বচনের ব্যাপ্যতার নিয়মটি কী? A বচনের ব্যাপ্যতার ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তগুলি কী? উদাহরণসহ আলােচনা করাে।

বচনের ব্যাপ্যতার নিয়মটি কী? A বচনের ব্যাপ্যতার ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তগুলি কী? উদাহরণসহ আলােচনা করাে। Class 12 | Philosophy (বচন) 8 Marks

উত্তর:

A বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম 

A বচনে শুধুমাত্র উদ্দেশ্য পদটি ব্যাপ্য, বিধেয় পদটি অব্যাপ্য।

উদাহরণ:

সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)।

ব্যাখ্যা:

এই সামান্য-সদর্থক বচনটির ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, মানুষ নামক উদ্দেশ্য পদটি তার পরিপূর্ণ ব্যাক্তার্থ, অর্থাৎ সমস্ত মানুষ জাতিকে উল্লেখ করেছে বলেই তা ব্যাপ্য হয়েছে। এক্ষেত্রে বিধেয় পদটি সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য বলে উদ্দেশ্য পদটি ব্যাপ্য। কিন্তু বিধেয় তথা মরণশীল পদটি তার সম্পূর্ণ ব্যাক্তার্থ বা পরিমাপকে নির্দেশ করতে সমর্থ হয়নি, তাই অব্যাপ্য হয়েছে। কারণ, মরণশীলতা শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযােজ্য নয়, তা অন্য জীবের ক্ষেত্রেও প্রযােজ্য। সে কারণেই এই পদটির দ্বারা তার আংশিক পরিমাণ তথা আংশিক ব্যাক্তার্থকেই উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং, A বচন শুধুমাত্র উদ্দেশ্যকেই ব্যাপ্য করে, বিধেয়কে নয়।

উদাহরণ সহ A বচনে ব্যাপ্যতার ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত 

কিছু ব্যতিক্রমী A বচনের দৃষ্টান্ত আছে, সেক্ষেত্রে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় উভয়পদই ব্যাপ্য হতে পারে। 

[1] সংজ্ঞাবাচক পদের ক্ষেত্রে A অচলের উভয়পদই ব্যাপ্য।

উদাহরণ: সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব (A)।

ব্যাখ্যা: এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য তথা মানুষ বলতে আমরা যা বুঝি, বিধেয় তথা বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব বলতেও তাই বুঝি। তাই এই দুটি পদের ব্যাক্তার্থ বা পরিমাণ একই। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য পদটির সংজ্ঞা থেকেই বিধেয় পদটি নিঃসৃত হয়েছে, তাই উদ্দেশ্য তথা মানুষ এবং বিধেয় তথা বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব— উভয়পদই ব্যাপ্য। 

[∵ মানুষ = বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব, সুতরাং মানুষ পদটি ব্যাপ্য হলে, বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীবও ব্যাপ্য হবে।] 

[2] বিশিষ্ট নামবাচক পদের ক্ষেত্রে A বচনের উভয়পদই ব্যাপ্য।

উদাহরণ: কলকাতা হয় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য

ব্যাখ্যা: এরুপ বচনটিতে উদ্দেশ্য পদ তথা কলকাতা বলতে আমরা যা বুঝি, বিধেয় পদ তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী বলতেও আমরা সেই একই বিষয়কেই বুঝি। এই দুটি পদই তাই বিশিষ্ট নামবাচক সমার্থক পদরূপে গণ্য। তাই এই দুটি পদই ব্যাপ্যরুপে গণ্য। 

[∵ কলকাতা = পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী, 

∴ কলকাতা ব্যাপ্য হলে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী পদটিও ব্যাপ্য হবে।]

[3] পুনরুক্তির ক্ষেত্রে A বচনের উভয়পদই ব্যাপ্য।

উদাহরণ: সকল বিড়াল হয় মার্জার (A)।

ব্যাখ্যা: এক্ষেত্রে, উদ্দেশ্য তথা বিড়াল পদটি তার সম্পূর্ণ ব্যাক্তার্থ (পরিমাণ)-কে উল্লেখ করতে পেরেছে বলেই এই পদটি ব্যাপ্য হয়েছে। অন্যদিকে, উদ্দেশ্য তথা বিড়াল এবং বিধেয় তথা মার্জার পুনরুক্তিমূলক সমার্থক পদ এই দুটি পদের ক্ষেত্রেই পরিপূর্ণ ব্যাক্তার্থ উল্লেখ করা সম্ভব হয়েছে। সেকারণেই এক্ষেত্রে উভয়পদই ব্যাপ্যরুপে গণ্য।

[∵ বিড়াল = মার্জার, সুতরাং বিড়াল ব্যাপ্য হলেও মার্জার-ও ব্যাপ্য হবে।]

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment