প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 8 এর গড়াই নদীর তীরে প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে জসীমউদ্দীনের লেখা গড়াই নদীর তীরে কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
গড়াই নদীর তীরে
জসীমউদ্দীন
হাতে কলমে
১.১ কবি জসীমউদ্দীন কোন অভিধায় অভিহিত ?
উত্তর:- কবি জসীমউদ্দীন ‘পল্লিকবি’ অভিধায় অভিহিত।
১.২ তাঁর লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- জসীমউদ্দীনের লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম, ‘নক্সীকাঁথার মাঠ’ ও ‘ধানক্ষেত’।
২. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ কবিতায় বর্ণিত নদীটির নাম কী?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় বর্ণিত নদীটির নাম, গড়াই নদী।
২.২ মাচানের পরে কী আছে?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে কবিতায় মাচানের পরে আছে সিম-লতা আর লাউ-কুমড়োর ঝাড়।
২.৩ মানুষের বসত করার কথা এখানে কারা বোঝেনি ?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় বনের পাখিরা বোঝেনি এখানে মানুষ বসত করে।
২.৪ উঠানেতে কী কী শুকাচ্ছে ?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় উঠোনেতে মটরের ডাল, মসুরের ডাল, কালোজিরে, ধনে, লংকা-মরিচ প্রভৃতি রোদে শুকাচ্ছে।
২.৫ বাড়িটিকে ভালবেসে কারা বেড়াতে এলে কিছুক্ষণ থেমে রয়?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে কবিতায় সকাল-সন্ধ্যায় রঙিন মেঘেরা এখানে বেড়াতে এলে বাড়িটিকে ভালোবেসে কিছুক্ষণ থেমে থাকে ।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
৩.১ ‘কুটীরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে’— এখানে কুটিরটিকে লতাপাতা-ফুলের মায়া দিয়ে ঘিরে রাখা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে কবিতায় কবি নদীর তীরে অবস্থিত পল্লী প্রকৃতির এক অপরূপ চিত্র অঙ্কন করেছেন। গড়াই নদীর পাশে অবস্থিত একটি কুটিরকে লতা জাতীয় গাছ ও ফুল যেন মায়ায় ঘিরে রয়েছে। ঘরের আশেপাশে সিম-লতা, লাউ – কুমড়োর গাছ, বুনো ফুল পল্লী বাংলার এ এক চিরপরিচিত ছবি। এই লতাপাতা, ফুল যেন পরম মায়ায় বা মমতায় কুটিরটিকে ঘিরে থাকে, যেন কুটিরে বসবাসকারী মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে।
৩.২ ডাহুক মেয়েরা বেড়াইতে আসে গানে গানে কথা কয়ে’– ‘ডাহুক মেয়ে’ কারা? তারা কাদের নিয়ে আসে? তারা কীভাবে কথা বলে ?
উত্তর:-
‘ডাহুক’ মেয়ে কারা?:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় ‘ডাহুক মেয়ে’ বলতে স্ত্রী ডাহুক পাখিকে বোঝানো হয়েছে।
কাদের নিয়ে আসে? :- ডাহুক মেয়েরা এঁদো ডোবা থেকে ছোটো ছোটো ছানাদের নিয়ে আসে।
কীভাবে কথা বলে?:- ডাহুক মেয়েরা গানে গানে কথা বলে।
৩.৩ ‘যেন একখানি সুখের কাহিনি নানান আখরে ভরি’– ‘আখর’ শব্দটির অর্থ কী? সুখের কাহিনির যে নানা ছবি কবি এঁকেছেন তার মধ্যে কোনটি তোমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এবং কেন ?
উত্তর:-
‘আখর’ শব্দের অর্থ:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত ‘আখর’ শব্দের অর্থ ‘অক্ষর’।
প্রিয় সুখের কাহিনি:- আলোচ্য কবিতাটিতে কবি গড়াই নদীর পাশে অবস্থিত একটি কুটির ও তার আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন। কবি নানা অনুসঙ্গ তুলে বুঝিয়েছেন সবকিছু মিলিয়ে এ এক শান্ত-স্নিগ্ধ সুখের কাহিনি। এই সুখের চিত্রের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে উঠোনে যত্ন করে শুকোতে দেওয়া মটরের ডাল, মসুরের ডাল, কালোজিরা, ধনে এবং লংকা-মরিচের চিত্র । যার পাশে আঁকা রয়েছে একটি আলপনা। যা গ্রাম্য সংস্কৃতির পরিচায়ক। এ ছবির মাধ্যমে উপদ্রবহীন, স্বচ্ছল ও শান্তিপূর্ণ গ্রাম্য জীবনের কাহিনি ফুটে উঠেছে। তাই এই কাহিনি আমার ভালো লেগেছে।
৩.৪ ‘কিছুখন যেন থামিয়া রয়েছে এ বাড়িরে ভালোবেসে’- রঙিন মেঘেরা বাড়িটিকে ভালোবেসে থেমে থাকে। এর মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর:- পল্লিকবি জসীমউদ্দিন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য উদ্ধৃতির মাধ্যমে নদী তীরে কুটিরের ওপরে সকাল-সন্ধ্যায় বেড়াতে আসা রঙিন মেঘেদের কিছুক্ষণ থেমে থাকার কথা বলা হয়েছে।
গড়াই নদীর তীরে লতাপাতা, ফুল মায়ায় ঘেরা শান্ত, স্নিগ্ধ কুটিরটির অপরূপ সৌন্দর্য দেখে সদা চঞ্চল মেঘেরাও যেন ভালোবেসে কিছুক্ষণ থেমে যায়। মেঘেদের এই থেমে যাওয়া যেন কুটিরের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধতার বার্তা বহন করে।
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৪.১ ‘এ বাড়ির যত আনন্দ হাসি আঁকা জীবন্ত করি’— কবিতায় কবি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম যে গ্রামীণ কুটিরের জীবন্ত ছবি এঁকেছেন তার বিবরণ দাও।
উত্তর:- জসীমউদ্দীন রচিত ‘গড়াই নদীর তীরে’ কবিতায় কবি প্রকৃতির সাথে একাত্ম এক গ্রামীণ কুটিরের জীবন্ত ছবি এঁকেছেন। গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত এই কুটিরখানিকে লতাপাতা, ফুল মায়ায় ঘিরে রয়েছে। উঠোনের কোণে হাসছে বুনো ফুল। মাচানের উপর সিম-লতা ও লাউ কুমড়োর ঝাড়, নীচে লাল নটে শাক। এ বাড়ির নির্জনতা দেখে এঁদো ডোবা থেকে ছোটো ছোটো ছানা নিয়ে ডাহুক মেয়েরা এসে গান গেয়ে যায়। গাছের শাখায় বনের পাখিরা নির্ভয়ে গান করে। তারা টের ও পায়না এখানে মানুষ বসবাস করে। উঠোনের নরম রোদে সযত্নে শুকায় মটরের ডাল, মসুরের ডাল, কালোজিরে, লংকা-মরিচ প্রভৃতি। তার পাশে আঁকা আলপনার সৌন্দর্য মেঘেদের মুগ্ধ করে। মেঘেরাও যেন ভালোবেসে এ বাড়ির উপরে কিছুক্ষণ থেমে এ বাড়ির সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করে।
৪.২ ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কবিতায় কবি পরম মমতায় গ্রামীণ কুটিরের ছবি এঁকেছেন। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজের বাড়ির সঙ্গে এমন একটি মমতাময় সম্পর্ক আছে। তুমি তোমার বাড়ির বিভিন্ন অনুষঙ্গের বিবরণ দিয়ে একটি অনুচ্ছেদ লেখো।
উত্তর:- আমার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে। গ্রামের নাম সলুয়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয় গ্রামটিকে সবুজ গাছপালা আগলে রেখেছে। আমাদের বাড়িটি মেইন রোড থেকে কিছুটা ভিতরের দিকে। তাই শহুরে কোলাহল বা যানবাহনের আওয়াজ থেকে মুক্ত। আমাদের বাড়ির সামনে মাচানে পুঁইশাকের গাছ আছে। এছাড়াও বাড়ির চারপাশে আছে আম, নারকেল, কাঁঠাল প্রভৃতি ফলের গাছ। সীমানার কোণের দিকে রয়েছে একটি নিম গাছ। গাছগুলি বাড়িকে ছায়াবৃত করে রাখে। গরমকালে দক্ষিণা বাতাস প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। আমাদের বাড়ির পিছনেই রয়েছে চাষের জমি। সেখানে ধান, পাট, গম, সরষে প্রভৃতির চাষ হয়। বাড়ির সামনের কামিনী ফুল গাছে প্রতিবার একটা নাম না জানা পাখি বাসা বাঁধে। আমরা ওকে বিরক্ত করিনা। আমাদের বাড়িতে গোঁয়াল ঘর আছে সেখানে একটি গরু ও একটি বাছুর থাকে। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত গাছপালায় ঘেরা আমাদের বাড়িটি আমার খুব প্রিয়। বাড়ি ছেড়ে কোথাও গিয়ে মন টেকে না।
৫. নীচের বাক্যগুলি থেকে ক্রিয়ার কাল নির্ণয় করো :
৫.১ কুটিরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে।
উত্তর:- পুরাঘটিত বর্তমান কাল।
৫.২ উঠানের কোণে বুনো ফুলগুলি হেসে হয় কুটি কুটি।
উত্তর:- সাধারণ বর্তমান কাল।
৫.৩ লংকা-মরিচ রোদে শুকাইছে উঠানেতে সযতনে।
উত্তর:- ঘটমান বর্তমান কাল।
৫.৪ জিরা ও ধনের রঙের পাশেতে আলপনা আঁকা কার!
উত্তর:- সাধারণ বর্তমান কাল।
৫.৫ কিছুখন যেন থামিয়া রয়েছে এ বাড়িরে ভালোবেসে।
উত্তর:- পুরাঘটিত বর্তমান কাল।
৬. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো :
৬.১ লাল শাড়িখানি রোদে দিয়ে গেছে এ বাড়ির বধু কেউ। (জটিল বাক্যে )
উত্তর:- লাল শাড়িখানি যে রোদে দিয়ে গিয়েছে, সে এ বাড়ির কোনো বধূ৷
৬.২ ডাহুক মেয়েরা বেড়াইতে আসে গানে গানে কথা কয়ে। (চলিত গদ্যে)
উত্তর:- ডাহুক মেয়েরা গানে গানে কথা বলে বেড়াতে আসে।
৬.৩ গাছের শাখায় বনের পাখিরা নির্ভয়ে গান ধরে (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর:- গাছের শাখায় বনের পাখিরা গান ধরতে ভয় পায় না।
৬.৪ এখনো তাহারা বোঝেনি হেথায় মানুষ বসত করে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর:- হেথায় মানুষ বসত করে কিন্তু এখনো তাহারা বোঝেনি।
৭. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো :
কুমড়া, কালিজিরা, উঠান, সযতনে, আখর, সাঁঝ
উত্তর:-
কুমড়া = কুমড়ো > কুমড়া (স্বরসংগতি)।
কালিজিরা = কালোজিরা > কালিজিরা (স্বরসংগতি)।
উঠান = উঠান > উঠোন (স্বরসংগতি)।
সযতনে =সযত্নে > সযতনে (স্বরভক্তি)।
আখর = অক্ষর > আখর (ক্ষতিপূরক দীর্ঘিভবন)।
সাঁঝ = সন্ধ্যা > সাঁঝ (নাসিক্যভবন)।
৯. নীচের শব্দগুলির মধ্যে কোনটি কোন শ্রেণির বিশেষ্য তা নির্দেশ করো :
মানুষ –
আনন্দ –
ফুলগুলি –
আলপনা –
উত্তর:-
মানুষ = জাতিবাচক বিশেষ্য।
আনন্দ = ভাববাচক বিশেষ্য।
ফুলগুলি = বস্তুবাচক বিশেষ্য ।
আলপনা = ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য ।
১০. নীচের শব্দগুলির মধ্যে কোনটি কোন শ্রেণির সর্বনাম তা নির্দেশ করো :
যার –
কেউ –
তাহারা –
তার –
উত্তর:-
যার = অনির্দেশক সর্বনাম
তাহারা = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।
কেউ = অনির্দেশক সর্বনাম।
তার = ব্যক্তিবাচক সর্বনাম ।
১১. এঁদো, লাল, বুনো, রঙিন – বিশেষণগুলির সাহায্যে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি করো।
উত্তর:-
এঁদো – এঁদো ডোবা
লাল – লাল ফুল।
বুনো – বুনো ওল।
রঙিন – রঙিন জামা।
আরো পড়ুন
বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse
পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse
চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Chithi Class 8 Question Answer | Wbbse
গাছের কথা প্রশ্ন উত্তর | জগদীশচন্দ্র বসু | Class 8 Bengali Gacher Kotha Question Answer | WBBSE
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।