‘কর্তার ভূত’-রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।

‘কর্তার ভূত’-রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে। Mark 5 | Class 11

উত্তর:- নামকরণ রচনাকে কেবল চিহ্নিতই করে না, এটি পাঠকের কাছে রচনাটিতে প্রবেশের চাবিকাঠিও। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ ছোটোগল্পে আমরা দেখি যে, বুড়াে কর্তার মৃত্যুকালে দেশবাসী অভিভাবকহীন হওয়ার ভয়ে ভীত হলে ভগবানের দয়ায় অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের সুরাহা না হলেও, তারা শান্তিতে রইল। দু-একজন মানুষ ভূতশাসনতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন করলে তাদের ভাগ্যে জুটল ‘ভূতের কানমলা’। বাকিরা গর্বের সঙ্গেই দিন কাটাতে লাগল। অবশ্য, ভুতুড়ে জেলখানার দেয়ালটাই যেহেতু চোখে দেখা যায় না, সেহেতু সেই জেল থেকে বেরােনাের উপায়ও কারও জানা নেই। আর, এই জেলের ঘানি ঘােরালে পেষণকারীর তেজ বেরিয়ে যায় বলে সে ঠান্ডা হয়ে যায়। শিরােমণি-চুড়ামণির দল জানায়, “বেঁহুশ যারা তারাই পবিত্র, হুঁশিয়ার যারা তারাই অশুচি।” হুঁশিয়ার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভূতের নায়েব শাসানি দেয়—“চুপ। এখনাে ঘানি অচল হয় নি।” দেশের মানুষ এই অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইলেও কর্তার নিয়ন্ত্রণমুক্ত হতে তারা ভয় পায়। কর্তা বলেন, “সেইখানেই তাে ভূত।” এইভাবে লেখক এ গল্পে ‘প্রাচীন সভ্যতা’-রূপী কর্তা’র ধর্মতন্ত্র রূপী ‘ভূত’-এ আষ্টেপৃষ্ঠে আচ্ছন্ন আমাদের সমাজব্যবস্থার সমালােচনা করেছেন। তাই, ‘কর্তার ভূত’ নামকরণটি নিঃসন্দেহে শিল্পসম্মত, ব্যঞ্জনাময় এবং সার্থক।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

2 thoughts on “‘কর্তার ভূত’-রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।”

Leave a Comment