হান্টার কমিশনের গঠনকাঠামাে এবং বিচার্যবিষয়গুলি সংক্ষেপে লেখাে।

হান্টার কমিশনের গঠনকাঠামাে এবং বিচার্যবিষয়গুলি সংক্ষেপে লেখাে।

উত্তর : 

হান্টার কমিশনের গঠনকাঠামাে : 

1854 খ্রিস্টাব্দে উড-এর ডেসপ্যাচে প্রাথমিক শিক্ষার প্রসারের জন্য দেশীয় বিদ্যালয়গুলিকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তব ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি। পরবর্তী পর্যায়ে 1870 খ্রিস্টাব্দে প্রাদেশিক সরকারগুলি প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রদেশে শিক্ষা করের প্রচলন করা হয়। তবুও 1882 খ্রিস্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার তেমন কোনাে উন্নয়ন ঘটেনি।

1882 খ্রিস্টাব্দে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন দিক পর্যালােচনা করার উদ্দেশ্যে স্যার উইলিয়াম হান্টারের সভাপতিত্বে প্রথম ভারতীয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। 20 জন সদস্য সহযােগে এই কমিশন গঠিত হয়। ভারতীয় সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য ব্যক্তিরা হলেন—আনন্দমােহন বসু, ভূদেব মুখােপাধ্যায়, যতীন্দ্রমােহন বিশ্বাস, সৈয়দ মামুদ, কাশীনাথ তেলাং, পি আর মুদালিয়র। ওই কমিশনের সদস্যরা আটমাস ধরে সারাভারতের বিভিন্ন অংশে সমীক্ষা চালান এবং 222টি প্রস্তাব সমন্বিত প্রায় ছয়শো পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন 1883 খ্রিস্টাব্দে পেশ করেন। ওই প্রতিবেদনে ভারতবর্ষের অতীত শিক্ষাব্যবস্থা, কোম্পানি ও ব্রিটিশ শাসনে শিক্ষার উন্নয়ন, শিক্ষার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করে কমিশন কতকগুলি মূল্যবান সুপারিশ লিপিবদ্ধ করে। 

হান্টার কমিশনের বিচার্য বিষয়সমূহ : 

হান্টার কমিশনের বিচার্য বিষয়গুলি নীচে উল্লেখ করা হল—

(1) 1854 খ্রিস্টাব্দে উড-এর ডেসপ্যাচে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যে নীতি ও সুপারিশগুলি নথিভুক্ত করা হয়েছিল, সেগুলি যথাযথভাবে প্রয়ােগ করা হয়েছে কিনা, সেই সম্পর্কে সমীক্ষা চালানাে এবং উড ডেসপ্যাচের সুপারিশগুলি যাতে কার্যকারী করা হয়, তার জন্য কোন উপায় অবলম্বন করা দরকার, সে-বিষয়ে পরামর্শদান করা। 

(2) প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রয়ােজনীয় পরামর্শদান করা। 

(3) সারাদেশে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তােলার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়গুলির ভূমিকা সম্পর্কে সুপারিশ করা। 

(4) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ বিষয়ে সরকারের মনােভাব কী হওয়া উচিত সে-বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া। 

(5) মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি পর্যবেক্ষণ করে, আগামী দিনে মিশনারিদের ভূমিকা কী হবে সে-সম্পর্কে পরামর্শদান করা। 

(6) বেসরকারি বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে অনুদান বরাদ্দের জন্য নীতি প্রণয়নের বিষয়ে পরামর্শদান করা। 

(7) বিদ্যালয়গুলিতে ধর্মশিক্ষা দানের ক্ষেত্রে কোন নীতি গৃহীত হবে সে-সম্পর্কে পরামর্শদান করা। 

(8) এদেশের মাধ্যমিক স্তর ও উচ্চশিক্ষার স্তরকে কমিশনের বিচার্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা না-হলেও, সে-বিষয়গুলির সম্পর্কেও সরকারকে প্রয়ােজন মতাে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment