ইসলামিক শিক্ষার অবদান সংক্ষেপে আলােচনা

ইসলামিক শিক্ষার অবদান সংক্ষেপে আলােচনা

উত্তর:

ইসলামিক শিক্ষার অবদান/মুসলিম শিক্ষার সুবিধা :

ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় তথা মুসলিম শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসকল ইতিবাচক দিক বা সুবিধা দেখা গিয়েছিল, তা এখানে সংক্ষেপে আলােচনা করা হল — 

(1) অবৈতনিকইসলামিক বা মুসলিম শিক্ষার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক দিক হল — এই শিক্ষাতে শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে কোনাে অর্থ ব্যয় করতে হত না। শিক্ষা ছিল পুরােপুরি অবৈতনিক।
(2) বাধ্যতামূলকইসলামিক শিক্ষা ছিল মধ্যযুগের প্রতিটি মুসলিম ছাত্রের জন্য বাধ্যতামূলক।
(3) সমন্বয়কারী শিক্ষাইসলামিক শিক্ষা যদিও কোরানকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় মূল্যবােধের ভিত্তিতে গড়ে তােলা হয়েছিল, তা সত্ত্বেও এই শিক্ষার পাঠক্রমে বাস্তব জীবনের উপযােগী বহু বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের। ব্যবস্থা করা হয়। ফলে এই শিক্ষা হল সমন্বয়কারী শিক্ষা। এই শিক্ষায় শিক্ষার্থীর চাহিদা ও সমাজের প্রয়ােজনের দিক অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিবেচিত হয়েছে
(4) বৈচিত্র্যপূর্ণ পাঠক্রমইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষাতে ধর্মনিরপেক্ষ পাঠক্রমে অনেকগুলি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে পাঠক্রমটি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও শিক্ষার্থীদের চাহিদাপূরণে সক্ষম হয়েছে। বৃত্তিমূলক ও বৈচিত্র্যমুখী শিক্ষাগ্রহণের সুযােগ
(5) শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় মক্তব এবং মাদ্রাসা উভয় ক্ষেত্রেই ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে মধুর সম্পর্কের বিষয়টি দেখা গেছে। যে-কোনাে শিক্ষাক্ষেত্রে এই ধরনের সম্পর্ক শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশেরজন্য অপরিহার্য। 
(6) পুরস্কার ও শাস্তি দানের ব্যবস্থাইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কারদানের ব্যবস্থা ছিল। আবার অপরাধবা শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের জন্য শাস্তির বিধান ছিল। সুনাগরিক গঠনের জন্য এই বিষয়গুলিঅপরিহার্য।
(7) শিল্প ও সাহিত্যের উৎকর্ষসাধন ইসলামিক যুগে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি হিসেবে শিল্প ও সাহিত্য চর্চার ব্যবস্থা ছিল। এই সময়ে ভারতে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকেন্দ্রও গড়ে উঠেছিল। শুধু তাই নয়, সাহিত্যের উন্নয়নের জন্য ইসলাম যুগের শাসকগণ লেখকদের সমাদর করতেন এবং উৎসাহ দিতেন।
(8) স্থাপত্যের সমৃদ্ধিভারতে মুসলিম রাজত্বে বেশি সময় যুদ্ধবিগ্রহ লেগে থাকত। তা সত্ত্বেও বহু শিক্ষার্থী স্থাপত্যের চর্চা করত। মধ্যযুগে ভারতে যে সুক্ষ্ম স্থাপত্যচর্চার বিকাশ ঘটেছিল, তা অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় যথেষ্ট ব্যাপক। বাদশাহী আমলের দিল্লির লালকেল্লা, আগ্রার তাজমহল আজও বিশ্ববাসীর কাছে আকর্ষণীয়।
(9) নিয়মানুবর্তিতা  ও শৃঙ্খলাইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা রক্ষার ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া যেত
(10) ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার ব্যবস্থা শিক্ষক পিছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায়ব্যক্তিকেন্দ্রিক নিবিড় শিক্ষণ দেওয়া যেত। এর ফলে শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশ ত্বরান্বিত হত।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment