প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 8 এর পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের অষ্টম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে বিষ্ণু দে এর লেখা পরবাসী কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষে যে সব প্রশ্ন গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
পরবাসী
বিষ্ণু দে
হাতে কলমে
১.১ কবি বিষ্ণু দে-র প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর:- কবি বিষ্ণু দে-র প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’।
১.২ তাঁর লেখা দুটি প্রবন্ধের বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর:- কবি বিষ্ণু দে- র লেখা দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থের নাম, ‘রুচি ও প্রগতি’ এবং ‘সাহিত্যের ভবিষ্যৎ’।
২. নিম্নরেখ শব্দগুলির বদলে অন্য শব্দ বসিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি করো। প্রথমটি করে দেওয়া হলো :
২.১ দুই দিকে বন, মাঝে ঝিকিমিকি পথ
উত্তর:- দুই দিকে বন, মাঝে আলোছায়া পথ I
২.২ এঁকে বেঁকে চলে প্রকৃতির তালে তালে।
উত্তর:- ছন্দে
২.৩ তাঁবুর ছায়ায় নদীর সোনালি সেতারে
উত্তর:- কুলুকুলু ধ্বনিতে
২.৪ হঠাৎ পুলকে বনময়ুরের কথক,
উত্তর:- নাচ
২.৫ বন্য প্রাণের কথাকলি বেগ জাগিয়ে।
উত্তর:- নৃত্যের
৩. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৩.১ পথ কীসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় পথ বনের মধ্যে এঁকে বেঁকে প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে।
৩.২ চিতার চলে যাওয়ার ছন্দটি কেমন ?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় চিতার চলে যাওয়ার ছন্দ লুব্ধ হিংস্রের মতো।
৩.৩ ময়ূর কীভাবে মারা গেছে?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় মানুষের লোভ ও সুন্দর জিনিসকে পণ্যে পরিণত করার মনোভাবের জন্যই ময়ূর মারা গেছে।
৩.৪ প্রান্তরে কার হাহাকার শোনা যাচ্ছে?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় প্রান্তরে শুকনো হাওয়ার হাহাকার শোনা যায়।
৩.৫ পলাশের ঝোপে কবি কী দেখেছেন ?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় পলাশের ঝোপে কবি দেখেছেন বনময়ূরের কত্থক।
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর কয়েকটি বাক্যে লেখো :
৪.১ জঙ্গলের কোন কোন প্রাণীর কথা কবি এই কবিতায় বলেছেন?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় কবি জঙ্গলের যে প্রাণীদের কথা বলেছেন সেগুলি হল, ছোট খরগোশ, বনময়ূর, হরিণ ও চিতা। এই প্রাণীগুলি আগে বনে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াত ।
৪.২ সেতারের বিশেষণ হিসেবে কবি ‘সোনালি’ শব্দের ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তর:- কবি বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় কবি সেতারের বিশেষণ হিসেবে সোনালি শব্দের ব্যবহার করেছেন। নদীর জলে সূর্যের আলো পড়ে বিচ্ছুরিত হয়। তখন নদীর জলের রঙ সোনালি হয়ে ওঠে। বিশেষত ভোরবেলা ও সন্ধেবেলা এই দৃশ্য দেখা যায়। তাই নদীর বয়ে চলার শব্দকে কবি সেতারের বাজনার সাথে তুলনা করেছেন এবং নদীর জলের রঙকে বলেছেন সোনালি। সোনালি আলোয় ভরে ওঠা নদীর নৃত্যের ছন্দ কবির কাছে সেতারের সংগীতের তাল ও ছন্দের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে।
৪.৩ কখক ও কথাকলি-র কথা কবিতার মধ্যে কোন প্রসঙ্গে এসেছে?
উত্তর:- কবি বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় পুলকিত বনময়ূরের নাচকে কবি কখক এর সাথে তুলনা করেছেন। আর চিতার লুব্ধ হিংস্র বেগকে বোঝাতে কবি কথাকলি’র প্রসঙ্গ এনেছেন। কত্থক হল উত্তর ভারতের অন্যতম ধ্রুপদী নৃত্যকলা ও কথাকলি দক্ষিণ ভারতের কেরলের নৃত্যশৈলী। এই দুটি উপমা যেন কবির লেখনীকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
৪.৪ ‘সিন্ধুমুনির হরিণ-আহ্বান’ কবি কীভাবে শুনেছেন ?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় কবি হরিণের জল খাওয়া প্রসঙ্গে ‘সিন্ধুমুনির হরিণ আহ্বান’ এর কথা উল্লেখ করেছেন। রামায়ণে অন্ধমুনির ছেলে সিন্ধু মুনি রাত্রিবেলায় কলশি নিয়ে নদীতে জল ভরতে গেলে রাজা দশরথ ভুল করে হরিণ জল খেতে এসেছে ভেবে শব্দভেদী বাণ নিক্ষেপ করেন। এর ফলে সিন্ধুমুনি নিহত হন।
সিন্ধুমুনি যেভাবে নিজের অজ্ঞাতসারে আপন মৃত্যুকে আহ্বান জানিয়েছেন। কবির মনে হয়েছে, হরিণ তেমনভাবেই তার জল খাওয়ার শব্দে আহ্বান জানিয়েছে চিতাকে ।
৪.৫ ‘ময়ূর মরেছে পণ্যে’ এই কথার অন্তর্নিহিত অর্থ কী?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি নেওয়া হয়েছে। ময়ূর একটি অতি সুন্দর পাখি। এর রঙবেরঙের পেখম আছে। তবে ময়ূরের সৌন্দর্যই হয়ে উঠেছে এর ধ্বংসের কারণ। সুদৃশ্য পালকের কিংবা সুস্বাদু মাংসের লোভে মানুষই তাকে নির্বিচারে হত্যা করে পণ্যের সামগ্রী করে তুলেছে।
৫. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৫.১ বিরামচিহ্ন ব্যবহারের দিক থেকে কবিতাটির শেষ স্তবকের বিশিষ্টতা কোথায়? এর থেকে কবি-মানসিকতার কী পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর:- কবি বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতার সমগ্র অংশে কবি নানা বিরামচিহ্ন ব্যবহার করলেও শেষ স্তবকে কেবল প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। পরপর চারটি প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে তিনি কবিতাটি শেষ করেছেন। পর পর চারটি লাইনে এই রূপে চারটি প্রশ্নই শেষ স্তবকটিকে এক বিশেষতা প্রদান করেছে।
শেষ স্তবকে তোলা প্রশ্নগুলির মাধ্যমে বোঝা যায় কবি এখানে অতি দুঃখে, হতাশায়, রাগে সমস্ত মানবজাতির প্রতি কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। সেই প্রশ্ন কেবল কবির একার নয়, সেই প্রশ্ন কবির মতো অনেক মানুষের যারা এইরকম পরিস্থির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কবি যেন সমগ্র মানব সভ্যতাকে এক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন। যার মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে মানবজাতির প্রতি বিদ্রুপ ও শ্লেষের আভাস।
৫.২ কবি নিজেকে পরবাসী বলেছেন কেন ?
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় কবি নিজেকে পরবাসী বলেছেন। ‘পরবাসী’ বা প্রবাসী শব্দের অর্থ যে অন্যের দেশে বাস করে। কবি নিজের দেশে বাস করা সত্ত্বেও নিজেকে প্রবাসী বলেছেন কারণ, তিনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এক শান্ত সহজ পরিবেশে থাকতে চান। যেখানে থাকবে ঘন বন, দেখা যাবে কচি খরগোশের লাফালাফি, বনময়ূরের কত্থক, চিতার হিংস্র বেগ। শোনা যাবে নদীর কলতান, হরিণের জল খাওয়ার শব্দ ।
কিন্তু কবির দেশে এসব কিছুই তিনি পাচ্ছেন না। বন কেটে তৈরি হওয়া রুক্ষ প্রান্তরে শুধুই শুকনো হাওয়ার হাহাকার। চেনা স্বদেশ আজ কবির কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির খোঁজে তাকে সারা দেশময় তাবু বয়ে ঘুরতে হচ্ছে। তাই কবি নিজেকে পরবাসী বলেছেন।
৫.৩ ‘জঙ্গল সাফ, গ্রাম মরে গেছে, শহরের পত্তন নেই…’ – প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এই পক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা বিচার করো।
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি নেওয়া হয়েছে। দিনের পর দিন জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও আনুসঙ্গিক নানাবিধ চাহিদা। সেই চাহিদার ভার গিয়ে পড়ছে প্রকৃতির উপর। মানুষ বনভূমি ধ্বংস করছে। ধ্বংস হচ্ছে বন্যপ্রাণী। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম। উন্নত সভ্যতার দিকে মানুষ এগিয়ে চললেও আদর্শ নগরের পত্তন ঘটাতে পারেনি। রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। একারণে প্রকৃতির ভারসাম্য ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকৃতি ও মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে এই পঙক্তির যথেষ্ট প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
৫.৪ ‘পরবাসী’ কবিতার প্রথম তিনটি স্তবক ও শেষ দুটি স্তবকের মধ্যে বক্তব্য বিষয়ের কোনো পার্থক্য থাকলে তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতাটি পাঁচটি স্তবকে বিভক্ত। প্রতিটি স্তবকে মোট চারটি করে পঙক্তি। কবিতার প্রথম তিনটি স্তবকে উঠে এসেছে প্রকৃতির অপার সুন্দর রূপ। যেখানে রয়েছে ঘন বন, কচি খরগোশের লাফালাফি, বনময়ূরের কত্থক, হরিণের জল খাওয়ার দৃশ্য, চিতার লুব্ধ হিংস্র বেগ প্রভৃতি। অর্থাৎ প্রকৃতি যেন নিজেকে মেলে ধরেছে। যেখানে রয়েছে শান্তি সাম্য এবং পূর্ণতা।
তবে কবিতার শেষ দুটি স্তবকে উঠে এসেছে প্রকৃতির রিক্ত রূপ, মানুষ কর্তৃক পৃথিবীকে নিপীড়নের চিত্র। যেখানে বন জঙ্গল নেই আছে প্রান্তরের শুকনো হাওয়ার হাহাকার। সভ্যতার নেশায় মানুষ নিজের আদি বাসস্থান প্রকৃতিকেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রাম তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে, তৈরি হয়নি আদর্শ শহরও। তাই কবি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন প্রকৃতির প্রতি এত অবহেলা দেখেও মানুষ এত চুপ কেন ! কবি প্রকৃতির সন্ধানে নিজের দেশে তাবু বয়ে আর কতকাল ঘুরবেন!
৫.৫ ‘পরবাসী’কবিতাতে কবির ভাবনা কেমন করে এগিয়েছে তা কবিতার গঠন আলোচনা করে বোঝাও ।
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতাটির প্রথম তিনটি স্তবকে কবির স্মৃতিতে জেগে উঠেছে অতীত দিনের অরণ্যপ্রকৃতি ও গ্রাম্য সৌন্দর্যের ছবি। সেখানে ফুটে উঠেছে প্রকৃতির অপার সুন্দর রূপ। যেখানে রয়েছে দুই দিকে বন, কচি খরগোশের লাফালাফি, পুলকিত বনময়ূরের কত্থক । যেখানে নিরীহ হরিণের জল খাওয়ার দৃশ্য কবিকে যেমন আপ্লুত করেছে, তেমনি হিংস্র চিতার চলার ছন্দ কবিকে মনে করিয়েছে কথাকলি নৃত্যশৈলী। অর্থাৎ যেখানে প্রকৃতির সবকিছুই সুন্দরভাবে সমতা বজায় রেখে চলেছে।
কবিতার শেষ দুটি স্তবকে কবি অতীতের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছেন দাঁড়িয়েছেন রূঢ় বাস্তবের মাটিতে। সেখানে শুধুই রুক্ষতা, ধূসরতা আর অনুর্বরতার ছবি, না থাকার আর হারানোর হাহাকার। সভ্যতার আগ্রাসী মনোভাবে বন ধ্বংস হয়েছে। মানুষের লোভে সৌন্দর্য পরিণত হয়েছে পণ্যে। গ্রাম মরে গেছে, সুপরিকল্পিত নগরের পত্তনও ঘটেনি। তাই কবির ভাবনায় ফুটে উঠেছে প্রকৃতিকে হারিয়ে ফেলার নৈরাশ্য তথা প্রকৃতি ধ্বংসকারী সভ্য সমাজের প্রতি শ্লেষ ।
৫.৬ কবিতাটির নাম ‘পরবাসী’ দেওয়ার ক্ষেত্রে কবির কী কী চিন্তা কাজ করেছে বলে তোমার মনে হয় ? তুমি কবিতাটির বিকল্প নাম দাও এবং সে নামকরণের ক্ষেত্রে তোমার যুক্তি সাজাও ৷
উত্তর:- বিষ্ণু দে রচিত ‘পরবাসী’ কবিতায় কবি নিজেকে পরবাসী বলেছেন। ‘পরবাসী’ বা প্রবাসী শব্দের অর্থ যে অন্যের দেশে বাস করে। কবি নিজের দেশে বাস করা সত্ত্বেও নিজেকে প্রবাসী বলেছেন কারণ, তিনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এক শান্ত সহজ পরিবেশে থাকতে চান। যেখানে থাকবে ঘন বন, দেখা যাবে কচি খরগোশের লাফালাফি, বনময়ূরের কত্থক, চিতার হিংস্র বেগ। শোনা যাবে নদীর কলতান, হরিণের জল খাওয়ার শব্দ।
কিন্তু কবির দেশে এসব কিছুই তিনি পাচ্ছেন না। বন কেটে তৈরি হওয়া রুক্ষ প্রান্তরে শুধুই শুকনো হাওয়ার হাহাকার। চেনা স্বদেশ আজ কবির কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির খোঁজে তাকে সারা দেশময় তাবু বয়ে ঘুরতে হচ্ছে। নিজের দেশেই কবি হয়ে উঠেছেন পরবাসী । তাই কবিতার এহেন নামকরণ যথার্থ ও সার্থক।
কবিতাটির বিকল্প নাম আমি দিতে চাই ‘সোনালী অতীত’। কবি জীবনের যে সোনালী অতীতগুলো হারিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন বর্তমানের মাটিতে সে মাটি বড়োই রুক্ষ। কবিতার ছত্রে ছত্রে ধরা পড়েছে সেই সোনালী অতীতকে হারানোর বেদনা। তাই কবিতাটির নাম দিতে চাই ‘সোনালী অতীত।’
৬. টীকা লেখো :
কত্থক, সেতার, কথাকলি, সিন্ধুমুনি, পণ্য
কখক : কত্থক ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের প্রধান চারটি ধারার মধ্যে একটি। এই নৃত্যের ফর্ম প্রাচীন উত্তর ভারতের যাযাবর সম্প্রদায় থেকে উদ্ভূত। লখনউ ও জয়পুরকেই এই নৃত্যের জন্মস্থান বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। সব রকমের শাস্ত্রীয় নৃত্যের মধ্যে কত্থক সবচাইতে জনপ্রিয়। কত্থক নৃত্যের প্রধান পোশাক লম্বা গোড়ালী পর্যন্ত পেশোয়াজ নামক এক ধরনের সিল্কের জামা ও চুড়িদার পাজামা। উজ্জ্বল প্রসাধন ও অলংকার ব্যবহৃত হয়।
সেতার : সেতার বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ভারত উপমহাদেশীয় বাদ্যযন্ত্র। এটি অনেকাংশে তানপুরার ন্যায় দেখতে। তুম্বা (লাউ) ও ডান্ডি সমন্বয়ে সেতারে কম-বেশি ১৭টি তার থাকতে পারে। ৩টি থাকে বাজানোর জন্য যেগুলো মা সা পা তে সুর বাঁধা থাকে।
কথাকলি : কথাকলি হল ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের একটি অন্যতম প্রধান ধারা। এতে এক প্রকার গল্প বলা হয়ে থাকে, যেখানে প্রথাগতভাবে অভিনেতা-নৃত্যশিল্পীরা বিভিন্ন রঙের রূপসজ্জা, পোশাক ও মুখোশ পরেন ।এটি ভারতের মালয়ালম ভাষী কেরলের হিন্দু প্রদর্শন কলা। কথাকলির প্রথাগত বিষয়বস্তু হল হিন্দু মহাকাব্য ও পুরাণে বর্ণিত লোক-পৌরাণিক গল্প, ধর্মীয় কিংবদন্তি, ও আধ্যাত্মিক ধারণা।
সিন্ধুমুনি : রামায়ণের অযোধ্যা কান্ডে সিন্ধু মুনির কথা বর্ণিত আছে। সিন্ধুমুনি একজন পৌরাণিক ঋষি। তাঁর পিতা-মাতা দুজনেই অন্ধ ছিলেন। তিনি সবসময় পিতা-মাতার সেবা করতেন। একদিন জঙ্গলে গাছের নীচে বাবা-মাকে বসিয়ে তিনি তাদের জন্য নদীতে জল আনতে যান। তখন তিনি ভুলবশত রাজা দশরথের শব্দভেদী বাণের দ্বারা নিহত হন।
পণ্য : অর্থশাস্ত্রে পণ্য বলতে মূলত মূল্য আরোপিত পণ্যকে বোঝানো হয়। এটির ইংরেজি প্রতিশব্দ, “commodity”। ইংরেজি শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন “commode” ধাতু থেকে যার অর্থ ‘সঠিক পরিমাপণ’। মার্ক্সের মতে, যে কোন পণ্যের রয়েছে একটা গুণ, তা মানুষের কোন প্রয়োজন বা চাহিদা মেটায়। এই চাহিদা হতে পারে বাস্তবিক, যেমন খাদ্যদ্রব্য, আবার কাল্পনিক বা বিলাস দ্রব্য, যেমন, রং ফর্সা করার ক্রীম I
৭. নীচের শব্দগুলির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার করো :
জ্বলে, পরবাসী, চলে, তাঁবু
উত্তর:-
জ্বলিয়া > জইল্যা > জ্বলে (অভিশ্রুতি)
প্রবাসী > পরবাসী (বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি)
চলিয়া > চইল্যা > চলে (অভিশ্রুতি)
তাম্বু > তাঁবু (নাসিক্যভবন)
৮. ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করো :
নিটোল, বনময়ূর, সিন্ধুমুনি, নিজবাসভূমি, সেতার
উত্তর:-
নিটোল : নেই টোল যার (না তৎপুরুষ সমাস)।
বন ময়ূর : বনে থাকে যে ময়ূর (মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস।)
সিন্ধুমুনি : সিন্ধু নামক মুনি (মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস)
নিজবাসভূমি : নিজ বাসের জন্য ভূমি (নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস)।
সেতার : সে (তিন) তার যার (বাদ্যযন্ত্র) – সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি।
৯. নীচের শব্দগুলি কীভাবে গঠিত হয়েছে দেখাও :
সোনালি, আহ্বান, বন্য, বসতি, পরবাসী
উত্তর:-
সোনালি – সোনা + আলি।
আহ্বান – আ – √ হ্বে + অন।
বন্য – বন + য ৷
বসতি – বস্ + তি।
পরবাসী – পরবাস + ঈ I
১০. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো :
১০.১ চুপি চুপি আসে নদীর কিনারে, জল খায়। (সরল বাক্যে)
উত্তর:- চুপি চুপি নদীর কিনারে এসে জল খায়।
১০.২ নিটোল টিলার পলাশের ঝোপে দেখেছি। (জটিল বাক্যে )
উত্তর:- যেখানে নিটোল টিলা সেখানে পলাশের ঝোপে দেখেছি।
১০.৩ চিতা চলে গেল লুব্ধ হিংস্র ছন্দে বন্য প্রাণের কথাকলি বেগ জাগিয়ে। (যৌগিক বাক্যে
উত্তর:- চিতা চলে গেল লুব্ধ হিংস্র ছন্দে এবং সে ছন্দে বণ্যপ্রাণের কথাকলি বেগ জেগে উঠল।
১০.৪ কেন এই দেশে মানুষ মৌন অসহায়? (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর:- এই দেশে মানুষ মৌন অসহায় হওয়ার কোনো কারণ জানি না ।
১১. যে-কোনো দুটি স্তবকের মধ্যে বিশেষ্য ও বিশেষণ-এর ব্যবহার কবি কীভাবে করেছেন, দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো।
দুই দিকে বন, মাঝে ঝিকিমিকি পথ
এঁকে বেঁকে চলে প্রকৃতির তালে-তালে।
রাতের আলোয় থেকে-থেকে জ্বলে চোখ,
নেচে লাফ দেয় কচি-কচি খরগোশ।
নিটোল টিলার পলাশের ঝোপে দেখেছি
হঠাৎ পুলকে বনময়ূরের কথক,
তাঁবুর ছায়ায় নদীর সোনালি সেতারে
মিলিয়েছি তার সুষমা ।
উত্তর:-
ঝিকিমিকি – বিশেষণ, পথ – বিশেষ্য।
কচি-কচি – বিশেষণ, খরগোশ – বিশেষ্য।
নিটোল – বিশেষণ, টিলার – বিশেষ্য।
সোনালি – বিশেষণ, সেতারে – বিশেষ্য।
আরো পড়ুন
বোঝাপড়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bojhapora Question Answer | Class 8 | Wbbse
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর | Advut Atitheota Question Answer | Class 8 | Wbbse
পরবাসী কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বিষ্ণু দে | Porobasi Class 8 Question Answer | Wbbse
চিঠি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Chithi Class 8 Question Answer | Wbbse
গাছের কথা প্রশ্ন উত্তর | জগদীশচন্দ্র বসু | Class 8 Bengali Gacher Kotha Question Answer | WBBSE
পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর Class 8 | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | Pallisamaj Question Answer | Wbbse
হাওয়ার গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর | বুদ্ধদেব বসু | Hawar Gaan Class 8 Question Answer | Wbbse
সুভা গল্পের প্রশ্ন উত্তর | Subha Class 8 Bengali Question Answer | Wbbse
নাটোরের কথা প্রশ্ন উত্তর | অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Natorer Kotha Class 8 Question Answer | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।