প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 8 এর নাটোরের কথা প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নাটোরের কথা গল্প রয়েছে। গল্পের শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
নাটোরের কথা
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হাতে কলমে
১.১ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি বইয়ের নাম, ‘রাজকাহিনী’ ও ‘শকুন্তলা’
১.২ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে কোন সম্পর্কে সম্পর্কিত?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
২.১ ‘আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প’ – লেখকের অনুসরণে সেই ‘গল্পটি’ নিজের ভাষায় বিবৃত করো।
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ঘরোয়া’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে লেখকের একটি গল্প মনে পড়ে। স্বদেশি যুগের সময় কী করে তারা বাংলা ভাষার প্রচলন করেছিলেন সেই গল্প। লেখকের কথা অনুযায়ী গল্পটি এমন, ভূমিকম্পের বছরে নাটোরে প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ছিলেন রিসেপশন কমিটির প্রেসিডেন্ট। লেখকরা তাকে নাটোর বলেই সম্বোধন করতেন। নাটোর নিমন্ত্রণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ সহ ঠাকুর পরিবারের সবাইকে। সেখানে গিয়ে নাটোর মহারাজের আতিথেয়তায় সকলেই মুগ্ধ হন। এরপর রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ প্রস্তাব দেন প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স হবে বাংলায়। লেখক অবনীন্দ্রনাথ সহ তরুণরা রবীন্দ্রনাথকে সমর্থন করে। কিন্তু অনুষ্ঠানের চাঁইরা (নেতা, প্রধান) আপত্তি জানায়। তাঁরা যুক্তি দেয় যেমন কংগ্রেসে সবকিছু ইংরেজিতে হয় এখানেও তেমন হবে। একারণে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে ঠিক হয় একদল বাংলায় বলবে একদল ইংরেজিতে বলবে। এরপর প্রেসিডেন্ট সহ অন্যরা যেই ইংরেজিতে স্পিচ দিতে ওঠে তখনই তরুণরা “বাংলা, বাংলা’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে। এভাবে তাঁরা কাউকে ইংরেজিতে বলতেই দেয় না। শেষমেশ ঘোরতর ইংরেজিদুরস্ত লালমোহন ঘোষ পর্যন্ত বাংলায় বক্তৃতা দেন। তাদের এই জয়ে অবনীন্দ্ৰনাথ সহ তরুণরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। এভাবেই কনফারেন্সে বাংলা ভাষা চালু হয়।
২.২ লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম কী ছিল?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ অনুসারে তখনকার নাটোরের মহারাজার নাম ছিল, জগদিন্দ্রনাথ। ২.৩ তিনি কোন ‘রিসেপশন কমিটি’র প্রেসিডেন্ট ছিলেন? উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ অনুসারে তখনকার নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ‘প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স’ বা প্রাদেশিক সম্মেলনের ‘রিসেপশন কমিটি’র প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
