বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন সম্পর্কে আলােচনা করাে।

বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন সম্পর্কে আলােচনা করাে। 
অথবা, তিতুমির ও ওয়াহাবি আন্দোলন সম্পর্কে আলােচনা করাে। 
অথবা,তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহের বিবরণ দাও।  4 Marks/Class 10

উত্তর:

সূচনা : বাংলায় মির নিসার আলি বা তিতুমিরের নেতৃত্বে বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন বা ‘বারাসত বিদ্রোহ’ তীব্র রূপ ধারণ করে।

তিতুমির

বারাসত বিদ্রোহ : তিতুমির দেশীয় জমিদার, অত্যাচারী নীলকর, সুদখাের মহাজনদের অত্যাচার ও শােষণের হাত থেকে গরীব কৃষকদের রক্ষা করার জন্য নদিয়া, যশােহর, ২৪ পরগনা, মালদহ, রাজশাহি, ঢাকা, পাবনায় যে জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ বিরােধী আন্দোলন গড়ে তােলেন, তা বারাসত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

তিতুমিরের ঘােষণা : তিতুমির ঘােষণা করেন— 
(১) মূর্তিপূজা, ফয়তা (শ্রাদ্ধশান্তি), পির-পয়গম্বরের পূজার দরকার নেই; 
(২) ওয়াহাবি অনুগামীরা সুদে টাকা খাটাতে পারবে না; 
(৩) ওয়াহাবিদের দাড়ি রাখতে হবে ইত্যাদি। 

কৃষ্মদেব রায়ের সঙ্গে বিরােধ : বারাসত অঞ্চলে ওয়াহাবিদের প্রভাব খর্ব করার জন্য জমিদার কৃয়দেব রায় ওয়াহাবি মতাবলম্বীদের দাড়ির ওপর আড়াই টাকা কর ধার্য করলে এবং তিতুমিরের গ্রাম আক্রমণ করে মসজিদে আগুন লাগিয়ে দিলে তার সঙ্গে তিতুমিরের সংঘর্ষ বাধে।

বাঁশের কেল্লা : ইতিমধ্যে জমিদারদের বিরুদ্ধে সাফল্যলাভ করার পর তিতুমির নিজেকে ‘বাদশাহ’ বলে ঘােষণা করে বাদুড়িয়া থানার নিকটস্থ নারকেলবেড়িয়া গ্রামে একটি বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন এবং সেখানে সদর দপ্তর স্থাপন করেন। তার অনুগামী মৈনুদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী, গােলাম মাসুমকে প্রধান সেনাপতি, মিশকিন শাহকে প্রধান উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়। তিতুমির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় খাজনা আদায় শুরু করেন। 

বিদ্রোহের অবসান : জমিদার ও নীলকরদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে ১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এক বিশাল সেনাবাহিনী পাঠিয়ে কামানের আঘাতে বাঁশের কেল্লা উড়িয়ে দেয়। তিতুমির যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মতাে মৃত্যুবরণ করেন, তার ৮০০ জন অনুগামী বন্দি হয় এবং গােলাম মাসুমের ফাসি হয়। তিতুমিরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বারাসত বিদ্রোহের অবসান হয়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment