হাট
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
কবি পরিচিতি
কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের জন্ম ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে, নদিয়া জেলার শান্তিপুরের হরিপুর গ্রামে। বাবার নাম দ্বারকানাথ এবং মায়ের নাম মোহিতকুমারী দেবী। গ্রামের স্কুলে শিক্ষা শুরু। তিনি এনট্রান্স পাশ করার পর শিবপুরে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তিনি নদিয়ার জেলা ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেন। এরপর কাশিমবাজার রাজ এস্টেটে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি গদ্য ও পদ্য রচনায় সমান দক্ষ ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল— মরুশিখা, মরীচিকী, ত্রিযামা, সায়ম, মরুমায়া, নিশান্তিকা প্রভৃতি। কাব্যপরিমিতি তাঁর একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ। তাঁর উল্লেখযোগ্য অনুবাদ গ্রন্থ—কুমারসম্ভব, হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, ওথেলো ইত্যাদি। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কবির মৃত্যু হয়।
১.১ কোন্ সাহিত্যিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ?
উত্তর : কল্লোল গোষ্ঠীর সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর : তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মরীচিকা’ এবং ‘ত্রিযামা’।
২. নীচের বাক্যগুলি থেকে এমন শব্দ খুঁজে বের করো যায় প্রতিশব্দ কবিতার মধ্যে আছে। কবিতার সেই শব্দটি পাশে লেখো।
২.১. আঁধার-সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ ঢেলেছে।’
উত্তর : সাঁঝে-সন্ধ্যায়।
২.২. আলো, আমার আলো, ওগো আলো ভুবন-ভরা।’
উত্তর :: আলো-আলোক।
২.৩. ‘তুমি আমার সকালবেলার সুর।’
উত্তর : সকালবেলা-প্রভাত।
২.৪. ‘আমার রাত পোহালো শারদ-প্রাতে।’
উত্তর : রাত-নিশা।
২.৫. দিনেরবেলা বাঁশী তোমার বাজিয়েছিল।’
উত্তর : দিনেরবেলা – দিবস।
৩. সমোচ্চারিত বা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দযুগলের অর্থপার্থক্য দেখাও :
উত্তর : দীপ—প্রদীপ, দ্বীপ—জল বেষ্টিত স্থলভাগ। দর—দাম, দড়-পারদর্শী। শাখ—শাখাপ্রশাখা, শাঁখ শঙ্খ। বাধা-নিষেধ, বাঁধা বন্ধন। নিত্য—রোজ, নৃত্য—নাচ ।
8. নীচের শব্দগুলি গদ্যে ব্যবহার করলে কেমন হবে লেখো : সহিয়া, সেথা, সহি, সবে, তবে, মুদিল
উত্তর : সহিয়া—সহ্য করে। সেথা — সেখানে। সহি—সহ্য করি। সবে—সকলে। তবে —তাহলে। মুদিল— বন্ধ করল।
৫. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৫.১ কতগুলি গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে?
উত্তর : দশ-বারোটা গ্রামের পরে সাধারণত একটি হাট চোখে পড়ে।
৫.২ হাটে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না কেন?
উত্তর : সন্ধ্যাবেলায় সেখানে কেউ থাকে না বলে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না।
৫.৩ কার ডাকে রাত্রি নেমে আসে ?
উত্তর : একক কাকের ডাকে রাত্রি নামে।
৫.৪ ওপারের লোক কেন এ পারেতে আসে ?
উত্তর : ওপারের লোক পসরা সাজিয়ে এপারে বিক্রি করতে আসে।
৫.৫ ‘হিসাব নাহিরে—এলো আর গেলো কত ক্রেতা বিক্রেতা।’—কোনো হিসাব নেই কেন ?
উত্তর : এতো লোক হাটে যাওয়া আসা করে যে কোনো হিসেব রাখা সম্ভব হয় না, হিসাব রাখার প্রয়োজনও হয় না।
৬. কবিতায় বর্ণিত হার্টের চেহারাটি কেমন লেখো : হাট বসার আগে, হাট চলাকালীন, হাট ভাঙার পর
উত্তর : হাট বসার আগে : প্রভাতে সেখানে ঝাঁট পড়ে না, ফলে জায়গাটা অপরিচ্ছন্ন থাকে।
হাট চলাকালীন : বহু লোকের ভিড়, বেচাকেনা নিয়ে দরাদরি চলে। কানাকড়ি নিয়ে চলে টানাটানি। কোলাহলমুখর পরিবেশ।
হাট ভাঙার পর : কেউ গাঁটে কড়ি বেঁধে নিয়ে যায়। কেউ বা খালি হাতে ফিরে যায়। সন্ধ্যাবেলা অন্ধকার নেমে আসে। নিস্তব্ধতা নেমে আসে।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৭.১ হাটের স্থান ছাড়িয়ে দূরের গ্রামের ছবি কীভাবে কবিতায় ফুটে উঠেছে?
উত্তর : দশ-বারোটি গ্রামের মাঝে একটা হাট বসে। দূরে দূরে সেই গ্রামে প্রদীপ জ্বলে ওঠে সন্ধ্যাবেলায়। কিন্তু গ্রামের পাশের হাটে সকালে ঝাঁটও পড়ে না, সন্ধ্যায় প্রদীপও জ্বলে না। গ্রামের মানুষ প্রতিদিনের হাটে বেচাকেনা সেরে ফিরে যায়। কোলাহলমুখর হাট সন্ধ্যাবেলায় নিস্তব্ধ হয়ে অন্ধকারে ডুবে যায়।
৭.২ প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে—তা আলোচনা করো।
উত্তর : কবি কল্পনা করেছেন, বকের পাখায় সূর্যাস্তের শেষ আলো ঢাকা পড়ে যায়। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসে। দূরের গ্রামগুলিতে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে ওঠে। কিন্তু হাট পড়ে থাকে অন্ধকারে। সেখানে দলছুট কোনো ক্লান্ত কাকের ডাকে সন্ধ্যা নেমে আসে। হাটের জীর্ণ দোচালা ঘুমিয়ে পড়ে। বাঁশের ফাঁকে হাওয়া ঢুকে বাঁশির মতো বাজতে থাকে। উদাস আকাশ, মুক্ত বাতাস খেলা করে। নদীর বাতাস যেন পাকুড় গাছের শাখায় প্রশ্বাস ছাড়ে। অথচ দিনের বেলায় হাটের এই মুক্ত প্রাঙ্গনে মানুষের আনাগোনার শেষ নেই। তখন কত কোলাহল, হিসাব-নিকাশ, লাভ-ক্ষতি। এই নাটক চিরন্তন।
৭.৩ ‘বাজে বায়ু আসি বিদ্রুপ-বাঁশি’—কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?
উত্তর : হাটের দোচালার বাঁশ পুরোনো হয়ে গিয়ে জীর্ণ হয়ে যায়, তখন তাদের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি হয়। এই ফাঁক দিয়ে হাওয়া চলাচল করে। ফলে কবির মনে হয় যেন বাতাসে বিদ্রূপের বাঁশি বাজে। সেই বাঁশি হাটকে মনে করিয়ে দেয় তার একাকীত্বের কথা, নির্জনতার কথা। দিনের বেলা কত কোলাহল অথচ রাত্রে অন্ধকার ও গভীর নির্জনতা।
৭.৪ উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে চিরকাল একই খেলা।’— কোন্ প্রসঙ্গে কবি আলোচ্য পঙক্তিটি লিখেছেন তিনি এখানে কোন্ ‘খেলা’-র কথা বলেছেন? ‘চিরকাল’ চলে বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : কবি হাট যেখানে বসে সেই স্থানটি সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন। এখানে তিনি ক্রেতা-বিক্রেতার কেনা-বেচা ও যাওয়া আসাকে ‘খেলা’ বলেছেন। ‘চিরকাল’ অর্থাৎ সকল সময়ের কথা বলেছেন। একদল লোক হাটে আসে কিনতে একদল লোক আসে বেচতে। অর্থাৎ এই কেনা-বেচা ও তাকে কেন্দ্র করে ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনার কোনো বিরাম নেই। এই কারণে এটিকে ‘চিরকাল’ বলা হয়েছে।
৭.৫ তোমার দেখা কোনো হাটের/বাজারের অভিজ্ঞতা জানিয়ে দূরে থাকে এমন কোনো বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখো।
উত্তর :
২৩/১ কলেজ রো, কলকাতা
0৭/১০/১৫
প্রিয় সুনন্দিতা,
অনেকদিন তোমায় চিঠি দিইনি। আশা করি ভালো আছো। আমি বাবা-মায়ের সঙ্গে শিমূলতলা বেড়াতে গিয়েছিলাম। ওখানে আমার এক দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। ওখানে আমি হাট দেখেছি। আমি এর আগে কখনো হাট দেখিনি। তাই এটা আমার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। আমাদের রোজের বাজারের সঙ্গে হাটের তফাত হলো হাট সপ্তাহে দুদিন বসে। অনেক দূরদূর জায়গা থেকে মানুষ বেচাকেনা করতে আসে। অনেকরকমের জিনিস হাটে মেলে। ফলে মানুষ হাটে আসে একসঙ্গে তিন-চারদিনের দোকান-বাজার করে নিয়ে যায়। হাটে গোরু, মোষ, ছাগল, মুরগী থেকে আরম্ভ করে কাঁচা আনাজ ফল এমনকি শাড়ি গামছাও বিক্রি হয়। অর্থাৎ হাট মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা-বেচার উপযুক্ত স্থান। মনে পড়ে যাচ্ছিলো ছোটোবেলায় সহজপাঠে পড়া ‘কুমোরপাড়ার গোরুর গাড়ি’। সত্যি সত্যিই হাটে মাটির হাঁড়িকুঁড়ি তো বটেই এমনকি অ্যালুমিনিয়ামের বাসনকোসন বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে হাটটি খুব ছোটো হলেও সুন্দর। তুমি এমন হাট কখনো দেখেছো কি? পরের চিঠিতে জানিও। বড়োদের প্রণাম দিও। ভালোবাসাসহ —
