ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত | Class 8 Bengali Channachara Question Answer | Wbbse

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 8 এর ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা ছন্নছাড়া কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

ছন্নছাড়া

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত


হাতে কলমে

১.১ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের লেখা দুটি বইয়ের নাম, ‘বেদে’ ও ‘বিবাহের চেয়ে বড়ো’।

১.২ তিনি কোন পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কল্লোল পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।

২.১ কবি প্রথমে গাছটিকে কেমন অবস্থায় দেখেছিলেন?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি প্রথমে গাছটিকে রুক্ষ, রিক্ত, জীর্ণ অবস্থায় দেখেছিলেন। কঙ্কালসার এই গাছটির লতাপাতা, ছাল-বাকল কিছুই ছিল না।

২.২ ‘ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না।’ – ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ কী?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় রাস্তার মাঝখানে ছন্নছাড়া কয়েকটা বেকার যুবক আড্ডা দিচ্ছিল তাই ট্যাক্সি ড্রাইভার সেদিকে যেতে চায়নি। কারণ, তার আশঙ্কা ওদিকে গেলেই ছন্নছাড়া যুবকের দল গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে।

২.৩ ‘তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।’ –সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়ানোর কারণ কী?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় ছন্নছাড়া যুবকরা সড়কের মাঝখানে পথে এসে দাঁড়িয়েছে কারণ, তাদের খেলার মাঠ নেই, বাড়িতে ঘর নেই, এমনকি আড্ডা দেওয়ার জন্য মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে রকটাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

২.৪ ‘আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব।’ –কবির ‘ওখান’ দিয়েই যেতে চাওয়ার কারণ কী?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবির ট্যাক্সি ড্রাইভার ছন্নছাড়া যুবকদের ভয়ে ওই পথ দিয়ে যেতে রাজি না হলেও কবি ওইপথে যেতে বলেছেন কারণ, ওখান দিয়ে শর্টকাট হয়।

২.৫ ‘ওই দেখতে পাচ্ছেন না ভিড়?’ ওখানে কীসের ভিড়?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ‘ওখানে’ বা উল্লিখিত স্থানে একটা বেওয়ারিশ ভিখারি গাড়িচাপা পড়েছিল। সেটা দেখতেই লোকের ভিড় জমেছিল।

২.৬ ‘কে সে লোক?’-‘লোক’ টির পরিচয় দাও।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ‘লোক’ বলতে একজন নিরীহ বেওয়ারিশ ভিখারিকে বোঝানো হয়েছে।

২.৭ ‘চেঁচিয়ে উঠল সমস্বরে ……… — কী বলে তারা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় ছন্নছাড়া যুবকের দল সকলে সমস্বরে প্রাণ আছে, এখনও প্রাণ আছে বলে চেঁচিয়ে উঠল।

২.৮ ‘আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি’ – কবি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন কেন ?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় গাড়িচাপা পড়া ভিখারির রক্তের দাগ যাতে কবির জামাকাপড়ে লেগে না যায় তাই তিনি গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন ।

২.৯ ‘ফিরে আসতেই দেখি……..’ ফেরার পথে কবি কী দেখতে পেলেন?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি ফেরার পথে দেখলেন গলির মোড়ের সেই শুকনো গাছটায় বেরিয়েছে হাজার হাজার সোনালি কচি পাতা যা মর্মরিত হচ্ছে বাতাসে। ফুটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল, যার সুগন্ধে উড়ে এসেছে রং বেরঙের পাখি ।

২.১০ ‘অবিশ্বাস্য চোখে দেখলুম’ – কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর কেন ?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় সকালে দেখা রুক্ষ, শুষ্ক, প্ৰাণহীন গাছটিতে ফেরার পথে কবি সবুজের সমারোহ দেখেছিলেন। অনুভব করেছিলেন প্রাণের অস্তিত্ব। এই রুক্ষ, শুষ্ক গাছের মধ্যে অনন্ত প্রাণের প্রকাশ দেখে কবির চোখে ঘোর লেগেছিল।

৩. ১ ‘ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।’
কবির যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি ট্যাক্সি করে যে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন সেই পথে একটি রিক্ত, জীর্ণ, ছাল-বাকল হীন গাছ ছিল। যেটাকে দেখে মনে হচ্ছিল গাছের প্রেতচ্ছায়া। আর একটু দূরে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিল কিছু ছন্নছাড়া যুবক। তাদের উৎপাতের আশঙ্কায় ড্রাইভার সেদিকে গাড়ি ঘোরাতে না চাইলেও, কবি সেদিক দিয়েই যেতে বলেন এবং নিজেই ডেকে তাদের লিফট দেন। পরবর্তীতে দেখা যায় সমাজের চোখে ছন্নছাড়া এই যুবকের দল গাড়ি চাপা পড়া একটা বেওয়ারিশ ভিখারির জীবন বাঁচাতে তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। আর কবি নিজের শালীনতা রক্ষার খাতিরে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। ফিরে আসার সময় কবি দেখেন গলির মোড়ে সেই রিক্ত, জীর্ণ গাছটিতে সবুজের সমারোহ তথা প্রাণের অস্তিত্ব।

৩. ২ ‘গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে
গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া – ‘
একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেও কেন পরের পঙ্ক্তিতে তাকে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলা হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর:-
গাছ বলতে আমরা বুঝি সবুজ, সতেজতা তথা প্রাণের অস্তিত্ব। তবে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি গলির মোড়ে যে গাছটি দেখেছেন তা দেখে মনে হয়েছে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’।আঁকাবাঁকা শুকনো কতগুলি কাঠির কঙ্কাল শূন্যের দিকে এলোমেলো তুলে দেওয়া। রুক্ষ, রুষ্ট, রিক্ত, জীর্ণ গাছটির লতা নেই, পাতা নেই, ছাল – বাকল নেই। কোথাও এক আঁচড় সবুজের প্রতিশ্রুতি নেই, নেই একবিন্দু সরসের সম্ভবনা।একারণে এই প্রাণহীন কঙ্কালসার গাছটিকে কবি ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলে মনে করেছেন।

৩.৩ ‘ওই পথ দিয়ে
জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।’
এভাবে কবিতায় উত্তমপুরুষের রীতি কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, অন্তত পাঁচটি পক্তি উদ্ধৃত করে বুঝিয়ে দাও।
উত্তর:-
কবিতায় থাকা উত্তরপুরুষের রীতিতে লেখা পাঁচটি পঙক্তি হল, –
১। “ওই পথ দিয়ে / জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।”
২। “আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব।”
৩। “ওদের কাছাকাছি হতেই মুখ বাড়িয়ে / জিজ্ঞেস করলুম, “
৪। “আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি।
৫। “ফিরে আসতেই দেখি”

9.8 ‘কারা ওরা?’
— কবিতা অনুসরণে ওদের পরিচয় দাও ?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় ওরা আমাদের দেশের হাজার হাজার বেকার যুবকদের প্রতিনিধি। সমাজের চোখে যারা নীতিহীন, আদর্শহীন ‘ছন্নছাড়া’ যুবক। ট্যাক্সি ড্রাইভারের মতে ওরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা। যাদের আইন – কানুন, বিনয়- ভদ্রতা, শ্লীলতা – শালীনতা কিছুই নেই। ওদের অফিসে চাকরি নেই, কারখানায় কাজ নেই, মেলায় খেলায় টিকিট নেই। প্রেরণা জাগানোর প্রেম নেই, ওদের প্রতি কারও দরদ নেই। তবুও কবিতার পরবর্তী অংশে দেখা যায় এই ছন্নছাড়া যুবকদের মানবিকতা বোধ আছে। তারা আগেপিছে না ভেবে বেওয়ারিশ ভিখারির প্রাণ বাঁচাতে তৎপর হয়। আর তথাকথিত সভ্য সমাজের প্রতিনিধি কবি নিজের শালীনতা বাঁচাতে গাড়ি থেকে নেমে দাড়ায় ৷

৩.৫ ‘ঘেঁষবেন না ওদের কাছে।’
— এই সাবধানবাণী কে উচ্চারণ করেছেন? ‘ওদের’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে? ওদের কাছে না ঘেঁষার পরামর্শ দেওয়া হলো কেন?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন ট্যাক্সি ড্রাইভার।

ওদের বলতে এখানে রাস্তায় আড্ডা দেওয়া ছন্নছাড়া যুবকদের বোঝানো হয়েছে। যাদের পরনে চোঙা প্যান্ট, চোখা জুতো। যাদের মেজাজ রোখা।

ট্যাক্সি ড্রাইভারের মতে এই ছন্নছাড়া যুবকদের রীতি – নীতি, বিনয় – ভদ্রতা, শালীনতা কিছুই নেই। এদের কোনো কাজ নেই। এরা সারাক্ষণ রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয় আর গাড়ি দাড় করিয়ে লিফট চায়। যার ফলে ড্রাইভার ও যাত্রী উভয়কেই হেনস্থা হতে হয়। তাই ট্যাক্সি ড্রাইভার কবিকে ওদের কাছে না ঘেঁষার পরামর্শ দিয়েছে।

৩.৬ ‘তাই এখন এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে।’
— এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের জীবনের এমন পরিণতির কারণ কবিতায় কীভাবে ধরা পড়েছে তা নির্দেশ করো।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের কথা বলা হয়েছে ।

ট্যাক্সি ড্রাইভারের মতে ওরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা।যাদের আইন – কানুন, বিনয়- ভদ্রতা, শ্লীলতা – শালীনতা কিছুই নেই। ওদের অফিসে চাকরি নেই, কারখানায় কাজ নেই, মেলায় খেলায় টিকিট নেই। প্রেরণা জাগানোর প্রেম নেই, ওদের প্রতি কারও দরদ নেই। ওদের আড্ডার জায়গা মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে রকটুকু পর্যন্ত লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। তাই ওরা দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে। এখানেই ওদের আড্ডা। আসলে ওদের জীবনের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী অপরিকল্পিত সমাজ ব্যবস্থা। যেখানে তারা শিক্ষার শেষে কাজের সুযোগ না পেয়ে বেকার জীবন কাটায়। তথাকথিত সভ্য সমাজ এই বেকার যুবকদের ছন্নছাড়া আখ্যা দিয়ে বাকা নজরে দেখলেও তাদের জীবনের এই পরিণতির জন্য সমাজ ব্যবস্থাই দায়ী একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

৩.৭ ‘জিজ্ঞেস করলুম তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে ?”
— প্রশ্নবাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার কোন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? তাঁর এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার পর কীরূপ পরিস্থিতি তৈরি হলো?
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত প্রশ্ন বাক্যটিতে প্রশ্নকর্তার ছন্নছাড়া যুবকদের প্রতি সহানুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। কবিতার কথক উদ্ধৃত প্রশ্নটি করার পর ছন্নছাড়া যুবকের দল উল্লাসে চেঁচিয়ে ওঠে, সিটি দেয়। তারা ট্যাক্সিতে চেপে বসে, পানসি বেলঘড়িয়া যেতে চায়। কিছুদূর গিয়ে তারা গাড়ি চাপা পড়া এক বেওয়ারিশ ভিখারির প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য তাকে ট্যাক্সিতে তুলে নেয়। আর দুর্ঘটনাগ্রস্ত ভিখারির রক্তের দাগ যাতে নিজের পোশাকে না লাগে তাই শালীনতা বাঁচাতে লেখক নেমে পড়েন গাড়ি থেকে৷

৩.৮ ‘প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে।’
— এই দুর্মর আশাবাদের ‘তপ্ত শঙ্খধ্বনি’ কবিতায় কীভাবে বিঘোষিত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উত্তর:-
কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতার প্রথমাংশে রিক্ত, জীর্ণ গাছ ও ট্যাক্সি ড্রাইভারের বর্ণনায় ছন্নছাড়া যুবকদের জীবন যেন নৈরাশ্যতার বার্তা বহন করে। সমাজের চোখে এই ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের কোনো কিছুতেই যেন অধিকার নেই। কিন্তু তাদের মানবিকতা বোধ আছে, তাদের মনুষ্যত্ব আছে তাইতো কোনো বেওয়ারিশ ভিখারির জীবন বাঁচাতে তারা মরিয়া হয়ে ওঠে। তার শরীরে প্রাণের অস্তিত্ব পেলে আনন্দিত হয়। কবির মতো সমাজের তথাকথিত সভ্য মানুষেরা নিজেদের শালীনতার দোহাই দিয়ে নীচু তলার মানুষের বিপদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর নেই রাজ্যের বাসিন্দা, সবকিছু থেকে বঞ্চিত ছন্নছাড়া আখ্যা পাওয়া যুবকের দল বেওয়ারিশ ভিখারির পাশে দাড়ায়। তারা বোঝে জীবনের মূল্য। তাইতো কবি উপলব্ধি করেন এই ছন্নছাড়া যুবকদের কিছু না থাকলেও প্রাণ আছে। প্রাণ থাকলেই মান আছে। আর আছে নিজেদের অস্তিত্বের অধিকার।যা কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা। এভাবেই সমস্ত নৈরাশ্য ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও প্রাণের অস্তিত্বের জয় ঘোষিত হয়েছে আলোচ্য কবিতায়। কবির উপলব্ধিতে যা হয়ে উঠেছে দুর্মর আশাবাদের ‘তপ্ত শঙ্খধ্বনি’।

৩.৯ কবিতায় নিজের ভব্যতা ও শালীনতাকে বাঁচাতে চাওয়া মানুষটির ‘ছন্নছাড়া’-দের প্রতি যে অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি তথাকথিত সভ্য সমাজের প্রতিনিধি। আর ছন্নছাড়া বেকার যুবকের দল সমাজের কাছে ব্রাত্য। তবুও তাদের মধ্যে মানবিকতা বোধ আছে। তাইতো কবির মতো সভ্য সমাজের প্রতিনিধিরা গাড়ি চাপা পড়া বেওয়ারিশ ভিখারির রক্তের দাগ থেকে বাঁচতে গাড়ি থেকে নেমে দাড়ায়। আর প্রতিবন্ধকতা ও নৈরাশ্যের মাঝেও ছন্নছাড়া যুবকের দল বেওয়ারিশ ভিখারির প্রাণ বাঁচাতে তৎপর হয়। সভ্য সমাজের প্রতিনিধি হয়ে কবি নিজের ভব্যতা ও শালীনতা রক্ষার তাগিদে বেওয়ারিশ ভিখারির বিপদে সাহায্যের হাত বাড়াতে পারেননি। কিন্তু দূর থেকে ছন্নছাড়া বেকার যুবকদের প্রতি কবির সহানুভূতি তথা গভীর শ্রদ্ধার মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। কবির মনে হয়েছে এই যুবকরা নেই রাজ্যের বাসিন্দা হলেও তথাকথিত সভ্য সমাজের চেয়ে মানবিক দিক দিয়ে এদের অবস্থান অনেক উঁচুতে।

৩.১০ কবিতায় ‘গাছটি’ কীভাবে প্রাণের প্রতীক হয়ে উঠেছে তা আলোচনা করো।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি দুবার গাছের প্রসঙ্গ এনেছেন। প্রথম যখন গাছটিকে কবি দেখেন তখন তার অবস্থা ছিল রিক্ত, জীর্ণ, ছাল-বাকল হীন। তাতে না ছিল সবুজের অস্তিত্ব, না ছিল সরসতা। যেটাকে দেখে মনে হচ্ছিল গাছের প্রেতচ্ছায়া। কিন্তু কবি যখন দেখলেন এক বেওয়ারিশ ভিখারির প্রাণ বাঁচানোর জন্য ছন্নছাড়া যুবকদের আপ্রাণ চেষ্টা, তখন তিনি আবার গাছের প্রসঙ্গ আনেন। কবির ভাবনায় সেই প্রেতচ্ছায়ার মতো গাছটি ভরে ওঠে ফুলে, ফলে, সবুজ পাতায় আসলে প্রথমে গাছের রূপ যেন আশাহীন, রুক্ষ, রিক্ত, ছন্নছাড়া বাস্তব সমাজের প্রতীক। আর শেষে এই গাছই যেন প্রাণের, আশাবাদের, আপন অস্তিত্বের প্রতীক।

৩.১১ ‘এক ক্ষয়হীন আশা
এক মৃত্যুহীন মর্যাদা।’
— ‘প্রাণকে’ কবির এমন অভিধায় অভিহিত করার সঙ্গত কারণ নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:-
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত রচিত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় কবি একদল যুবকের কথা বলেছেন সমাজ যাদের আখ্যা দিয়েছে ছন্নছাড়া নামে। খেলার টিকিট থেকে শুরু করে, কলেজের সিট, হাসপাতালের বেড কিছুই এদের জন্য নয়। এদের জীবনে প্রেরণা জোগানো প্রেম নেই, নেই অনুসরণ করার মতো নেতা। এরা যেন রুক্ষ, রুষ্ট রিক্ত, জীর্ণ সেই গাছের মতো। সমাজ যাদের বাকা নজরে দেখে। সভ্য সমাজের প্রতিনিধিরা এদের থেকে দূরে থাকতে চায় ৷

কিন্তু এই যুবকরাই অনেক বেশি মানবিকতা বোধ সম্পন্ন। প্রাণের মর্ম তারা বোঝে। তাইতো বেওয়ারিশ ভিখারির প্রাণ বাঁচাতে তারা একজোট হয়ে ছোটে। তারা যেন তথাকথিত সভ্য সমাজকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয় যতক্ষণ প্রাণ, ততক্ষণই আশায় বুক বাঁধা যায়। আপাত দৃষ্টিতে এদের রুক্ষ, অশালীন বলে মনে হলেও এরাই প্রাণকে মর্যাদার সাথে বরণ করে নিতে জানে এবং এরা জানে জীবন মানেই মান, সমস্ত বাধা নিষেধের বাইরে অস্তিত্বের অধিকার। জীবন যেন ক্ষয়হীন এক আশা যা আমৃত্যু মর্যাদার সহিত বাঁচার ইঙ্গিত দেয়।

এলোমেলো, ছন্নছাড়া, নৈরাজ্যে, বাসিন্দে, শালীনতা, আত্মীয়তা, শঙ্খধ্বনি, পত্রপুঞ্জে

উত্তর:-
এলোমেলো = এ – লো – মে – লো (মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত)।
ছন্নছাড়া = ছন্ – নো – ছা – ড়া ( রুদ্ধ + মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত)।
নৈরাজ্যে = নৈ – রাজ্ – জ্যে (মুক্ত + রুদ্ধ + মুক্ত)।
বাসিন্দে = বা – সিন্ – দে (মুক্ত + রুদ্ধ + মুক্ত)।
শালীনতা = শা – লী – ন – তা (মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত)।
আত্মীয়তা = আৎ – তী – য় – তা (রুদ্ধ + মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত )।
শঙ্খধ্বনি = শ – খো – ধ্বনি (রুদ্ধ + মুক্ত + মুক্ত + মুক্ত)।
পত্রপুঞ্জে = পৎ – রো – পুন্ – জে (রুদ্ধ + মুক্ত + রুদ্ধ + মুক্ত)।

বর্তমান, ভদ্রতা, সম্ভাষণ, গতি, ভিখিরি, ভব্যতা, রুষ্ট, জিজ্ঞেস, পিছে

উত্তর:-
বর্তমান = বৃৎ + শানচ (মান)
ভদ্রতা = ভদ্র + তা
সম্ভাষণ = সম্ – ভাস্ + অনট
গতি = গম্‌ + ক্তি
ভিখিরি = ভিখ + আরি (ইরি)
ভব্যতা = ভূ + য + তা
রুষ্ট = রুষ্ + ত
জিজ্ঞেস = জ্ঞা-সন্ + এ + অ
পিছে = পিছ্ + এ

