প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 6 এর এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের ষষ্ঠ শ্রেনীর পাঠ্যবইতে শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা এক ভুতুড়ে কান্ড গল্প রয়েছে। গল্পের শেষে যে সব প্রশ্নপত্র গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
এক ভুতুড়ে কান্ড
শিবরাম চক্রবর্তী
এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর Class 6 | Ek Bhuture Kando Question Answer
লেখক পরিচিতি
শিবরাম চক্রবর্তীর জন্ম ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর। বাবার নাম শিবপ্রসাদ চক্রবর্তী। স্কুল জীবনে তিনি স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তখন তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল বলে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় বসতে পারেন নি। তাঁর জীবনের বেশির ভাগ সময় কলকাতার মুক্তারাম বাবু স্ট্রীটের এক মেসবাড়িতে কেটেছে। তিনি ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। তিনি নিয়মিত দৈনিক বসুমতী, আনন্দবাজার, দেশ প্রভৃতি পত্রিকায় লিখতেন। মজার গল্প ও রম্যরচনা সৃষ্টিতে তিনি অপূর্ব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর প্রথম রচনা কবিতা, কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মানু,’। তাঁর আসল নাম ছিল চঞল। তাঁর লেখা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ — হর্ষবর্ধন ও গোবর্ধন, ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা, মস্কো বনাম পন্ডিচেরি, বাড়ি থেকে পালিয়ে, হাসির টেক্কা, আজ ও আগামীকাল, যখন তারা কথা বলবে প্রভৃতি। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ২৮ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
হাতে কলমে
১.১ শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম কী ?
উত্তর : শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম চঞ্চল।
১.২ তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা দুটি বিখ্যাত বই –‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’, ‘হর্ষবর্ধন ও গোবর্ধন’।
২. নীচের বাক্যগুলি কী ধরনের (সরল/যৌগিক/জটিল) তা নির্দেশ করো :
২.১ ভূত বলে কিছু আছে?
উত্তর : সরল বাক্য ।
২.২ যেখানে সন্ধ্যে হয় সেইখানেই সাইকেলের টায়ার ফাঁসে।
উত্তর : জটিল বাক্য ।
২.৩ একটা পরস্মৈপদী সাইকেল হাতে পেয়ে হুড়ুর দিকে পাড়ি জমিয়েছিলাম কিন্তু মাইল সাতেক না যেতে যেতেই তার একটা টায়ার ফেঁসে গেল।
উত্তর : যৌগিক বাক্য ।
২.৪ আমার টর্চবাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘোরাতে লাগলাম।
উত্তর : সরল বাক্য।
২.৫ যেখানটায় ড্রাইভার থাকবার কথা সেখানে কেউ নেই।
উত্তর : জটিল বাক্য।
৩. নীচের বাক্যগুলিতে কী কী অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে লেখো :
৩.১ সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।
উত্তর : হলেই
৩.২ কয়েক মিনিট বাদে সেখান থেকে নামলাম।
উত্তর : বাদে, থেকে
৩.৩ তার চেয়ে বাঘের পেটের মধ্যে দিয়ে স্বর্গে যাওয়া ঢের শটকাট ।
উত্তর : মধ্যে, চেয়ে, দিয়ে
৩.৪ আপনা থেকেই আমার মুখ দিয়েই বেরিয়ে গেলো।
উত্তর : থেকেই, দিয়েই
৪. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তাখণ্ডে ও ক্রিয়াখণ্ডে ভাগ করো :
৪.১ আসতে আসতে গাড়িটা আমার সামনে এসে পড়লো।
৪.২ দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
৪.৩ চিরদিনই আমি আশাবাদী।
৪.৪ এগিয়ে এসে বললেন ভদ্রলোক।
উত্তর :
কর্তাখণ্ড | ক্রিয়াখণ্ড |
৪.১ গাড়িটা | এসে পড়ল |
৪.২ আমি (উহ্য) | ঢুকে পড়লাম |
৪.৩ আমি | ছিলাম (উহ্য) |
৪.৪ ভদ্রলোক | বললেন |
৫. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দ বেছে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো :
৫.১ কিন্তু গাড়িটার থামবার কোনো লক্ষণ নেই।
উত্তর : কিন্তু = কিম্ + তু।
৫.৩ আমার পাশ কাটিয়ে যাবার দুর্লক্ষণ দেখে আমি মরিয়া হয়ে উঠলাম।
উত্তর : দুর্লক্ষণ = দুঃ + লক্ষণ।
৫.৪ শেষপর্যন্ত আস্তে আস্তে আসছিল গাড়িটা।
উত্তর : পর্যন্ত = পরি + অন্ত।
৫.৫ কাল সকালে উদ্ধার করা যাবে।
উত্তর : উদ্ধার = উৎ + হার।
৬. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ ‘সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে!’—লেখকের গন্তব্য কোথায়? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন ?
উত্তর : লেখকের গন্তব্য ছিল রাঁচি। লেখক একটি সাইকেল নিয়ে হুডু ফলস দেখতে বেরিয়েছিলেন। পথে তাঁর সাইকেলের টায়ার ফেঁসে গেল। তখন তিনি কীভাবে ফিরবেন সেটাই বুঝতে পারছিলেন না। এমতাবস্থায় যদি তাঁকে সাইকেল ঘাড়ে নিয়ে ফিরতে হয় তবে দারুণ মুশকিল হবে। লেখককে নিয়ে যেতে হবে।
৬.২ সাইকেল সঙ্গে নিয়ে যেতে হলে ঘাড়ে করেই ‘যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধ্যে হয়’—প্রবাদটির মর্মার্থ কী? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো।
উত্তর : যেখানে যে বিপদের আশঙ্কা করা হয় সেখানেই বিপদ ঘটে। এরকম আরেকটি প্রবাদ হল—এগুলে সর্বনাশ পিছলে নির্বংশ।
৬.৩ ‘চিরদিনই আমি আশাবাদী’—এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন ?
উত্তর : লেখক অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁর আশাবাদীতার পুরস্কার তিনি যথোপযুক্তভাবেই পেলেন। প্রথমে কিছুক্ষণ কোনো যানবাহন ছিল না ঠিকই, কিন্তু পরে একটা লরি এলো। অবশ্য লরিটা দাঁড়াল না। কিন্তু তিনি একটুও হাল ছাড়লেন না। তিনিও গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। পরিশেষে তাঁর প্রার্থিত গাড়িটা এলো। তিনি গাড়িটায় উঠে পড়লেন। যদিও গাড়িতে ছিল না কোনো ড্রাইভার তবুও দিব্যি গড়গড়িয়ে গাড়ি এগিয়ে যেতে লাগল। একসময় ড্রাইভারহীন গাড়িতে তিনি ট্রেনের লেভেল ক্রসিং অর্থাৎ রাঁচির কাছেই পৌঁছে গেলেন। এইভাবে লেখক পুরস্কৃত হলেন।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও :
৭.১ ‘অনর্থক কেবল টর্চটাকে আর নিজেকে টর্চার করা’–কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা? ‘টর্চ’ আর ‘টর্চার’ শব্দের প্রয়োগে যে শব্দ নিয়ে খেলা তৈরি হয়েছে, গল্প থেকে খুঁজে এমন কয়েকটি উদাহরণ দাও । তুমি নিজে এ জাতীয় কয়েকটি বাক্য লেখো।
উত্তর : লেখক একবার রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার খারাপ হয়ে যাওয়ায় খুব বিপদে পড়েন। তখন ফেরবার জন্য তিনি গাড়ির অপেক্ষা করতে লাগলেন। কিন্তু কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। এমন সময় একটা লরি দেখতে পেয়ে জোরে জোরে টর্চ ঘোরাতে লাগলেন। কিন্তু লরিটা ভূক্ষেপ না করে চলে গেল। তখন লেখক এই উদ্ধৃতিটি করেন।
গল্পে এমন উদাহরণ যথেষ্ট। যথা—১) আমার হার্ট খুব উইক। আর শুনেছি ওরা ভারি উইকেড। ২) অগত্যা, আগায়মান গাড়ির গায়ে গিয়ে পড়লাম।
কয়েকটি উদাহরণ—১) বিমল বন্ধুদের সঙ্গে বেট ফেলে খেলায় বেটার পারফমেন্স দেখাল। ২) এক কুস্তিগীর অন্য কুস্তিগীরকে ধরায় ধরাশায়ী করে দিলো।
৭.২ গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো ।
উত্তর : লেখক একবার রাঁচি থেকে সাইকেলে করে হুডু ফলস দেখতে যান। হুড়ু যাওয়ার পথে তাঁর সাইকেলের টায়ার ফাঁসে। লেখক পড়লেন বিপদে। এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে তিনি একটা টর্চ নিয়ে ঘোরাতে লাগলেন। এমন সময় একটা লরি আসতে দেখা গেল। তিনি লরিটাকে দেখে জোরে জোরে টর্চ নাড়াতে লাগলেন। একসময় লরিটা এসে তাঁকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। তিনি তখন টর্চ নাড়ানো বন্ধ রাখলেন। একসময় আবার একটা গাড়ির আলো দেখতে পেলেন। এবার একটা বেবি অস্টিন দেখে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়িতে ওঠার পর তিনি খেয়াল করলেন, অস্টিনটাতে কোনো চালক নেই কিন্তু খুব ধীরে ধীরে চলতে লাগল। তিনি বেশ ভয় পেয়ে গেলেন, ভাবলেন ভূতের কাণ্ড কিন্তু দেখা গেলো ভূত কেন কিছুই নেই। একসময় গাড়িটা লেভেল ক্রসিংয়ে পৌঁছলে তিনি দেখলেন গাড়িটা আপনা আপনি থেমে গেল এবং গাড়ির পেছন থেকে একজন বেরিয়ে এলেন। তিনি নাকি গাড়িটা ঠেলছিলেন। সারা রাস্তা কাউকে পাননি। ফলে ভদ্রলোককে একাই গোটা রাস্তা গাড়িটা ঠেলে রাঁচি পৌঁছতে হয়েছে।
৭.৩ ‘বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।’—কোন্ উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে? লেখকের কাছে সেই ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিলো, তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : লেখক রাঁচির রাস্তায় গাড়ির জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর অনেক দূর থেকে একটা হলদে রঙের আলো দেখতে পেলেন। প্রথমে লেখক ভাবলেন বাঘ বুঝি, পরে বুঝলেন যে বাঘ নয় কারণ বাঘের দৃষ্টি অনেক ক্রুর হিংস্রতানয় কিন্তু এই হলুদ আলোটা তেমন নয় বরং যেন একটু উদারতাময়।
লেখকের দেখা সেই হলুদ ‘উদারতাময় দৃষ্টিভঙ্গি’ একটি বেবি অস্টিন গাড়ির আলো। কিন্তু সেই গাড়িটিও লেখকের প্রতি কোনো উদারতা দেখাল না। সেও চলে গেল। অর্থাৎ তার দৃষ্টিভঙ্গি মোটেই উদার ছিল না।
৭.৪. ‘এই হয়তো সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ।’— কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে? লেখক কীভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগালেন ?
উত্তরঃ লেখক অনেকক্ষণ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। প্রথমে একটা লরি এলেও তা দাঁড়াল না। অনেক পরে তিনি একটা বেবি অস্টিন দেখতে পেলেন। তিনি ভাবলেন যেমন করেই হোক গাড়িটাতে উঠতে হবে। অস্টিনটা মোটেই দাঁড়াল না। তখন লেখক ভাবলেন হয়তো রাঁচি ফেরার এটাই শেষ সুযোগ।
লেখক যখন দেখলেন অস্টিনটা তাঁর জন্য অপেক্ষা করল না, তিনি বিন্দুমাত্র ঘাবড়ালেন না, তিনি লাফিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লেন। লেখক এইভাবে তাঁর কাছে আসা সুযোগ কাজে লাগালেন।
৭.৫ ‘আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম—লেখক কেন তার কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন?
উত্তর : লেখক রাঁচির রাস্তায় বেবি অস্টিন গাড়ি পেয়ে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়ি উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে বিস্ময়ে ভয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই। কিন্তু গাড়ি চলতেই আছে। তিনি তখন
রীতিমতো বিস্মিত হলেন এবং সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেন। ভাবলেন, নির্ঘাত ভূতের গাড়িতে উঠে পড়েছেন। তাঁর কথা বন্ধ হয়ে গেলো। তিনি হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
৭.৬ ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল’—’বে-ড্রাইভার গাড়ি’ চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হলো ?
উত্তর : লেখক রাঁচির রাস্তায় কোনো গাড়ি না পেয়ে একটা বেবি অস্টিন দেখতে পেয়ে তাতে উঠে পড়লেন। কিন্তু বেবি অস্টিনটাতে কোনো ড্রাইভার ছিল না। গাড়ি আপনা আপনি চলতে লাগল। লেখক দারুণ ভয় পেয়ে গেলেন। ভাবলেন বুঝি ভূত। তিনি ভয়ে কোনো কথা বলতে পারলেন না। শেষপর্যন্ত কোনো কিছুই নির্ণয় করতে না পেরে গাড়িতে চুপ করে বসে রইলেন। একসময় গাড়িটা লেভেল ক্রসিংয়ে পৌঁছোল। লেখক ভাবলেন বুঝি ভূতটা তাঁকে নিয়ে ট্রেনের তলায় চাপা দেবার জন্য যাচ্ছে। তিনি বাঁচবার জন্য লাফিয়ে গাড়ি থেকে নামলেন। রাত্রির নিঃশব্দ অন্ধকার ভেদ করে একটা ট্রেন চলে গেলো। লেখকের তখন হুঁশ ফিরে এল। তিনি দেখলেন যে পাশে গাড়িটা দাঁড়িয়ে আছে। এইভাবে মোটরটা টিকে থাকা যখন তাঁর কাছে চূড়ান্ত রহস্যজনক মনে হচ্ছিল, এমন সময় একজন চশমা লাগানো লোক মোটরের পেছন থেকে বেরিয়ে এল। ভদ্রলোক লেখককে জানালেন যে তিনি আট মাইল দূর থেকে গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে আসছেন, পথে কোনো মানুষ পাননি যাঁর কাছে সাহায্য পাওয়া যায়। তখন তিনি লেখককে গাড়ি ঠেলবার অনুরোধ করলেন। এইভাবে লেখকের কাছে ‘বে-ড্রাইভার’ গাড়ি চলার প্রকৃত কারণ উন্মোচিত হল।
৭.৭ ‘এবারও আমার আলস্যই জয়ী হল শেষটায়।’—গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য ও কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও ৷
উত্তর : লেখক বেবি অস্টিনটার দেখা পেয়ে খুব উৎফুল্ল হলেন, কারণ লেখকের কাছে সেই সময় একটি যানবাহন পাওয়া আবশ্যক ছিল। তিনি গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলেন কারণ ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই অথচ গাড়ি চলছে। লেখক ভয়ে উৎকণ্ঠায় একেবারে ঘেমে উঠেছিলেন। তিনি ‘ভূতভূত’ আওড়ালেন কিন্তু কেউ তাঁর কথার কর্ণপাত করল না। বে-ড্রাইভার গাড়ি একইভাবে চলতে লাগল। ড্রাইভার নেই, ইঞ্জিনও চলছে না অথচ আস্তে আস্তে গাড়ি চলতে লাগল। লেখক ভাবলেন যে ঠিক পথ দিয়ে যখন গাড়ি যাচ্ছেই তখন হেঁটে যাওয়ার চেয়ে তা বেশি আরামদায়ক। লেখক একদিকে ভয়ে যেমন উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লেন কিন্তু তিনি ছিলেন অলসপ্রিয়। আলস্য তাঁকে সহজেই কাবু করে দেয়। অন্যান্যবারের মতো এবারেও আলস্যই জয়ী হলো। তিনি গাড়ি থেকে বেরোবার কোনো চেষ্টা না করে যেমন যাচ্ছিলেন তেমনি ভুতুড়ে গাড়িকে অবলম্বন করে যেতে লাগলেন। অর্থাৎ ভূতের ভয় অপেক্ষা আলস্যতারই জয় হল।
৭.৮ শেষ পর্যন্ত লেখক সেই ‘বেবি অস্টিন’ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কেন? এরপরে তিনি কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন ?
উত্তর : ‘ভূতুড়ে’ গাড়িতে করে লেখক শেষপর্যন্ত স্টেশনের কাছে পৌঁছোলেন। লেভেল ক্রসিংয়ের মুখে পৌঁছে লেখকের হুঁশ হল যে এখুনি ট্রেন এসে পড়বে। তিনি ভাবলেন যে ভূতুড়ে গাড়ি বুঝি তাঁকে নিয়ে গাড়ি চাপা দিয়ে দেবে। তিনি ভয়ে ‘বেবি অস্টিন’ থেকে বেরিয়ে এলেন। লেখক ভাবলেন ভুতুড়ে গাড়ি বুঝি ট্রেনের তলায় গিয়ে চুরমার হয়ে যাবে। কিন্তু শেষাবধি গাড়িটা আস্ত থাকায় লেখক দারুণ অবাক হয়ে গেলেন। এমন সময় গাড়ির পিছন থেকে চশমা পরা এক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। তিনি জানালেন যে, তিনি আট মাইল দূর থেকে গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে আসছেন। এমন কাউকে পেলেন না যে তাঁকে সাহায্য করে। তিনি কাতর হয়ে লেখকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। অর্থাৎ ভুতুড়ে গাড়ির ভয়ের সম্ভাবনায় তাঁর মন উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠেছিল শেষাবধি সেই ভয় হাস্যকর এক পরিস্থিতি তৈরি করল, যা অভূতপূর্ব ও মজাদারও বটে।
৮. তোমার কোনো গা-ছমছমে অভিজ্ঞতার কথা বন্ধুর কাছে একটি চিঠিতে লেখো।
উত্তর :
মহেশতলা
১৩/১০/২০১৫
প্রিয় অনিমেষ,
আশা করি ভালো আছিস। গত সপ্তাহে তোর চিঠি পেয়েছি। আজ তোকে আমার এক গা ছমছমে অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছি। তোর তো ভূতপ্রেতে বিশ্বাস নেই, আমার কিন্তু ভয়মিশ্রিত বিশ্বাস আছে। তোকে গত বছরের ঠিক এই সময়ের একটা ঘটনার কথা বলি।
তুই তো জানিস আমি সন্ধ্যেবেলা দুজন বন্ধুর সঙ্গে কোচিনে পড়তে যাই। সেটা ছিল কালীপুজোর দুদিন আগে। ঘটনাক্রমে সেদিন আমার ওই দুজন বন্ধু কোচিনে আসে নি। সেদিন আমি সঙ্গে টর্চ নিতে ভুলে গেছি। ফেরার সময় হল সমস্যা। আমার বাড়ি ও কোচিনের মাঝামাঝি জায়গায় একটা বেশ পুরোনো বট গাছ আছে। তার আশেপাশে বেশ কিছুটা এলাকায় কোনো বাড়ি নেই। ওই বটগাছটাকে নিয়ে নানা গল্প শোনা যায়। ওখানে অনেকে নাকি অনেক কিছু দেখেছে। আমি কোচিন থেকে বেরিয়ে বেশ কিছুটা আসার পর হঠাৎ লোডশেডিং হল। বট গাছের কাছে আসতে তখনও কিছুটা বাকি আছে। পথে কোনো লোকজন নেই। আমি দুরু দুরু বুকে ধীরে ধীরে হাঁটছি—যদি কারুর সঙ্গে দেখা হয়, এই আশায়।
কিন্তু কারুর সঙ্গেই দেখা হল না। আমি কোনো দিকে না তাকিয়ে জোরে দৌড়াতে শুরু করলাম। বটগাছটা যখন পেরোচ্ছি তখন গাছের উপর থেকে একটা বাচ্চা ছেলের কান্না শুনতে পেলাম। ভয়ে আমার হৃদস্পন্দন প্রচণ্ড বেড়ে গেল। ভাবলাম আমার শোনার ভুল। বট গাছ পেরিয়ে দৌড়ানোর গতি একটু কমানোর পরও আমি সেই কান্নার আওয়াজ আবার শুনতে পেলাম। বাড়ি ফিরে জল খেয়ে মা-কে ঘটনাটা সব বললাম। মা বললেন, ও-গাছে ব্ৰহ্মদত্যি আছে শুনেছি। বাবা শুনে হাসলেন। বললেন, এক নম্বর ভীতু কোথাকার! কাল সকালে গিয়ে দেখিস, গাছে নিশ্চয়ই পাখির বাসা আছে। তুই যেটা সেটা বাচ্চার কান্না ঠিকই কিন্তু মানুষের বাচ্চা নয়, পাখির বাচ্চার কিচির মিচির। পরের দিন সকালে উঠেই বট গাছের কাছে গিয়ে পাখির বাসা ও পাখির বাচ্চা দেখলাম। আজ আর নয়। ভালোবাসা নিস। শুনেছিস,
ইতি—
তোর শুভঙ্কর
আরো পড়ুন
ভরদুপুরে কবিতা | নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী | প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা
শঙ্কর সেনাপতি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
খোলামেলা দিনগুলি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শান্তিসুধা ঘোষ
পাইন দাঁড়িয়ে আকাশে নয়ন তুলি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | হাইনরিখ হাইনে
ঘাসফড়িং কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অরুণ মিত্র | GhashForing Question Answer | Class 6 | Wbbse
চিঠি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | জসীমউদ্দিন | Chithi Question Answer | Class 6 | Wbbse
হাট কবিতার প্রশ্ন উত্তর | যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | Hat Question Answer | Class 6 | Wbbse
মরশুমের দিনে প্রশ্ন উত্তর | সুভাষ মুখোপাধ্যায় | Morsumer Dine Question Answer | Class 6 | Wbbse
পিঁপড়ে কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Pipre Question Answer | Class 6 | WBBSE
ফাঁকি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Faki Question Answer | Class 6 | WBBSE
চিত্রগ্রীব এর প্রশ্ন উত্তর | Chitrogrib Question Answer | Class 6 | WBBSE
আশীর্বাদ গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Ashirbad Class 6 Question Answer | WBBSE
এক ভুতুড়ে কান্ড প্রশ্ন উত্তর Class 6 | Ek Bhuture Kando Question Answer
বাঘ কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Class 6 Bengali Bagh Question Answer
বঙ্গ আমার জননী আমার প্রশ্ন উত্তর | Bongo Amar Jononi Amar Question Answer | Class 6
শহীদ যতীন্দ্রনাথ দাস প্রশ্ন উত্তর | Class 6 Bengali Shahid Jatindra Nath Das Question Answer
ধরাতল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Dhoratol Bengali Poem Question Answer | Class 6
মোরা দুই সহোদর ভাই কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Class 6 | West Bengal Board
হাবুর বিপদ প্রশ্ন উত্তর | Habur Bipod Question Answer | Class 6 | West Bengal Board
কিশোর বিজ্ঞানী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Kishore Bigyani Question Answer | Class 6 | West Bengal Board
ননীদা নট আউট প্রশ্ন উত্তর (মতি নন্দী) | Nonida Not Out Question Answer | Class 6 | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।