তোমার
আশালতা
৭.৬ তোমার দেখা একটি হাট বা বাজারের ছবি তুমি এঁকে দেখাও ৷
উত্তর : নিজে করো।
৭.৭ এখন হাট’ ও ‘বাজার’-এর মধ্যে কোনো তফাত খুঁজে পাও? এ বিষয়ে তোমার মতামত জানিয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উত্তর : হ্যাঁ। হাট রোজ বসে না, বাজার রোজ বসে। হাট নির্দিষ্ট একদিন বা দুদিন বসে, কিন্তু বাজার প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে বসে। হাটে খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও আরও নানা জিনিস বিক্রি হয়, কিন্তু বাজারে প্রধানত খাবারের জন্য কাঁচামাল পাওয়া যায়। হাট নানা ধরনের হয়, যেমন পাখিপশুর হাট, কিন্তু বাজারে এধরনের কোনো বিক্রিবাটা হয় না। হাটের ব্যাপ্তি বড়ো, কিন্তু বাজারের ব্যাপ্তি বড়ো নয় ৷
আরো পড়ুন
ভরদুপুরে কবিতা | নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী | প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
শঙ্কর সেনাপতি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
খোলামেলা দিনগুলি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শান্তিসুধা ঘোষ
পাইন দাঁড়িয়ে আকাশে নয়ন তুলি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | হাইনরিখ হাইনে
ঘাসফড়িং কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অরুণ মিত্র | GhashForing Question Answer | Class 6 | Wbbse
চিঠি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | জসীমউদ্দিন | Chithi Question Answer | Class 6 | Wbbse
হাট কবিতার প্রশ্ন উত্তর | যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | Hat Question Answer | Class 6 | Wbbse
মরশুমের দিনে প্রশ্ন উত্তর | সুভাষ মুখোপাধ্যায় | Morsumer Dine Question Answer | Class 6 | Wbbse
পিঁপড়ে কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Pipre Question Answer | Class 6 | WBBSE
ফাঁকি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Faki Question Answer | Class 6 | WBBSE
চিত্রগ্রীব এর প্রশ্ন উত্তর | Chitrogrib Question Answer | Class 6 | WBBSE
আশীর্বাদ গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Ashirbad Class 6 Question Answer | WBBSE
এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর Class 6 | Ek Bhuture Kando Question Answer
বাঘ কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Class 6 Bengali Bagh Question Answer
বঙ্গ আমার জননী আমার প্রশ্ন উত্তর | Bongo Amar Jononi Amar Question Answer | Class 6
শহীদ যতীন্দ্রনাথ দাস প্রশ্ন উত্তর | Class 6 Bengali Shahid Jatindra Nath Das Question Answer
ধরাতল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Dhoratol Bengali Poem Question Answer | Class 6
মোরা দুই সহোদর ভাই কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Class 6 | West Bengal Board
হাবুর বিপদ প্রশ্ন উত্তর | Habur Bipod Question Answer | Class 6 | West Bengal Board
কিশোর বিজ্ঞানী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Kishore Bigyani Question Answer | Class 6 | West Bengal Board
ননীদা নট আউট প্রশ্ন উত্তর (মতি নন্দী) | Nonida Not Out Question Answer | Class 6 | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
হাটে রাত্রি নামলে কি কি দৃশ্য দেখা যায়?
হাটে রাত্রি নামলে SAKURA কে দেখা যায়
I don’t have any idea of those things…