জুতো, বাসিন্দে, ক্ষেত, চোখ, কদ্দুর, ভিখিরি।

উত্তর:-
জুতো = জুতা > জুতো (স্বরসংগতি)।
বাসিন্দে = বাসিন্দা > বাসিন্দে (স্বরসংগতি)।
ক্ষেত = ক্ষেত্র > ক্ষেত (ধ্বনিলোপ)।
চোখ = চক্ষু > চোখ (সমীভবন)।
কদ্দুর =কত দূর >কদ্দুর (সমীভবন)।
ভিখিরি = ভিখারি > ভিখিরি (স্বরসংগতি)।

প্রেতচ্ছায়া, ছাল-বাকল, ক্ষুধাহরণ, সোল্লাসে, স্নেহার্দ্র, শঙ্খধ্বনি

উত্তর:-
প্রেতচ্ছায়া = প্রেতের ছায়া। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)
ছাল-বাকল = ছাল ও বাকল। (সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস)
ক্ষুধাহরণ = ক্ষুধাকে হরণ। (কর্ম তৎপুরুষ সমাস)
সোল্লাসে = উল্লাসের সহিত বর্তমান। (সহাৰ্থক বহুব্রীহি সমাস)
স্নেহার্দ্র = স্নেহ দ্বারা আর্দ্র। (করণ তৎপুরুষ সমাস)
শঙ্খধ্বনি = শঙ্খের ধ্বনি। (সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস)

প্রতিশ্রুতি, বেওয়ারিশ, অনুসরণ, প্রচ্ছন্ন, অভ্যর্থনা, অধিকার

উত্তর:-
প্রতিশ্রুতি = প্রতি-উপসর্গ।
বেওয়ারিশ = বে-উপসর্গ।
অনুসরণ = অনু-উপসর্গ।
প্রচ্ছন্ন = প্র-উপসর্গ ।
অভ্যর্থনা = অভি-উপসর্গ।
অধিকার = অধি-উপসর্গ।

৯.১ ওই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। (জটিল বাক্যে )
উত্তর:- ওই যে পথ সেই পথ দিয়ে জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে।

৯.২ দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর:-
দেখছেন না ছন্নছাড়া কটা বেকার ছোকরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং আড্ডা দিচ্ছে।

৯.৩ কারা ওরা? (প্রশ্ন পরিহার করো)
উত্তর:-
ওদের পরিচয় দাও।

৯.৪ ঘেঁষবেন না ওদের কাছে। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর:-
ওদের কাছে ঘেঁষা থেকে বিরত থাকুন ।

৯.৫ একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তূপ। (না-সূচক বাক্যে )
উত্তর:-
একটা ভিজে বারুদের স্তুপ যেখানে কোনো স্ফুলিঙ্গ নেই ।

৯.৬ জিজ্ঞেস করলুম, তোমাদের ট্যাক্সি লাগবে? (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর:-
তাদের ট্যাক্সি লাগবে কি না জিজ্ঞাসা করা হল।

৯.৭ আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি। (জটিল বাক্যে
উত্তর:-
আমরা এমন ট্যাক্সি খুঁজছি যেটা খালি।

৯.৮ দেখতে দেখতে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে উঠেছে ফুল (ক্রিয়ার কাল নির্দেশ করো)
উত্তর:-
পুরাঘটিত বর্তমান কাল

আরো পড়ুন

বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse

অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse

বনভোজনের ব্যাপার প্রশ্ন উত্তর | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় | Bonbhojoner Bapar Question Answer | Class 8 | Wbbse

চন্দ্রগুপ্ত নাটকের প্রশ্ন উত্তর | দ্বিজেন্দ্রলাল রায় | Chandragupta Question Answer | Class 8 | Wbbse

সবুজ জামা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Sobuj Jama Question Answer | Class 8 | Wbbse

পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse

চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Chithi Class 8 Question Answer | Wbbse

একটি চড়ুই পাখি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | তারাপদ রায় | Ekti Chorui Pakhi Kobita Question Answer | Class 8 | Wbbse

পথচলতি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় | Class 8 Bengali Pathchalti Question Answer | Wbbse

গাছের কথা প্রশ্ন উত্তর | জগদীশচন্দ্র বসু | Class 8 Bengali Gacher Kotha Question Answer | WBBSE

ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত | Class 8 Bengali Channachara Question Answer | Wbbse

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment