টিকিটের এলবাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর | সুন্দর রামস্বামী | Tikiter Album Question Answer | Class 8 | Wbbse

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 8 এর টিকিটের এলবাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে সুন্দর রামস্বামীর লেখা টিকিটের এলবাম গল্প রয়েছে। গল্পের শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

টিকিটের এলবাম

সুন্দর রামস্বামী


হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর

১.১ সুন্দর রামস্বামী কোন ভাষার লেখক?
উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী তামিল সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ লেখক।

১.২ তিনি কোন ছদ্মনামে লিখতেন?
উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী পদুবিয়া ছদ্মনামে লিখতেন।

২.১. ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের লেখক কে?
উত্তর:-
‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের লেখক সুন্দর রামস্বামী।

২.২. মূল গল্পটি কোন ভাষায় রচিত?
উত্তর:- ‘টিকিটের অ্যালবাম’ -এর মূল গল্পটি তামিল ভাষায় রচিত।

২.৩. গল্পটিতে মোট কটি চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়?
উত্তর:- ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে প্রধান চরিত্র রয়েছে ছয়টি। সেগুলি হলো- রাজাপ্পা, নাগরাজন, কৃষ্ণান, কামাক্ষী, আল্লু ও রাজাপ্পার মা। এছাড়াও পার্বতী, নাগরাজনের কাকা ও বাবার উল্লেখ রয়েছে।

২.৪. মেয়েদের পক্ষ থেকে কে নাগরাজনের থেকে অ্যালবামটি চেয়ে নিয়ে যেত?
উত্তর:- মেয়েদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে ডানপিটে মেয়ে পার্বতী নাগরাজনের থেকে অ্যালবামটি চেয়ে নিয়ে যেত।

২.৫. রাজাপ্পা কীভাবে তার অমূল্য ডাকটিকিটগুলি সংগ্রহ করত ?
উত্তর:-
মৌমাছিরা যেভাবে মধু সংগ্রহ করে ঠিক তেমনভাবেই রাজাপ্পা খুব কষ্ট করে টিকিট জোগাড় করত। সে ভোর বেলায় অন্যান্য টিকিট সংগ্রাহকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেরিয়ে পড়ত।

২.৬. নাগরাজনের অ্যালবামটি তাকে কে উপহার দিয়েছিলেন?
উত্তর:- নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে তাকে উপহার হিসেবে অ্যালবামটি পাঠিয়েছিলেন।

২.৭ সেই অ্যালবামের প্রথম পাতায় কী লেখা ছিল?
উত্তর:-
নাগরাজনের অ্যালবামের প্রথম পাতায় মোটা মোটা অক্ষরে নাগরাজনের কাকা লিখে দিয়েছিলেন ভাইপোর নাম, ‘এস নাগরাজন’ এর নীচে লেখা ছিল,

” এই অ্যালবামটা চুরি করতে চেষ্টা করছ যে নির্লজ্জ হতভাগা, তাকে বলছি…”। “ওপরে আমার নামটা দেখেছ? এটা আমার অ্যালবাম। এটা আমার এবং যতদিন ঘাসের রং সবুজ আর পদ্মফুল লাল, সূর্য পূর্বে উঠবে আর পশ্চিমে অস্ত যাবে একমাত্র আমারই থাকবে।

৩.১ নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি সকলে আকৃষ্ট হয়ে পড়ল কেন?
উত্তর:- ‘সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে যে টিকিটের অ্যালবামটা পাঠিয়েছিল সেটা অপরূপ সুন্দর ছিল। কোনো স্থানীয় দোকানে অমন অ্যালবাম পাওয়া যায় না। তাই স্কুলের সবাই রাজাপ্পার পুরনো টিকিটের অ্যালবাম ছেড়ে নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। ছেলেরা নাগরাজনের চারপাশে জড়ো হয়ে অ্যালবামটা চোখ দিয়ে গিলে খেত যতক্ষণ না সকালের ক্লাসের জন্য স্কুলের ঘন্টা বাজত; দুপুরের খাবার ঘন্টা পড়লেই আবার সবাই ওর চারপাশে ঘোরাঘুরি করত। নাগরাজন একটুও অধৈর্য না হয়ে ওদের সবাইকে অ্যালবামটা দেখাতো।

৩.২ ‘কেটে পড় হিংসুটে পোকা!’ — বক্তা কে? কাকে সে এমন কথা বলেছে? তুমি কি এই কথার মধ্যে কোনো যুক্তি খুঁজে পাও?

