস্থিত হয়েছিল। রমেশ ভেবেছিল, রমা চাষিদের সমস্যার কথা শুনে তাঁর মতোই বাঁধ কেটে জল বার করে দিতে রাজি হবে। কিন্তু রমা রাজি হয় না। এমনকি দরিদ্র চাষিদের সংকটের কথা জেনেও রমা নিজের লোকসানের কথা চিন্তা করে। রমার এই মায়া মমতাহীন আচরনে রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে যায়। কারণ, রমেশের বিশ্বাস ছিল রমা তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।

৩.৬ রমা রমেশের অনুরোধে রাজি হয়নি কেন ?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে রমা জানত বাঁধ কাটিয়ে দিলে দুশো টাকার লোকসান হবে। রমার পিতা রমা ও তার ভাইয়ের নামে সম্পত্তি লিখে দিয়ে গেছেন। নাবালক ভাইয়ের সম্পত্তি ও জমিদারির অভিভাবক রমা। তাই গরিব কৃষকদের স্বার্থে এত টাকা লোকসান করা রমার উচিত মনে হয়নি। একারণে রমা রমেশের অনুরোধে রাজি হয়নি।

৩.৭ ‘মানুষ খাঁটি কি না, চেনা যায় শুধু টাকার সম্পর্কে” কে, কার সম্পর্কে একথা বলেছিল? সে কেন একথা বলেছিল?
উত্তর:-
বক্তা ও উদ্দিষ্ট ব্যক্তি:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ নামক পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা রমেশ। সে রমা সম্পর্কে একথা বলেছিল।

একথা বলার কারণ:- রমেশের মনে ধারণা ছিল দরিদ্র চাষিদের সংকটের কথা চিন্তা করে রমা নিজের লোকসানের কথা না ভেবে বাঁধ কাটতে রাজি হবে। কিন্তু রমা ক্ষতি স্বীকার করতে চায়নি। রমাকে রমেশ অনুরোধ করলে রমা রমেশের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। রমার এই স্পর্ধা দেখে রমেশ রাগে বিহ্বল হয়ে যায় এবং রমাকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর মনে হয়। রমার সম্পর্কে রমেশের যে উচ্চ ধারণা ছিল তা ভেঙে যাওয়ায় রমেশ এমন মন্তব্য করে।

৩.৮ ‘রমা বিহ্বল হতবুদ্ধির ন্যায় ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া রহিল’ রমার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে রমা চাষিদের জন্য নিজের ক্ষতি স্বীকার করতে চায়নি। সে চায়নি বাঁধ কাটিয়ে দেওয়া হোক। কারণ, বাঁধ কাটলে জলের সাথে মাছ বেরিয়ে যাবে। তাতে তার লোকসান হবে। এমনকি রমেশ বারবার অনুরোধ করলে রমা রমেশের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। রমার মানবিকতাহীন এই বৈষয়িক মনোবৃত্তির পরিচয় পেয়ে রমেশ তাকে হীন ও নীচ বলে অপমান করে। রমার সম্বন্ধে রমেশের এমন প্রতিক্রিয়ায় রমা বিহ্বল ও হতবুদ্ধি হয়ে গিয়েছিল।

৩.৯ রমা আকবরকে ডেকে এনেছিল কেন ?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশে আকবর পিরপুরের প্রজা। সাবেক দিনে লাঠির জোরে সে জমিদারকে অনেক বিষয়সম্পত্তি হস্তাগত করে দিয়েছে। তাই সেদিন সন্ধের পর ক্রোধে ও অভিমানে ক্ষিপ্ত হয়ে রমা তাকে ডেকে এনে বাঁধ পাহারা দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল। যাতে রমেশ গায়ের জোরে বাঁধ কেটে দিতে না পারে।

৩.১০ ‘মোরা নালিশ করতি পারব না’ কে একথা বলেছে? সে নালিশ করতে পারবে না কেন?
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তির বক্তা পিরপুরের প্রজা ও লাঠিয়াল আকবর।

আকবর পিরপুরের প্রজা। সে একজন দক্ষ লাঠিয়াল ও সৎ মুসলমান প্রজা। পাঁচখানা গ্রামের লোক তাকে সর্দার হিসেবে মান্য করে। সে গরিব হলেও তার আত্মসম্মান আছে, ন্যায় অন্যায় বোধ আছে। রমার আদেশে সে রমেশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেও রমেশের উচ্চ মনোভাব ও পৌরুষের প্রশংসা না করে পারেনি। তাই বেণীবাবু রমেশের নামে আকবরকে থানায় মিথ্যে অভিযোগ জানাতে বললেও আকবর নালিশ করতে অস্বীকার করে। কারণ এমন একজন মহান মানুষের নামে মিথ্যে কথা বলতে আকবরের রুচিতে বেঁধেছিল।

৪.১ ‘নইলে আর ব্যাটাদের ছোটোলোক বলেচে কেন’? — বক্তা কে? এই উক্তির মধ্যে দিয়ে বক্তার চরিত্রের কী পরিচয় পাও ?
উত্তর:-
বক্তা কে?:- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ গদ্য থেকে গৃহীত আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন বেণী ঘোষাল।

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য:- প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে বক্তার চরিত্রের কয়েকটি বিশেষ দিক ফুটে উঠেছে। বেণী ঘোষাল চরিত্রটি সামন্ততান্ত্রিক চরিত্র। তিনি মূলত প্রজাপীড়ক জমিদার। তিনি একাধারে জমিদার ও মহাজন। মহাজনী করে তিনি জমিদারির সীমানা বাড়িয়েছেন এবং পরের প্রজন্মের জন্যে কৌশল করে আরও বেশি সম্পদ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। মূলত প্রশ্নোক্ত কথাটির মধ্য দিয়ে বক্তার চরিত্রের দয়ামায়াহীন, লোভী, স্বার্থপর, ও হীন মানসিকতার পরিচয় মেলে।

৪.২ বেণী, রমা ও রমেশ চরিত্র তিনটির তুলনামূলক আলোচনা করো। সেইসঙ্গে এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে কোন চরিত্রটি তোমার সবথেকে ভালো লেগেছে এবং কেন তা জানাও।
উত্তর:-
কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ গদ্যে যে চরিত্রগুলি রয়েছে তারা প্রত্যেকেই নিজস্ব মহিমায় সমুজ্জ্বল। এক্ষণে আমরা এই গদ্যের বেণী, রমা ও রমেশ চরিত্র সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলনামূলক আলোচনা করব।

বেণী ঘোষাল একজন জমিদার। সে জানে কীভাবে প্রজাদের শোষণ করে বড়লোক হতে হয়। আবেগ তাকে স্পর্শ করতে পারে না। তাই প্রজারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অসংখ্য প্রজার সারা বছরের ভাত নষ্ট হবে জেনেও নিজেদের ক্ষতি করে সে বাঁধ কাটতে রাজি হয়নি। উল্টে আশা করেছে গরীব প্রজারা জমি বন্ধক রেখে তার কাছে টাকা ধার নিতে আসুক, যাতে তার লাভ হয়। বেণী চরিত্রটি দয়ামায়াহীন, স্বার্থপর, অসৎ প্রজাপীড়ক এক চরিত্র।

রমা একজন গ্রাম্য মহিলা। সেও সামন্ততন্ত্রের প্রতিনিধি। নাবালক ভাইয়ের একমাত্র অভিভাবক রমা একই সঙ্গে জমিদারি এবং সংসার সামলেছে। তৎকালীন সমাজের নারী হলেও সে একজন বৈষয়িক জমিদার। সে প্রজাদের ক্ষতি করতে না চাইলেও নিজের ভাইয়ের ক্ষতি করে বাঁধ কেটে দিতে রাজি হয়নি। এমনকি প্রয়োজনে রমেশকে কঠিন কথা বলতেও সে পিছুপা হয়নি। এর থেকে বোঝা যায় রমা ব্যক্তিত্বময়ী ও দুঁদে জমিদারও বটে।

রমেশ একটি সু-হৃদয়ের আবেগপ্রবণ চরিত্র। জমিদার হলেও সে প্রজাদের ক্ষতি করে জমিদারি চালাতে নারাজ। সে জানে প্ৰজা বাঁচলেই জমিদার বাঁচবে। বাঁধের জল বের করলে ক্ষতি হবে জেনেও সে বাঁধ কাটতে চায়। কারণ সে জানে এ ক্ষতি কৃষকদের ক্ষতির কাছে কিছুই নয়। গরিবের চোখের জল সে সহ্য করতে পারে না। তাইতো বাঘাবাঘা লাঠিয়ালদের সাথে লড়াই করে সে বাঁধ কেটে দেয়। রমেশ মহৎ আদর্শ। সুদৃঢ় সত্যনিষ্ঠা ও বিরাট মানবিকতার আশ্চর্য সমন্বয়ে সে গঠিত। সে যথার্থই প্রজাহিতৈষী।

এই তিনটি চরিত্রের মধ্যে রমেশ চরিত্রটি আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। কারণ, তাঁর চরিত্রের মধ্যে মহৎ আদর্শ, সুদৃঢ়তা, সত্যনিষ্ঠা ও বিরাট মানবিকতার আশ্চর্য সমাবেশ লক্ষ করা যায়। তার বলিষ্ঠ বাহু এবং প্রশস্ত বক্ষ বাংলাদেশের জীর্ণ দুর্বল পল্লিসমাজের সেবায় উৎসর্গীকৃত ছিল। তাই তার চরিত্রটি আমার ভালো লাগে।

৪.৩ উপন্যাসের নামে পাঠ্যাংশটির নামকরণও ‘পল্লীসমাজ’ রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নামকরণটি সুপ্রযুক্ত কিনা সে সম্পর্কে মতামত জানাও ৷
উত্তর:- নামকরণের মধ্য দিয়ে সাহিত্যের ভাববস্তুর আভাস পাওয়া যায় ৷ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ উপন্যাস থেকে গৃহীত ‘পল্লীসমাজ’ নামক পাঠ্যাংশে তৎকালীন গ্রাম্য সমাজই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। বেণী, রমা, রমেশ প্রভৃতি চরিত্র মিশিয়ে গদ্যের কাহিনি আবর্তিত হলেও পল্লীসমাজের প্রেক্ষাপটে ও প্রভাবে সবকিছু পরিচালিত হয়েছে। অন্যান্য উপন্যাস বা গল্পে সমাজের ভূমিকা থাকলেও তা প্রাধান্য লাভ করে না। কিন্তু পল্লীসমাজে সমাজই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। উপন্যাসের যে নির্বাচিত অংশ আমাদের পাঠ্যাংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে সেখানেও আমরা স্বল্প পরিসরে গ্রাম্য পরিবেশ, সেখানকার সমস্যা, জমিদারদের আচরণ, রাজনীতি সবকিছুর প্রকাশ দেখতে পাই। তাই আলোচ্য ‘পল্লীসমাজ’ নামকরণটি যথোপযুক্ত ও সার্থক।

৪.৪ পল্লীসমাজ পাঠ্যাংশে সমান্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার কোনো নিদর্শন পেয়ে থাকলে সে সম্পর্কে আলোচনা করো। এ ধরনের ব্যবস্থার সুফল ও কুফল সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর:-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পল্লীসমাজ’ সমাজ সমালোচনামূলক উপন্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম। এই রচনায় সমকালীন বাংলাদেশের ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া যায়। হিন্দু সমাজের প্রকৃত আদর্শ ও মনোভাব এবং সমগ্র জীবনযাত্রার একটি নিখুঁত চিত্র এই উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘পল্লীসমাজ’ গদ্যাংশে বেণী ঘোষাল চরিত্রের মধ্যে দিয়ে লেখক দেখিয়েছ, জমিদাররা কীভাবে প্রজাদের সর্বস্বান্ত করতেন এবং কীভাবে তাঁরা তাঁদের জমির পরিধি বাড়াতেন। জমিদার বেণী ঘোষাল চরিত্রের মধ্যেই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া যায়।

সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সুফল:- সামন্ততান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পর কোনো সুফল আছে বলে মনে হয় না। একথা ঠিক, প্রজাপীড়ক জমিদারের পাশাপাশি অনেক সময় প্রজাদরদি সামন্তও থাকতেন। তাঁরা প্রজাদের মঙ্গলার্থে নানান হিতকর পরিকল্পনা নিতেন। একই সঙ্গে প্রজাদের সার্বিক স্বার্থরক্ষাই ছিল তাঁর প্রধান কাজ। এমন জমিদারের অধীনে প্রজারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটত।

সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার কুফল:- সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় কৃষক-সহ সমস্ত প্রজাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। তারা ফসল উৎপন্ন করেও একবেলা পেটপুরে খেতে পারত না। জমিদারের সীমাহীন লোভ, লালসা, বিলাসিতার শিকার হয়ে তাদের সর্বস্ব হারাতে হত। নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখতে যে কোনো প্রজার চরম সর্বনাশ করতে দ্বিধা বোধ করত না।

উত্তর:-
বৃষ্ + তি = বৃষ্টি
সম্ + বরণ = সংবরণ
কাঁদ্ + না = কান্না
অতি + অন্ত = অত্যন্ত
অন্ + আত্মীয় = অনাত্মীয়
এক + অন্ত = একান্ত

নিরুত্তর, নমস্কার, তারকেশ্বর, যথার্থ, প্রত্যাখ্যান, আশ্চর্য, তদবস্থা

উত্তর:-
নিরুত্তর = নিঃ + উত্তর।
নমস্কার = নমঃ + কার ।
তারকেশ্বর = তারক + ঈশ্বর।
যথার্থ = যথা + অর্থ।
প্রত্যাখ্যান = প্রতি + আখ্যান।
আশ্চর্য = আ + চর্য। (নিপাতনে সন্ধি)
তদবস্থা = তৎ + অবস্থা।

অপরাহ্ণ, অকস্মাৎ, আহ্বান, দক্ষিণ, উচ্ছিষ্ট, উত্তপ্ত, বিস্ফারিত, দীর্ঘশ্বাস, অশ্রুপ্লাবিত, হিন্দুস্থানি, অস্বচ্ছ

উত্তর:-

অপরাহ্ন = অ – প – রান্ – হ, [মুক্তদল-অ, প, হ (৩টি), রুদ্ধদল-রান্ (১টি) ]
অকস্মাৎ = অ – কস্ – স্যাৎ, [মুক্তদল –অ (১টি), রুদ্ধদল-কস, স্যাৎ (২ টি)]
আহ্বান = আ – হ – বান্ [মুক্তদল-আ, হ (২ টি),রুদ্ধদল-বান্ (১টি)]
দক্ষিণ = দক্ – ক্ষিণ, [মুক্তদল- শূন্য (০), রুদ্ধদল- দক, ক্ষিণ (২ টি)]
উচ্ছিষ্ট = উচ্ – ছিষ – ট, [মুক্তদল–ট(১টি), রুদ্ধদল-উচ্, ছিষ (২ টি)]
উত্তপ্ত = উৎ – তপ্ – ত, [মুক্তদল-ত (১টি), রুদ্ধদল-উৎ, তপ (২ টি)]
বিস্ফারিত = বিস্ – ফা – রি – ত, [মুক্তদল-ফা, রি, ত (৩টি), রুদ্ধদল-বিস্ (১টি)]
দীর্ঘশ্বাস = দীর – ঘ – শ্বাস, [মুক্তদল-ঘ (১টি), রুদ্ধদল—দীর, শ্বাস (২ টি)]
অশ্রুপ্লাবিত = অশ – রু – প্লা – বি – ত [মুক্তদল-রু, বি, ত (৩টি), রুদ্ধদল-অশ, প্লা (২টি)]
হিন্দুস্থানি = হিন – দুস্ – থা – নি [মুক্তদল–থা, নি (২ টি), রুদ্ধদল-হিন, দুস্ (২ টি)]
অস্বচ্ছ = অ – স্বচ্ – ছ [মুক্তদল-অ, ছ (২ টি), রুদ্ধদল—স্বচ (১টি)]

উত্তর:-

৮.১ জল ও কাদা = জলকাদা (দ্বন্দ্ব সমাস)।
৮.২ নয় আহত = অনাহত (নঞ তৎপুরুষ সমাস)।
৮.৩ ত্রি অধিক দশ = ত্রয়োদশ (মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস)।
৮.৪ বেগের সহিত বর্তমান = সবেগে (সহার্থক বহুব্রীহি সমাস)।
৮.৫ মড়ার জন্য কান্না = মড়াকান্না (নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস)।
৮.৬ চণ্ডী পুজোর জন্য তৈরি যে মণ্ডপ = চণ্ডীমণ্ডপ (মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস)।

৯.১ কথাটা রমেশ বুঝিতে পারিল না। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর:-
কথাটা রমেশ শুনিল কিন্তু বুঝিতে পারিল না ৷

৯.২ এ বাড়িতে আসিয়া যখন প্রবেশ করিল তখন সন্ধ্যা হয় হয়। (সরল বাক্যে)
উত্তর:-
সন্ধ্যা হয়ে আসার সময় এ বাড়িতে আসিয়া প্রবেশ করিল।

৯.৩ ওরা যাবে কি? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর:-
ওরা যাবে কিনা সেটাই জিজ্ঞাস্য।

৯.৪ বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দিবারও তাহার প্রবৃত্তি হইল না। (হ্যাঁ বাচক বাক্যে)
উত্তর:-
বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে সে বিরত রইল।

৯.৫ তুমি নীচ, অতি ছোটো। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর:-
তুমি নীচ এবং অতি ছোটো।

৯.৬ পথে আর এতটুকু কাদা পাবার জো নেই দিদিমা। (প্রশ্নবোধক বাক্যে
উত্তর:-
পথে কি আর এতটুকু কাদা পাবার জো আছে দিদিমা?

৯.৭ মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ থাকায় এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই। (জটিল বাক্যে)
উত্তর:-
যেহেতু মাসি উপরে ঠাকুরঘরে আবদ্ধ ছিলেন সেহেতু এ সকলের কিছুই জানিতে পারেন নাই ।

যাত্রা, বাঁধ

উত্তর:-

যাত্রা (গমন) – তোমাদের বিদেশযাত্রা শুভ হোক ।
যাত্রা (দৃশ্যপটহীন মঞ্চে নাট্যাভিনয়) – গ্রামে শীতকালে যাত্রার আসর বসে।

বাঁধ (জলপ্রবাহ বন্ধ রাখার জন্য নির্মিত প্রাচীর) – নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা হয়েছে।
বাঁধ (আটকে রাখা) – কথায় বাঁধ দাও নাহলে কপালে দুঃখ আছে।

আরো পড়ুন

বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse

অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse

বনভোজনের ব্যাপার প্রশ্ন উত্তর | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় | Bonbhojoner Bapar Question Answer | Class 8 | Wbbse

চন্দ্রগুপ্ত নাটকের প্রশ্ন উত্তর | দ্বিজেন্দ্রলাল রায় | Chandragupta Question Answer | Class 8 | Wbbse

সবুজ জামা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Sobuj Jama Question Answer | Class 8 | Wbbse

পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

1 thought on “পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর Class 8 | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Pallisamaj Question Answer | Wbbse”

Leave a Comment