প্রশ্ন – আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা কী ছিল? ৮ Marks | Class 10
উত্তর: ভূমিকা : ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি লবণ সত্যাগ্রহের মাধ্যমে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন। এই আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ছাত্রদের উৎসাহিত করে ও তারা গান্ধিজির এই আন্দোলনে যােগ দেয়।
ছাত্রদের ভূমিকা :
স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ : এই আন্দোলনে ছাত্রদের যােগদান ছিল পূর্বাপেক্ষা কম, তথাপি যুক্তপ্রদেশ, বাংলা, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, আসামে ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল।
২। আইন অমান্য দিবস পালন : আইন অমান্য আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণের ধরন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে–ছাত্ররা গান্ধির ডান্ডি অভিযান শুরুর দিনটি পালনের পাশাপাশি এই আন্দোলনপর্বে আইন অমান্য, স্কুল-কলেজ বয়কট, মিটিং ও পিকেটিং-এ অংশ নেয়।
৩। বিদেশি পণ্য বর্জন : এই নতুন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তারা দলে দলে স্কুল-কলেজ পরিত্যাগ করে। ব্রিটিশ পণ্য বর্জন। আন্দোলন তাদের প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব পায়। বিলিতি পণ্য বর্জনের জন্য ছাত্রদের প্রচার ব্যবসাদারদের বিশেষভাবে আতঙ্কিত করে। সরকারি মহলেও এ ব্যাপারে বিশেষ অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
৪। ছাত্র ঐক্য প্রতিষ্ঠা : এই সময় ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে মতাদর্শগত বিভেদ দেখা গেলে ও দেশের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে তারা এ বিভেদকে খুব একটা মূল্য দেয়নি। ছাত্ররা ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল কলকাতার অ্যালবার্ট হলে বিশাল একটি। সম্মেলনের আয়ােজন করে।
কলকাতায় আন্দোলন : ইতিমধ্যে কলকাতায় কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে, যেমন— ১১ এপ্রিল কলেজ স্কোয়ারের এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কলকাতার পুলিশ নির্মমভাবে লাঠি চালায় এবং বহু ছাত্রকে গ্রেফতার ও বহু মানুষকে জখম করে। ১৪ জুলাই প্রেসিডেন্সি। কলেজের সামনে, ১৮ জুলাই বেথুন কলেজের গেটে এবং ১৯ জুলাই স্কটিশচার্চ কলেজেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
৬। মফঃস্বলে আন্দোলন : ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন আইন অমান্য আন্দোলন মফঃস্বল শহরগুলিতেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ববাংলায় বিশেষত চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ফরিদপুর প্রভৃতি অঞ্জলে। ছাত্রদের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতাে। ছাত্রদের এই আন্দোলন মেদিনীপুর জেলার কাথি ও তমলুক মহকুমাতেও ব্যাপকতা লাভ করেছিল।
পর্যালােচনা : আইন অমান্য আন্দোলন যখন সাফল্যের শীর্ষে তখন প্রথমত, ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের গান্ধি-আরউইন চুক্তির ফলে আন্দোলনে বিরতি নেমে আসে এবং ছাত্রসমাজ সর্বতােভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত হয়। দ্বিতীয়ত, প্রথম পর্যায়ের আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলে ছাত্র-যুব সম্প্রদায় বিপ্লবী আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং বিভিন্ন বিপ্লবী কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। তৃতীয়ত, আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্বেও পরিস্থিতির কোনাে হেরফের হয়নি।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
thanked