উত্তর:-

বক্তা কে?:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা কৃষ্ণান। কাকে বলেছে? :- কৃষ্ণান রাজাপ্পাকে একথা বলেছিল।

এমন মন্তব্যের যুক্তি:- আলোচ্য গল্পে দেখা যায় আগে রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবাম জনপ্রিয় থাকলেও। নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোর পর নাগরাজনের অ্যালবামের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। অ্যালবামটি ছিল অপরূপ সুন্দর, কোনো স্থানীয় দোকানে অমন অ্যালবাম ছিল না তাই নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি সকলে আকৃষ্ট হয়। নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের প্রতি সকলে এতটাই আকৃষ্ট হয় যে, তার অ্যালবামের প্রথম পাতার লেখাটি সকলে তাদের অ্যালবামে টুকে নেয়। মেয়েরাও তাদের বই আর খাতায় সেটা লিখে নেয়। এতে রাজাপ্পা রেগে গিয়ে তাদের নকল নবীশ বলে। এই কথার জবাবে কৃষ্ণান তার উদ্দেশ্যে, “কেটে পড় হিংসুটে পোকা!” উক্তিটি করে।

৩.৩ ‘এদের সঙ্গে তর্ক করে লাভ নেই।’- উপলব্ধিটি কার? কী বিষয়ে তর্কের প্রসঙ্গ এসেছে? তর্ক করে লাভ নেই কেন?

উত্তর:-

উপলব্ধিটি কার?:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃত উপলব্ধিটি হয়েছিল রাজাপ্পার।

কী বিষয়ে তর্ক?:- রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবাম বেশি ভালো না নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবাম বেশি ভালো তা নিয়ে তর্কের প্রসঙ্গ এসেছে।

তর্ক করে লাভ নেই কেন?:- দীর্ঘদিন ধরে রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবাম স্কুলে খুব বিখ্যাত ছিল। রাজাপ্পা খুব কষ্ট করে টিকিট জোগাড় করত এবং টিকিট বিষয়ে সে বিশেষ অভিজ্ঞ ছিল। কিন্তু হঠাৎ নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোর পর নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। সকলে নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। রাজারা সকলকে বোঝাতে চেষ্টা করে তার অ্যালবাম বড়ো, তার টিকিটের অ্যালবামে যে সমস্ত মূল্যবান টিকিটের সংগ্রহ আছে নাগরাজনের অ্যালবামে সেসব নেই। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তবুও রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামকে হেয় করে। কৃষ্ণান ঠাট্টা করে বলে, রাজাপ্পার অ্যালবামটা ডাস্টবিনে রাখার যোগ্য। সঙ্গে ছেলেরা রাজাপ্পার অ্যালবামকে বাজে অ্যালবাম বলে চেঁচাতে থাকে। তখন রাজাপ্পা উপলব্ধি করে দুটি অ্যালবামের মধ্যে পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা ছাত্র-ছাত্রীদের নেই। তাই রাজাপ্পার মনে হয় অন্যদের সাথে তর্কে জড়ানো অর্থহীন।

৪.১ ‘হঠাৎ যেন ওর জনপ্রিয়তা কমে গেছে’ – কার এমন মনে হয়েছে? এই ‘জনপ্রিয়তা’ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ কী? কার মনে হয়েছে?:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্প থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে রাজাপ্পার এমন মনে হয়েছে।

উত্তর:-

‘জনপ্রিয়তা’ কমার কারণ:- রাজাপ্পার ডাকটিকিট সংগ্রহ করার শখ ছিল। সাধারণত শনি ও রবিবার সে নানা জায়গায় ছোটোছুটি করে টিকিট সংগ্রহ করত। স্কুলে রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামের খুব জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু ক্লাসের অন্য ছাত্র নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোয় গত তিনদিন ধরে সবাই নাগরাজনের চারপাশে ভিড় জমাতে শুরু করে। নাগরাজন একটুও অধৈর্য না হয়ে ওদের সবাইকে অ্যালবামটা দেখাত। এমনকি মেয়েরাও ওর অ্যালবাম দেখত। নাগরাজন যে বড্ড দাম্ভিক একথা রাজাপ্পা সবাইকে বোঝাবার চেষ্টা করলেও ওর কথায় কেউ কান দেয় না। তাই রাজাপ্পার মনে হয় ওর জনপ্রিয়তা হঠাৎ কমে গেছে।