২.৪ ‘নাটোর নেমন্তন্ন করলেন…. ‘ – সেই নেমন্তন্নের তালিকায় কাদের নাম ছিল বলে লেখক স্মরণ করতে পেরেছেন?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ অনুসারে নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিল লেখক নিজে, এছাড়াও দীপুদা অর্থাৎ দ্বীপেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবিকাকা বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ ঠাকুর পরিবারের সকলে । এছাড়াও অনেক নেতা ও ন্যাশনাল কংগ্রেসের চাঁইরা আমন্ত্রিত ছিল। আরও ছিল অবনীন্দ্রনাথের ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল, ডব্লিউ. সি. বোনার্জি, মেজোজ্যাঠামশায়, লালমোহন ঘোষ প্রমুখ ।
২.৫ ‘রওনা হলুম সবাই মিলে হৈ হৈ করতে করতে।’ কোথায় রওনা হলেন ? কীভাবেই বা রওনা হলেন ?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে লেখক সহ অন্যান্যরা নাটোরের প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে রওনা হলেন।
কীভাবে রওনা হলেন?:- নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে লেখকরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে রওনা হলেন। নাটোরের মহারাজের ব্যবস্থায় স্পেশাল ট্রেনে গিয়েছিলেন তাঁরা। লেখক পরে গিয়েছিলেন চোগাচাপকান। সাথে নিয়েছিলেন ধুতি পাঞ্জাবি ৷
২.৬ সরাঘাট থেকে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা কোন নদীতে স্টিমার চড়েছিলেন?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ অনুসারে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা সরাঘাট থেকে পদ্মা নদীতে স্টিমার চড়েছিলেন৷
২.৭ স্টিমারে খাওয়া-দাওয়ার প্রসঙ্গ আলোচনায় লেখকের সরস মনের পরিচয় কীভাবে দেদীপ্যমান হয়ে উঠেছে তা বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে স্টিমারের খাওয়া দাওয়া প্রসঙ্গে লেখক যথেষ্ট সরস মনের পরিচয় দিয়েছেন। লেখক জানান ডেকের উপর লম্বা টেবিলে তাঁরা সবাই খেতে বসেছিলেন। টেবিলের একদিকে হোমরাচোমরা চাঁইরা ও অন্যদিকে ছোকরারা। লেখকের পাশে ছিল দীপুদা। লেখক ও দীপুদা খাদ্যরসিক ছিলেন। তবে দেখা গেল ‘বয়’রা খাবার নিয়ে আগে কর্তাব্যক্তিদের দিকে যাচ্ছে। তার ফলে খাবার ছোকরাদের দিক পর্যন্ত বিশেষ পৌঁছচ্ছে না। মাঝখানে বসেছিলেন একজন ‘চাঁই’, তার কাছে এলে খাবারের ডিশ প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল । তিনি একাই ছ-সাতখানা কাটলেট, প্লেটের অর্ধেকের বেশি পুডিং খেয়ে শেষ করেন। দীপুদা ও লেখক পুডিং না পেয়ে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। পরবর্তীতে দীপুদার হস্তক্ষেপে ‘বয়’রা দুটো ডিশে খাবার এনে দুপাশে দুজন যায় এবং তারাও খাবার পায়। খাদ্যরসিক লেখকের পছন্দের খাবার চোখে দেখেও না খেতে পারার অসহায়তা যেন হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি করে।এছাড়াও লেখক ‘চাঁইয়ের খাওয়াকে ‘জাইগ্যানটিক’ খাওয়া বলে উল্লেখ করেছেন। লেখক হাসির ছলে এও বলতে ভোলেননি, ওইরকম খেয়েই ভদ্রলোক শরীরটা ঠিক রেখেছিলেন।
২.৮ ‘যেন ইন্দ্রপুরী।’— কীসের সঙ্গে ‘ইন্দ্রপুরীর তুলনা করা হয়েছে? কেনই বা লেখক এমন তুলনা করেছেন?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে লেখক নাটোরের মহারাজের বাড়ি ও বৈঠকখানাকে ‘ইন্দ্রপুরী’র সাথে তুলনা করেছেন।
ইন্দ্রপুরী হল দেবরাজ ইন্দ্রের বাসস্থান। সেখানে সমস্ত রকম সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বর্তমান। লেখক নাটোরে রাজবাড়িতে পৌঁছে দেখলেন এলাহি ব্যাপার। বাড়ি, বৈঠকখানা সব সুন্দর করে সাজানো। ঝাড়লণ্ঠন, তাকিয়া, ভালো ভালো দামি ফুলদানি, কার্পেট, সে সবের কোনো তুলনা নেই। এমনকি আন্তরিকতায়, আদরযত্নেও নাটোরের মহারাজা কোনো ত্রুটি রাখেননি। একারণে বিলাসে, আড়ম্বরে, সম্পদে অতুলনীয় নাটোর মহারাজের বাড়ি ও বৈঠকখানাকে লেখক ‘ইন্দ্রপুরী’র সাথে তুলনা করেছেন।
২.৯ ‘একেই বলে রাজ সমাদর।’ উদ্ধৃতিটির আলোকে নাটোরের মহারাজার অতিথি-বাৎসল্যের পরিচয় দাও।
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তির মাধ্যমে লেখক মহারাজার অসাধারণ অতিথি বাৎসল্যের উল্লেখ করেছেন। লেখক সহ ঠাকুর বাড়ির অন্যান্যরা নাটোরে প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে যান। নাটোর মহারাজের তরফ থেকে তাদের জন্য স্পেশাল ট্রেন থেকে শুরু করে স্টিমারে এলাহি খাবারদাবারের আয়োজন করা হয়। নাটোরে পৌঁছনোর পর মহারাজের আন্তরিকতা ও আদরযত্নে লেখক সহ তাঁর সঙ্গীরা অভিভূত হন। ইন্দ্রপুরী’র মতো সাজানো বাড়ি ও বৈঠকখানা। মাছ, মাংস, ডিম খাবারে কিছুই বাদ যায়নি। রানিমা নিজে তাদের জন্য অন্দরমহল থেকে পিঠে – পায়েস বানিয়ে পাঠিয়েছেন। হলুইকরকে বাড়িতেই বসানো হয়েছে, নানা রকমের মিষ্টি করে দিচ্ছে এবেলা ওবেলা। চারক-বাকররা না চাইতেই সব জিনিস কাছে এনে দিচ্ছিল। এমনকি তাদের ধুতি-চাদরও পাট করে রাখা হয়েছিল তাদের বাক্সও খুলতে হয়নি। তাই সবকিছু মিলিয়ে এই বিপুল অভ্যর্থনা ও অতিথিবাৎসল্যকেই লেখক ‘রাজসমাদর’ আখ্যা দিয়েছেন।
২.১০ ‘নাটোরের খুব আগ্রহ’ – কোন প্রসঙ্গে তাঁর আগ্রহের কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে লেখক বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সাথে নাটোরে প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে তিনি নাটোরের গ্রাম ঘুরে পুরোনো বাড়িঘর, মন্দির প্রভৃতি দেখেন ও
সেগুলো স্কেচ করেন। তাঁর এই স্কেচের ব্যাপারে মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের আগ্রহের কথা এখানে বলা হয়েছে। নাটোর অবনীন্দ্রনাথকে সঙ্গে করে একেবারে অন্দরমহলে রানি ভবানীর ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন। নাটোর তাঁর রাজত্বের অনেক কিছু লেখককে দেখান এবং স্কেচ করে দেবার ফরমাশ ও করেন।
২.১১ ‘আগে থেকেই ঠিক ছিল’ – আগে থেকে কী ঠিক থাকার কথা বলা হয়েছে? সেই উপলক্ষ্যে কোন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা পাঠ্যাংশে রয়েছে, তা আলোচনা করো।
উত্তর:-
আগে থেকে কী ঠিক ছিল?:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিতে নাটোরের প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষা হবে তা আগে থেকে ঠিক ছিল সেকথাই বলা হয়েছে ।
কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হল?:- ছেলে ছোকরাদের দলের সমর্থন অনুয়ায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষায় হওয়ার প্রস্তাব জানায় কর্তাব্যক্তিরা তখন বিরোধ জানিয়ে ইংরেজি ভাষার প্রস্তাব দেয়। এরপর ঠিক হয় একদল বাংলায় বলবে একদল ইংরেজিতে বলবে।
২.১২ নাটোরে প্রোভিন্সিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন গানটি পরিবেশন করেছিলেন?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে জানা যায় নাটোরে প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘সোনার বাংলা’ গানটি পরিবেশন করেছিলেন।
২.১৩ ‘আমাদের তো জয়জয়কার।’ — কী কারণে লেখক ও তাঁর সঙ্গীদের ‘জয়জয়কার’ হলো?
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশে ছেলে ছোকরাদের দলের সমর্থন অনুয়ায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষায় হওয়ার প্রস্তাব জানায় কর্তাব্যক্তিরা তখন বিরোধ জানিয়ে ইংরেজি ভাষার প্রস্তাব দেয়। এরপর ঠিক হয় একদল বাংলায় বলবে একদল ইংরেজিতে বলবে । কনফারেন্স শুরু হলে প্রেসিডেন্ট যেই ইংরেজিতে স্পিচ দিতে শুরু করে তখনই ছেলে ছোকরারা “বাংলা, বাংলা” বলে চেঁচিয়ে ওঠে। ইংরেজিতে কেউ স্পিচ দিলেই তাঁরা চেঁচাতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ঘোরতর ইংরেজিদুরস্ত পার্লামেন্টারি বক্তা লালমোহন ঘোষ পর্যন্ত বাংলায় বক্তৃতা করেন। এভাবেই প্রাদেশিক সভায় বাংলা ভাষা চালু করতে পারায় লেখক সহ তাঁর সঙ্গীদের ‘জয়জয়কার’ হয়।
২.১৪ ‘সেই প্রথম আমরা পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়লুম।’— লেখকের অনুসরণে সেই ‘লড়াই’-এর বিশদ বিবরণ দাও।
উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘নাটোরের কথা’ পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে লেখক সহ ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য তরুণ সদস্যদের প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষা চালু করার লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে। ছেলে ছোকরাদের দলের সমর্থন অনুয়ায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষায় হওয়ার প্রস্তাব জানায় কর্তাব্যক্তিরা তার বিরোধ জানিয়ে ইংরেজি ভাষার প্রস্তাব দেয়। এরপর ঠিক হয় একদল বাংলায় বলবে একদল ইংরেজিতে বলবে । কনফারেন্স শুরু হলে প্রেসিডেন্ট যেই ইংরেজিতে স্পিচ দিতে শুরু করে তখনই ছেলে ছোকরারা ‘বাংলা বাংলা’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে। ইংরেজিতে কেউ স্পিচ দিলেই তাঁরা চেঁচাতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ঘোরতর ইংরেজিদুরস্ত পার্লামেন্টারি বক্তা লালমোহন ঘোষ পর্যন্ত বাংলায় বক্তৃতা করেন। এভাবেই প্রাদেশিক সভায় বাংলা ভাষা চালু করতে পারায় লেখক সহ তাঁর সঙ্গীদের ‘জয়জয়কার’ হয়। এটা ছিল লেখকদের বাংলা ভাষার জন্য করা প্রথম পাবলিকলি লড়াই, যা সার্থক হয়েছিল।
৩. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো :
৩.১ আজ সকালে মনে পড়ল একটি গল্প – সেই প্রথম স্বদেশি যুগের সময়কার, কী করে আমার বাংলা ভাষার প্রচলন করলুম। (জটিল বাক্যে)
উত্তর:- আজ সকালে সেই প্রথম স্বদেশি যুগের সময়কার যে গল্পটি মনে পড়ল, সেটা হল কী করে আমরা বাংলা ভাষার প্রচলন করলুম।
৩.২ ভূমিকম্পের বছর সেটা। প্রোভিন্সিয়াল কনফারেন্স হবে নাটোরে। (বাক্যদুটিকে জুড়ে লেখো)
উত্তর:- ভূমিকম্পের বছরে প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স হবে নাটোরে।
৩.৩ নাটোর নেমন্তন্ন করলেন আমাদের বাড়ির সবাইকে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর:- নাটোর নেমন্তন্ন করলেন আমাকে এবং আমাদের বাড়ির সবাইকে ।
৩.৪ আরো অনেকে ছিলেন। সবার নাম কি মনে আসছে এখন। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর:- আরও অনেকে ছিলেন, যাদের সবার নাম এখন মনে আসছে না ৷
৩.৫ নাটোর বললেন, কিছু ভেবো না। সব ঠিক আছে। (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর:- নাটোর বললেন, কিছু ভাবার দরকার নেই সব ঠিক আছে।
৩.৬ অমন ‘জাইগ্যানটিক’ খাওয়া আমরা কেউ কখনো দেখিনি। (নিম্নরেখ শব্দটির পরিবর্তে বাংলা শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখো।)
উত্তর:- অমন ‘রাক্ষুসে’ খাওয়া আমরা কেউ কখনো দেখিনি।
৩.৭ ছোকরার দলের কথায় আমলই দেন না। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)
উত্তর:- ছোকরার দলের কথা উপেক্ষা করেন ।
৩.৮ ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল রিপোর্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন। (বাক্যটিকে দু’টি বাক্যে ভেঙ্গে লেখো)
উত্তর:- ন-পিসেমশাইয়ের নাম জানকীনাথ ঘোষাল। তিনি রিপোর্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন।
৩.৯ গরম গরম সন্দেশ আজ চায়ের সঙ্গে খাবার কথা আছে যে অবনদা। (নিম্নরেখ শব্দের প্রকার নির্দেশ করো এবং অর্থ এক রেখে অন্য শব্দ ব্যবহার করে বাক্যটি আবার লেখো)
উত্তর:- গরম গরম – শব্দদ্বৈতের উদাহরণ।
* সদ্য তৈরি করা সন্দেশ আজ চায়ের সঙ্গে খাবার কথা আছে যে অবনদা।
৩.১০ হাতের কাছে খাবার এলেই তলিয়ে দিতেম। (জটিল বাক্যে)
উত্তর:- যখনই হাতের কাছে খাবার আসত, তখনই তা তলিয়ে দিতেম ।
৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধি বিচ্ছেদ করো :
৪.১ স্টিমারে নির্ভাবনায় উঠে গেলুম।
উত্তর:- নির্ভাবনায় – নিঃ + ভাবনায়
৪.২ তিনি অর্ধেকের বেশি নিজের প্লেটে তুলে নিলেন।
উত্তর:- অর্ধ + একের।
৫. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো :
হাঙ্গাম, আপসোস, চান, তক্কাতক্কি, জিজ্ঞেস
উত্তর:-
হাঙ্গাম = হাঙ্গামা (অন্ত্যস্বর লোপ)।
আপসোস = আফশোস (ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তন)।
চান = স্নান (ধ্বনিলোপ ও ধ্বন্যাগম)।
তক্কাতক্কি = তর্কাতর্কি ( সমীভবন) ।
জিজ্ঞেস = জিজ্ঞাসা (স্বরসংগতি)।
৬. নীচের শব্দগুলির প্রকৃতি-প্রত্যয় নির্দেশ করো :
স্বদেশি, জিজ্ঞাসা, ঢাকাই
উত্তর:-
স্বদেশি = স্বদেশ + ই।
জিজ্ঞাসা = জ্ঞা – সন্ + অ + আ ।
ঢাকাই = ঢাকা + আই।
৭. ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো :
চোগাচাপকান, বিছানাবাক্স, ইন্দ্রপুরী, রাজসমাদর, গল্প-গুজব, অন্দরমহল
উত্তর:-
চোগাচাপকান = চোগা ও চাপকান (দ্বন্দ্ব সমাস)
বিছানাবাক্স = বিছানা ও বাক্স। (দ্বন্দ্ব সমাস)
ইন্দ্রপুরী = ইন্দ্রের পুরী। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
রাজসমাদর = রাজাসুলভ সমাদর। (মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস)
গল্প-গুজব = গল্প ও গুজব। (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)
অন্দরমহল = অন্দরের মহল।(সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
৯. কোনটি কী ধরনের সর্বনাম তা লেখো:
আমরা, সেটা, তাঁকে, সবাই, তিনি, আমি, এটা
উত্তর:-
আমরা = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম
সেটা = নির্দেশক সর্বনাম ।
তাঁকে = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
সবাই = সমষ্টিবাচক সর্বনাম।
তিনি = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম ।
আমি = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
এটা = নির্দেশক সর্বনাম।
আরো পড়ুন
বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse
পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse
চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Chithi Class 8 Question Answer | Wbbse
গাছের কথা প্রশ্ন উত্তর | জগদীশচন্দ্র বসু | Class 8 Bengali Gacher Kotha Question Answer | WBBSE
জেলখানার চিঠি প্রশ্ন উত্তর | সুভাষচন্দ্র বসু | Jelkhanar Chithi Class 8 Question Answer | WBBSE
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।