৪.২ ‘কেউ রাজাপ্পার অ্যালবামের কথা উল্লেখও করত না, বা তাকে পাত্তাও দিত না।’ – সকলের এমন আচরণের কারণ গল্প অনুসরণে আলোচনা করো।

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে রাজাপ্পার ডাকটিকিট সংগ্রহ করার শখ ছিল। সাধারণত শনি ও রবিবার সে নানা জায়গায় ছোটোছুটি করে টিকিট সংগ্রহ করত। স্কুলে রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামের খুব জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু ক্লাসের অন্য ছাত্র নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোয় গত তিনদিন ধরে সবাই নাগরাজনের চারপাশে ভিড় জমাতে শুরু করে। নাগরাজন একটুও অধৈর্য না হয়ে ওদের সবাইকে অ্যালবামটা দেখাত। ছেলেরা নাগরাজনের চারপাশে জড় হয়ে অ্যালবামটা চোখ দিয়ে গিলে খেত। মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে ডানপিটে পার্বতী নাগরাজনের কাছে এসে মেয়েদের নাম করে অ্যালবামটা চাইত। নাগরাজন মলাট লাগিয়ে অ্যালবামটা তাকে দিত। এভাবে হঠাৎ নাগরাজনের সুন্দর টিকিটের অ্যালবামের এতটাই জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় যে, কেউ রাজাপ্পার অ্যালবামের কথা উল্লেখও করত না বা তাকে পাত্তাও দিত না।

৪.৩ স্কুলের ছেলেমেয়েদের নাগরাজন কীভাবে তার নিজের অ্যালবামটি দেখতে দিত?

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে সিঙ্গাপুর থেকে কাকার পাঠানো ডাকটিকিটের অ্যালবামটা নাগরাজন সবাইকে দেখতে দিত। যতক্ষণ না সকালের ক্লাসের জন্য স্কুলের ঘন্টা বাজত, ছেলেরা নাগরাজনের চারপাশে জড় হয়ে অ্যালবামটা চোখ দিয়ে গিলে খেত। দুপুরের খাবারের ঘন্টা পড়লেই আবার সবাই ওর চারপাশে ঘোরাঘুরি করত। আর সন্ধ্যাবেলা ওর বাড়ি ধাওয়া করত। নাগরাজন একটুও অধৈর্য না হয়ে ওদের সবাইকে অ্যালবামটা দেখাত। ও কেবল একটা শর্ত করেছিল যে – অ্যালবামটা যেন কেউ না ধরে। ও নিজের কোলে অ্যালবামটা লিখে পাতাগুলো উল্টাতো, আর সবাই প্রাণ ভরে দেখত। মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে ডানপিটে পার্বতী মেয়েদের নাম করে নাগরাজনের কাছে অ্যালবামটা চাইলে নাগরাজন মলাট লাগিয়ে তাকে অ্যালবামটা দিত । সব মেয়েদের দেখা হয়ে গেলে সন্ধ্যাবেলা অ্যালবামটা নাগরাজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হত।

৪.৪ ডাকটিকিট সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে রাজাপ্পার তীব্র আকর্ষণের যে পরিচয় গল্পে রয়েছে তা আলোচনা করো।
উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে ডাকটিকি সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে রাজাপ্পার তীব্র আকর্ষণের পরিচয় পাওয়া যায়। সে সাধারণত শনি আর রবিবার ছোটাছুটি করে টিকিট সংগ্রহ করত। যেমন করে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে সেভাবেই খুব কষ্ট করে রাজাপ্পা টিকিট জোগাড় করত। এটাই যেন ছিল ওর জীবন। সে ভোরবেলায় অন্যান্য টিকিট সংগ্রহকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেরিয়ে পড়ত। একটা রাশিয়ার টিকিটের সঙ্গে দুটো পাকিস্তানী টিকিটের বিনিময় করত। বিকেল বেলার স্কুলের সব বই এক কোণে ধুপ করে রেখে হাফপ্যান্টের পকেটে জল খাবার ঢুকিয়ে চোঁ চোঁ করে এক কাপ কফি গিলে আবার সে বেরিয়ে পড়ত টিকিটের সন্ধানে। কানাডার টিকিট জোগাড় করার জন্য চার মাইল দূরের কোনো ছেলের কাছে পৌঁছে যেত। নিজের টিকিটের অ্যালবামটাকে সে যে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো তা তার ডাকটিকিট সংগ্রহ করার আকর্ষণের মধ্যেই প্রকাশ পায়।

৪.৫ ‘চোরা দৃষ্টিতে অ্যালবামটা দেখত’ – সেই চোরা দৃষ্টিতে দেখা অ্যালবামটির কোন বিশেষত্বের কথা গল্পে রয়েছে?

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে দেখা যায় নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোর পর থেকে স্কুলে রাজাপ্পার জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামকে সবাই অবহেলা করতে থাকে। রাজাপ্পা সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, নাগরাজন বড্ড দাম্ভিক, কিন্তু ওর কথায় কেউ কান দেয় না। স্কুলের অন্য ছেলেরা নাগরাজনের অ্যালবাম দেখার জন্য তাকে ঘিরে থাকত। কিন্তু রাজাপ্পা হিংসায় নাগরাজনের অ্যালবামটার দিকে তাকিয়ে দেখতেও রাজি ছিল না। অবশ্য কৌতূহলবশত চোরা দৃষ্টিতে সে অ্যালবামটা দেখত। দেখে মনে হতো অপরূপ সুন্দর অ্যালবামটা। হয়তো তার মতো অত বেশি সংখ্যায় টিকিট নাগরাজনের অ্যালবামে নেই তবুও নাগরাজনের অ্যালবামটা যেন অদ্বিতীয়। কোনো স্থানীয় দোকানে অমন অ্যালবাম পাওয়া যায় না। ডাকটিকিট সম্পর্কে অভিজ্ঞ রাজাপ্পার চোখে নাগরাজনের অ্যালবামটির বিশেষত্বই যেন প্রমাণ করে নাগরাজনের অ্যালবামটি ছিল অনন্য।

৪.৬ নাগরাজনের প্রতি রাজাপ্পা কীভাবে ক্রমশই ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিল ?

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে দেখা যায় নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোর পর থেকে স্কুলে রাজাপ্পার জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সকলে নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। রাজাপ্পা সবাইকে বোঝাবার চেষ্টা করে যে, নাগরাজন বড্ড দাম্ভিক, কিন্তু কেউ ওর কথায় কান দেয় না। স্কুলের ছেলেমেয়েরা শুধুই নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের প্রশংসা করতে থাকে। এমনকি নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের প্রথম পাতার লেখাটিও নিজেদের খাতায় টুকে নেয়। সহপাঠীদের এইসব কাণ্ডকারখানা দেখে রাজাপ্পা রেগে গেলে কৃষ্ণান তাকে ‘হিংসুটে পোকা’ বলে। কৌতূহলবশত রাজাপ্পাও চোরা দৃষ্টিতে নাগরাজনের অ্যালবামের দিকে চেয়ে দেখে। তারও মনে হয় নাগরাজনের অ্যালবামটা সত্যিই অদ্বিতীয়। এই সমস্ত কারণেই রাজাপ্পা ক্রমশ নাগরাজনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিল। নাগরাজনের অ্যালবামের তুলনায় নিজের অ্যালবামটাকে তার আঁটি ছেঁড়া ন্যাকড়া বলে মনে হচ্ছিল।

৪.৭ ‘সন্ধ্যা বেলা রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়ি গেল।’ – কোন উদ্দেশ্য নিয়ে রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়িতে গিয়েছিল ? এর মধ্যে দিয়ে তার চরিত্রের কোন দিকটি ধরা পড়ে ?

উত্তর:-

রাজাপ্পার উদ্দেশ্য:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে দেখা যায় নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠানোর পর থেকে স্কুলে রাজাপ্পার জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। স্কুলের সহপাঠীরা নাগরাজনের অ্যালবামের প্রশংসা করতে থাকে আর রাজাপ্পার কপালে জোটে অপমান। একারণে রাজাপ্পা মানসিক অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছিল। এই সন্ধ্যাবেলা রাজাপ্পা বোঝাপড়া করার জন্য নাগরাজনের বাড়ি যায়। সে মনস্থির করে ফেলেছিল এই অসম্মান ও আর সহ্য করবে না। এছাড়াও রাজাপ্পার উদ্দেশ্য ছিল টিকিট সংগ্রহ সম্পর্কে অনভিজ্ঞ নাগরাজনকে ভুলিয়ে কম দামি টিকিট দিয়ে তার অ্যালবামের দামি টিকিটগুলো হাতিয়ে নেওয়া।

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য:- রাজাপ্পার নাগরাজনের বাড়ি যাওয়ার মধ্যে তার চরিত্রের ঈর্ষা, হিংসার ভাবটা ফুটে ওঠে। নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামের হঠাৎ এমন জনপ্রিয়তা রাজাপ্পা সহজভাবে মেনে নিতে পারে না। অর্থাৎ তার চরিত্রে সহনশীলতার অভাব রয়েছে। এছাড়াও ডাকটিকিট সম্পর্কে অভিজ্ঞ রাজাপা কমদামি টিকিট দিয়ে নাগরাজনের দামি টিকিটগুলো হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও করেছিল। এর মধ্যে দিয়ে তার চরিত্রের ধড়ি-বাজ দিকটিও প্রকাশিত হয়।

৪.৮ ‘রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে গেল।’- কোন পরিস্থিতিতে রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে উঠল?

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে নাগরাজনের কাকা সিঙ্গাপুর থেকে একটা সুদৃশ্য টিকিটের অ্যালবাম পাঠালে স্কুলে ধীরে ধীরে রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে এবং তাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়। এই বিষয়ে নাগরাজনের সাথে বোঝাপড়া করার জন্য রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু ঘরে কেউ না থাকায় রাজাপ্পা হিংসায় ও আবেগের বসে নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবামটি চুরি করে নিয়ে আসে। তবে পরবর্তীতে অ্যালবাম চুরি করায় বিবেকের দংশনে ও ভয়ে রাজাপ্পা স্থির থাকতে পারে না। নাগরাজনের বাবা পুলিশ সুপারের অফিসে কাজ করেন অর্থাৎ এই টিকিটের অ্যালবাম খোঁজার ব্যাপারে পুলিশও আসতে পারে এটা ভেবে সে আরও ভয় পায়। শেষে নিজেকে বাঁচানোর জন্য স্নানের ঘরে জলন্ত উনুনের মধ্যে রাজাপ্পা অ্যালবামটা ফেলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে অমূল্য সব টিকিট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এইভাবে সুন্দর অ্যালবাম ও অমূল্য সব ডাকটিকিট পুড়ে যাওয়ায় ডাকটিকিটপ্রেমী রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে গিয়েছিল।

৪.৯ ‘নাগরাজন হতবুদ্ধি হয়ে গেল।’ তার হতবুদ্ধি হয়ে পড়ার কারণ কী?

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে জানা যায় নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবাম চুরি করার পর রাজাপ্পা ভয়ে ও বিবেকের দংশনে স্থির থাকতে পারে না। এমনকি নিজেকে বাঁচানোর জন্য সে নাগরাজনের সুদৃশ্য অ্যালবামটা পুড়িয়ে দেয়, যা তাকে আরও বেশি মানসিক পীড়া দিতে থাকে। এরপর নাগরাজন তাদের বাড়িতে অ্যালবাম চুরির কথা বলতে আসলে নাগরাজনের মুখে দুঃখের ছাপ আর ফোলা দু চোখ দেখে রাজাপ্পা তার কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। রাজাপ্পার নিজেকে খুব দোষী মনে হচ্ছিল। সে বন্ধুর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছিল না। নাগরাজন কে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে কাজ হয় না। এরপর সে একটা কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাজাপ্পার তিল তিল করে গড়ে তোলা, প্রচুর ডাকটিকিটে সমৃদ্ধ, প্রাণের চেয়েও প্রিয় টিকিটের অ্যালবামটা সে বন্ধু নাগরাজনকে দিয়ে দেয়। নাগরাজন প্রথমে ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারে না। কারণ, নাগরাজন জানে এই টিকিটের অ্যালবাম ছাড়া সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকা রাজাপ্পার কাছে অত্যন্ত কষ্টকর। বন্ধুর এমন আশ্চর্য আচরণে নাগরাজন হতবুদ্ধি হয়ে যায়। রাজাপ্পা যে নিজের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্তের জন্যই এমনটা করেছিল তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

৪.১০ ‘কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হয়েই ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে রাজাপ্পার আত্মশুদ্ধি ঘটেছে।’ গল্পের ঘটনা বিশ্লেষণ করে উদ্ধৃতিটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।

উত্তর:- সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে জানা যায় নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবাম চুরি করার পর রাজাপ্পা ভয়ে ও বিবেকের দংশনে স্থির থাকতে পারে না। এমনকি নিজেকে বাঁচানোর জন্য সে নাগরাজনের সুদৃশ্য অ্যালবামটা পুড়িয়ে দেয়, যা তাকে আরও বেশি মানসিক পীড়া দিতে থাকে। এরপর নাগরাজন তাদের বাড়িতে অ্যালবাম চুরির কথা বলতে আসলে নাগরাজনের মুখে দুঃখের ছাপ আর ফোলা দু চোখ দেখে রাজাপ্পা তার কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। রাজাপ্পার নিজেকে খুব দোষী মনে হচ্ছিল। সে বন্ধুর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছিল না। নাগরাজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে কাজ হয় না। এরপর সে একটা কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাজাপ্পার তিল তিল করে গড়ে তোলা, প্রচুর ডাকটিকিটে সমৃদ্ধ, প্রাণের চেয়েও প্রিয় টিকিটের অ্যালবামটা সে বন্ধু নাগরাজনকে দিয়ে দেয়। নাগরাজন প্রথমে ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারে না। কারণ, নাগরাজন জানে এই টিকিটের অ্যালবাম ছাড়া সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকা রাজাপ্পার কাছে অত্যন্ত কষ্টকর। বন্ধুর এমন আশ্চর্য আচরণে নাগরাজন হতবুদ্ধি হয়ে যায়। রাজাপ্পা যে নিজের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্তের জন্যই এমনটা করেছিল তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। গল্পের শেষ অংশে দেখা যায়, রাজাপ্পা নিজেরই অ্যালবামটা নাগরাজনের কাছ থেকে এক রাতের জন্য চেয়ে নেয় এবং ঘরে ঢুকে দরজায় খিল দিয়ে অ্যালবামটা শক্ত করে জাপটে ধরে হু হু করে কাঁদতে থাকে। এভাবেই আলোচ্য গল্পে কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হয়েই রাজাপ্পার আত্মশুদ্ধি ঘটে।

আরো পড়ুন

বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse

অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse

বনভোজনের ব্যাপার প্রশ্ন উত্তর | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় | Bonbhojoner Bapar Question Answer | Class 8 | Wbbse

চন্দ্রগুপ্ত নাটকের প্রশ্ন উত্তর | দ্বিজেন্দ্রলাল রায় | Chandragupta Question Answer | Class 8 | Wbbse

সবুজ জামা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Sobuj Jama Question Answer | Class 8 | Wbbse

পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse

চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Chithi Class 8 Question Answer | Wbbse

একটি চড়ুই পাখি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | তারাপদ রায় | Ekti Chorui Pakhi Kobita Question Answer | Class 8 | Wbbse

পথচলতি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় | Class 8 Bengali Pathchalti Question Answer | Wbbse

গাছের কথা প্রশ্ন উত্তর | জগদীশচন্দ্র বসু | Class 8 Bengali Gacher Kotha Question Answer | WBBSE

ছন্নছাড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত | Class 8 Bengali Channachara Question Answer | Wbbse

পাড়াগাঁর দু পহর ভালোবাসি প্রশ্ন উত্তর | জীবনানন্দ দাশ | Paragar Du Pohor Valobasi Question Answer | Class 8 | Wbbse

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!